প্রশাসনের ইচ্ছার নিকট একটি সদিচ্ছার অপমৃত্যু(প্রসঙ্গ-অমর একুশে বইমেলা)

মোত্তালিব দরবারী
Published : 30 Jan 2012, 02:52 AM
Updated : 30 Jan 2012, 02:52 AM

২০০০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় 'ফুলবাড়ীয়া সাংবাদিক কল্যাণ সংস্থা' ৭ দিন ব্যাপী অমর একুশে বইমেলার আয়োজন করে। সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হিসেবে বইমেলা বাস্তবায়নের পুরো দায়িত্ব অর্পিত হয় আমার উপর। সংগঠনের কোষাধক্ষ আবু হানিফার অমানুষিক শারীরিক শ্রম এবং অন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতায় মোটামুটি সফলতার সাথে মেলার আয়োজন সমপন্ন হয়। ২০ফেব্রুয়ারি মেলা উদ্বোধন করেন সেই সময়কার জাতীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ মোসলেম উদ্দিন এমপি যিনি বর্তমানেও সাংসদ। ২০ তারিখ থেকে শুরু হয়ে মেলা চলে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

২০০১ সালের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মেলা আয়োজন সম্ভব হয়নি।

২০০২ সালে আবারও ৭দিন ব্যাপী বইমেলার আয়োজন। এবার আয়োজক ফুলবাড়ীয়া প্রেসক্লাব। আমি যথারীতি সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। আবারও দায়িত্ব অর্পিত হয় আমার উপর। এবার মেলা শুরু হয় ১৫ ফেবরুয়ারী। মেলা উদ্বোধন করেন সেই সময়কার জেলা প্রশাসক বর্তমানে সচিব জাফর আহমেদ চৌধরী। অতিথি আমন্ত্রণকে কেন্দ্র করে মেলার উদ্বোধন নিয়েই দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। জেলা প্রশাসকের দৃড়তা ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের তখনকার সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের সহযোগিতায় সে যাত্রা রক্ষা হয়। মেলা চলে ২১ ফেরুয়ারি পর্যন্ত।

২০১১ সালে আবার সিদ্ধান্ত নেই বইমেলা আয়োজনের। এবার আমি ফুলবাড়ীয়া সাহিত্য সংসদের সভাপতি হিসেবে প্রায় এককভাবেই সিদ্ধান্ত নেই মেলা আয়জনের। সংগঠন এ ক্ষেত্রে আমার উপর ছায়া দেওয়ার ভুমিকা পালন করে। নানা সমস্যার কথা চিন্তা করে এবার ৩দিনের মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেই। ২০ ফেবরুয়ারি মাননীয় জাতীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ মোসলেম উদ্দিন এমপি মেলা উদ্বোধন করেন। মেলা চলে ২২ ফেরুয়ারি পর্যন্ত।

প্রতিটি আয়োজন আমার একান্ত ইচ্ছার ফল হলেও সংগঠণ এ ক্ষেত্রে মুখ্য ভুমিকা পালন করে বার বার।

ইচ্ছা ছিল ২০১১সালের আয়োজনটিকে ধারাবাহিক রুপ দিয়ে চালিয়ে যাব। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে আয়োজন করব অমর একুশে বইমেলা। এবারও প্রস্তুতি নেওয়ার অংশ হিসেবে জায়গা ব্যবহারের অনুমতি চাইতে গত ২২ জানুয়ারি গেলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট। গিয়ে শুনি এবার উপজেলা প্রশাসন বইমেলা আয়োজন করবে। ধন্যবাদ জানালাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। ফিরে এসে অনেকের সাথে কথা বললাম-সবাই এক কথ- তারমানে মেলা হচ্ছে না। বললাম তা কেন হবে?

মুখে বললাম ঠিকই। কিন্তু আমিত ইহাও জানি এখানে বিক্রেতারা কেন আসে, কিভাবে এখানে সাংস্কৃতিক কর্মীদের দিয়ে অনু্ষ্ঠাণ করাতে হয়। এসব কী সম্ভব হবে প্রশাসনের পক্ষে। পরক্ষণে ভাবলাম কেন নয়? আমরা যে কাজ ভালবাসা দিয়ে অনুরোধ করে আদায় করে নেই, সেটা হয় তো টাকা বা ক্ষমতার জোরেও সম্ভব হতে পারে। কিন্তু দর্শক-ক্রেতা? যারা আসে প্রাণের টাণে।
সবশেষ ফুলবাড়ীয়া উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার সাফল্য কামনা করছি।