শুক্রবার ১১-০২-২০১১ ইং তারিখে আমার একটি নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। সরকারী চাকুরী, তবে প্রজেক্ট। অনেকদিন আগে আমি এর জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। সাথে তিনশত টাকার একটি ব্যাংক ড্রাফট। দুই তিন মাস আগে আমার বন্ধুরা অনেকে লিখিত পরীক্ষার কার্ড পেয়েছিল। আমি পাইনি। অবাক হইনি। এমন হতেই পারে। তাই এ বিষয়ে আগ্রহও হারিয়ে ফেলেছিলাম। দিন তিনেক আগে আমার কাজিন আমাকে জানালো আমার নাকি একটি কার্ড এসেছে। আমি বললাম কিসের সে জানালো চাকরীর ইন্টারভিউ কার্ড। সাথে পরীক্ষা কবে তাও জানালো। আমি বৃহস্পতি বার রাতে কাজিনের বাসা থেকে চিঠি নিয়ে আসলাম। একট অর্গানাইজেশনে চাকরী করি। এই প্রজেক্টে যা পাবো তার চেয়ে বর্তমানেই ভালো আছি। তাই এই চাকরির ব্যাপারে আগ্রহ তেমন একটা নেই। শুধু মাত্র পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা হবে বলে পরীক্ষা দিতে যাওয়া। সিট পড়েছে মতিঝিল বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে।
শুক্রবার নয়টায় গিয়ে পৌঁছালাম স্কুলের সামনে। আসন খুঁজে নিয়ে বসে পড়লাম। একজন শিক্ষক আসলেন খাতা নিয়ে। আমাকে খাতাও দেয়া হলো। চার পাতার খাতা। সাথে স্ট্যাপলার দিয়ে নাম পদের নাম রোল ইত্যাদির তথ্য ভান্ডার। ভাবলাম এটা আবার কেমন খাতা। মুল খাতায় কোন তথ্য লেখার জায়গা নাই। তার মানে আমার খাতা আর অন্যের খাতার কোন পার্থক্যই নাই। আলাদা কাগজটি খুলে ফেললে কার খাতা তা বোঝার কোন উপায়ই নাই। জানতাম না মুল চমক সামনে অপেক্ষা করছে। প্রশ্ন দেয়ার আগে দায়িত্বরত শিক্ষক এলেন খাতায় স্বাক্ষর দিতে। আমার কার্ড দেখে বললেন মুল কার্ড কোথায়। প্রশ্ন শুনে আমি তো থ। আমি তো একটি কার্ডই পেয়েছি। তিনি আমায় বললেন এটির আগে একটি মুল কার্ড দেয়া হয়েছে সেটি ছাড়া পরীক্ষা দেয়া যাবে না। কি করা যায়। তিনি আমায় বুদ্ধি দিলেন নিচে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের লোক আছে তার কাছে যেতে। নিচে নামলাম। দেখি আমার মতো অনেকের অবস্থাই একই। সংখ্যায় আমরা প্রায় ২০০ জনের মতো। পিডি ওখানেই ছিলেন আমরা তার সাথে দেখা করতে চাইলাম, তিনি করলেন না। আমাদেরকে জানানোর ব্যবস্থা করলেন যাদের প্রথম কার্ড ইস্যু হয়নি, তাদের পরীক্ষা নেয়া হবেনা। আমরা জটলা করলাম। কিছুক্ষণ পর পুলিশের আগমন। বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ আমাদের বললো রিট করার জন্য আমরা তাই করলাম। জানি এতে কিছুই হবেনা। শুক্রবার রাতে রেজাল্ট দিবে। আজ সকালে এর ভাইভাও হয়ে গেছে। কাল নিয়োগ ও হয়ে যাবে। কিন্তু আমার মতো ২০০ জন কি এমন অপরাধ করলো যে পরীক্ষাটা পর্যন্ত দিতে পারলো না। এর দায়ভার কে নিবে?