এ শতাব্দীতে আরও অনেক মুরসী’র দেখা মিলবে

মাহমুদ সাঈদ
Published : 25 June 2012, 05:45 AM
Updated : 25 June 2012, 05:45 AM

গতকাল মিসরের জনতার রায়ে ইখওয়ানুল মুসলিমীনের মেধাবী নেতা, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ মুরসী দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ১০ লাখ ভোট পেয়েছেন। মিলিটারি জান্তা ও মুবারক বলয় অনেক নাটক করেও কোন ফল ঘরে নিয়ে আসতে পারেন নি। তাহরীর স্কয়ারে জনতার বিজয় আজ ইসলামের বিজয়ে পরিণত হয়েছে। এ বিজয় অর্জনের পথে রক্ত ঝড়েছে অনেক। ইতিহাস অনেক লম্বা। তাদের যাত্রা ১৯২৮ প্যানইসলামইজমের সাথে।

(Founded in Egypt in 1928 as a Pan-Islamic, religious, political, and social movement by the Islamic scholar Hassan al-Banna, by the end of World War II the MB had an estimated two million members. Its ideas had gained it supporters throughout the Arab world and influenced other Islamist groups with its "model of political activism combined with Islamic charity work". Its most famous slogan, used worldwide, is "Islam is the solution")

এ দলটির ফাউন্ডার হাসান আল- বান্না সহ অনেক সিনিয়র নেতাদেরকে জেল যুলুম আর ফাঁসী দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জামাল আব্দুল নাসের, আনোয়ার সাদাত, হুসনী মুবারাক সহ সকল সেক্যুলার শাসক গোষ্ঠী তাদের হাত রঞ্জিত করেছে এ দলের নেতা কর্মীর তাজা রক্ত দিয়ে।

১৯২৮ থেকে ২০১২ মোট ৮৪ বছর লেগেছে মুরসীদের ক্ষমতায় আসীন হতে। ফাসির আগে এ দলের থিঙ্কট্যাংক সাইয়েদ কুতব এর একটি বক্তব্য আমাকে ভাবিয়েছে। ফাঁসির আগে জেলখানার ইমাম তাকে কলেমা পড়তে বললেন। জবাবে তিনি বল্লেনঃ তোমার বেতন হালাল করতে আমাকে কলেমা পড়াতে এসেছ, আর আমার ফাঁসী এ কলেমার জন্যই। তুমি এখন আসতে পারো।

এ দলটির আদর্শে- চিন্তায়- চেতনায় প্রভাবিত সারা আরব ও মুসলিম জাহান। বাহরাইন, সিরিয়া, জর্ডান, ইরান, ইরাক, ফিলিস্তিন, সৌদি আরব, কুয়েত, ইয়ামেন, ওমান, আলজেরিয়া, সুদান, তিউনিসিয়া, সোমালিয়া, লিবিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, মরক্কো।

ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ায় আছে তাদের বিশাল কর্মী বাহিনী। ইন্টেলেকচুয়ালী তাঁরা অনেক পরিপক্য। আর্থিক ভাবে তাঁরা অনেক সুষম। প্রযুক্তি বিদ্যায় তাঁরা সমসাময়িক। আছে ত্যাগী নেতা কর্মী। সাহসী পদক্ষেপ। বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে তাঁরা অতি সহজে সাধারণ জনতার মন জয় করছে। মানুষ কাউকে না বলে এদেরকে ভালো বাসে। এদের জন্য দোয়া করে। কষ্টে ও দুঃখে মানুষ এদের কাছে যায়।

আল্লাহর প্রতি রয়েছে অবিচল আস্থা, অগাধ বিশ্বাস। তাঁকে খুশী করাই তাদের একমাত্র মটো। 'ইসলাম একমাত্র সমাধান', এটাই তাদের স্লোগান। গণতান্ত্রিক পদ্যতিতে ক্ষমতায় যাওয়া তাদের একমাত্র ম্যাথডলোজী। জংগিবাদ তাদের কাছে এক নম্বর ঘৃণার পাত্র। তাদেরকে জংগী বানানোর প্রচেষ্টা সর্বত্র অব্যাহত। এ বিষয়টি সাধারণ মানুষ বোঝে।

এরা ইতোমধ্যে তিউনেসিয়া, লিবিয়া এবং মিসরে তাদের শক্তির প্রমাণ প্রদর্শন করতে পেরেছে। কুয়েত পার্লামেন্টে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ইয়ামেন, বাহরাইনে তাদের অবস্থা অনেক মজবুত।
সমাজতন্ত্র আর পুঁজিবাদের ব্যর্থতার পর পৃথিবী আজ নতুন বিশ্বব্যবস্থার দিকে মোড় দিচ্ছে। ১৯৯২ সালে ২৫০০ সমাজ বিজ্ঞানিদের এক আন্তর্জাতিক কনফারেন্স বলেছেঃ সে বিশ্বব্যবস্থা হল ইসলাম। তাই তো ইসলাম কে জংগীবাদ বানানোর এত প্রয়াস। এরই মধ্যদিয়ে মুরসীরা বেড়িয়ে এসেছে। আরও অনেকে তাঁর পদাংঙ্ক অনুসরণ করবেন। এ মিছিল অনেক লম্বা। এর পরই আসবে দাজ্জালের কালো যুগ। তারপরে হযরত ঈসা (আঃ) এর কাল। তারপর কিয়ামত।