এরা কোন কিসিমের লোক!

সালমা কবীর
Published : 5 Jan 2013, 05:43 PM
Updated : 5 Jan 2013, 05:43 PM

তেলের মূল্য বাড়াতে রবিবারে বি,এন,পির হরতাল। শুক্র-শনি সরকারী ছুটির সাথে যোগ হয় আর একটি কর্মহীন দিন। পাবলিকরা ছোটে নাড়ীর টানে গ্রামে। এই সুযোগ শুক্রবারের ফাঁকা ঢাকায় সবেমাত্র উদ্ধোধন করা হাতিরঝিল প্রকল্প দেখার জন্যে আমরা বের হয়ে পড়ি। মনে পড়ে পদ্মা সেতুর কথা, কেননা এই সময়েই সেই সেতুটিও উদ্ধোধনের কথা ছিল। হাতিরঝিল প্রকল্প ঢাকা মহানগরীর জন্য র্পূব-পশ্চিম সংযোগ রক্ষাকারী সড়ক হিসাবে নগরের জানজট কমাবে। চিত্তবিনোদনের ক্ষেত্রেও জনমনে প্রশান্তির ছোঁয়া রাখবে।

ঠান্ডা আবহাওয়া ৩০০ একরের পুরো প্রকল্প এলাকাটি ঘুরে দেখার জন্য উপযোগী ছিল। প্রকল্পটির আভ্যন্তরীণ নির্মানকাজ যদিও চলছে তারপরেও সোনারগাঁয়ের উত্তর-পষ্চিম পাশ ঘেঁষে উন্মুক্ত পথে ঢুকতে পেলাম ভোগেনবিলিয়ার টুকটুকে লাল ফুলের আভা। উদিপ্ত হয়ে হেঁটেই চললাম। শীতের ভোর, তাই লোকজন একেবারেই কম। আবার প্রকল্পপটির অভ্যন্তরিক রাস্তাসমূহে গাড়ি চলাচল এখনো সীমিত থাকায় ট্রাফিক ছিল কম। প্লান্টেশন, ওয়াকওয়ে, ওভারপাস, ব্রিজের অপূব সমাহার, বিস্তিণ ঝিলের শান্ত সমাহিত রূপ; সবকিছুতেই আধুনিকতার ছোঁয়া। দূর থেকে আসা কিছু কিছু অতিখি ছাড়াও আশেপোশের বাসাবাড়ী খেকে শিশু-বৃদ্ধ সবাই উপভোগ করছিলেন। ছুটির দিন খাকায় মাদ্রাসার ছাত্ররাও সদলবলে বের হয়েছে। উচ্ছল কিশোরেরা দলবদ্ধভাবে স্কেটিং করতে করতে পিঁচ ঢালা ব্রীজ থেকে নেমে আসে প্রশস্ত রাজপথে। নুতন ডিজাইনের নয়নভিরাম ব্রিজ আর অবারিত ঝিলের শান্ত সমাহিত রুপ অশান্ত জনপদে যেন শান্তির পরশ। হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি খালের সাথে বনানী এবং গুলশান লেকের সংযোগের জন্য বসানো হয়েছে হাইড্রোলিঙ্ক লিঙ্ক। এর ফলে লেকগুলি হবে ঢাকাবাসীর জন্য স্বাস্থ্যপ্রদ।

প্রধান মন্ত্রির উক্তি মতে 'এ প্রকল্পটি করার ফলে উতসব অনুষ্ঠানের একটি নতুন জায়গা তৈরী হলো।`পদ্মা সেতু উনি দিতে পারেন নি, হাতির ঝিল তো দিয়েছেন! এখানে আমরা প্রকৃতির নি:সর্গ খুঁজে নিতে পারব। মনের সুখে লম্বা হাটা দিতে পারব।
ফিরতি পথে কাওরান বাজার হয়ে পান্থ পথে এসে উঠলাম। রাস্তা পারাপারের যানজটে হোঁচট খেয়ে বুঝলাম এটাই তো সত্যিকারের ঢাকা। সটান স্বর্গ থেকে মর্তে !

রোববারের হরতালে হয়ত বাস পুড়বে, পুড়ে অঙ্গার হবে মানুষ বা বিশ্বজিতের মত কেউ লাশ হবে-স্তব্ধ হবে নগরী, অথনীতি পড়বে পাকে। তাতে আমাদের দুই প্রধান দলের কি-ই বা যায় আসে। (বল্গটি লিখতে লিখতে শুরু হয়ে গেছে বাসে আগুন লাগানো, বোমা ফাটানো -আগামী কালের হরতালের অগ্রীম ত্রাস।)

পান্থ পথের মসজিদ থেকে ইমামের সুললিত কন্ঠ মাইকে ভাসছে- আগুন আর পানির পার্থক্য কাউকে বলে বুঝাতে হয় না, 'কোনটা আগুন আর কোনটা পানি ব্যক্তি নিজেই বুঝে নেয়। তবে কোন কোন কিসিমের মানুষকে আবার তা বুঝিয়ে দিতে হয়,এই কিসিমে পড়ে বাচ্চা এবং পাগল।… ` ইমাম সাহেবের ব্যাখ্যা অনুযায়ী ভাবতে বসি- আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রি এবং বিরোধীনেত্রী কোন কিসিমে পড়ে?