“বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নৌ প্রটোকল” কী পেলাম? কী পাই? আর কী পেতে পারি?

সৈয়দ মুজিবুল হক
Published : 3 July 2012, 08:47 AM
Updated : 3 July 2012, 08:47 AM

বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার মধ্যকার নৌ প্রটোকল এর মেয়াদ ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আজ সচিব পর্যায়ের এক মিটিং এর পর নৌপরিবহন সচিব আব্দুল মান্নান হাওলাদার আজ জানান আগামীকাল বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়ার মধ্যে এই সম্পর্কিত একটি চুক্তি হবে। বাংলাদেশের পক্ষে আঠারো সদসসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বা দেন আব্দুল মান্নান হাওলাদার এবং ইন্ডিয়ার পক্ষে আট সদসসের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইন্ডিয়ার নৌ সচিব প্রদীপ কুমার সিনহা। তিনি আর জানান নৌ প্রটোকলের আওতায় ভারত নৌপথ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশকে ১০ কোটি টাকা দেবে, আগে যার পরিমাণ ছিল পাচ কোটি টাকা। তিনি এই বিষয়ে আর কিছু বলেন নি। তিনি জানা কাল চুক্তি নবায়ন হবার পর সব কিছু জানান হবে।

এইখানে প্রশ্ন উতথে পারে আমরা ভারত কে "ট্রানজিট" না "ট্রানসিপমেন্ট" সুবিধা দিচ্ছি এই প্রোটোকলের মাধ্যমে? অমর ক্ষুদ্র জ্ঞান নিয়ে সে বিশ্লেষণে যাচ্ছিনা আপতত, আসুন আমরা দেখি ঘটনাটা কী??

ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে এই প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছিল 1972 সালে। এর পর থেকে প্রততেক দুই বছর পর পর এই প্রটোকল নবায়নের মাধ্যমে এই ইন্ডিয়া বাংলাদেশের অবভন্তরে নদীবন্দর ব্যাবহার করে তাদের পন্ন ও মালামাল পরিবহনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছে। এই প্রটোকল এর মেয়াদ শেষ হয়েছে এই বছরে মার্চ মাসে।

এই প্রটোকল এর মেয়াদ শেষ হবার পর ইন্ডিয়া আর তিন বছরের জন্য চুক্তি নবায়নের চাপ দিতে থাকে। পরবর্তীতে 1 এপ্রিল 2012 এই চুক্তি আর একবছরের জন্য নবায়ন করা হয়। গতবছর ইন্ডিয়া কোনরকম শুল্ক ছাড়াই বাংলাদেশের আশুগঞ্জ নদিবন্দর এবং আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যাবহার করে পন্ন ও মালামাল তাদের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করে!!

এইদিকে 12 ফেব্রুয়ারী এক মিটিং-এ ইন্ডিয়া আশুগঞ্জ এর মত নারায়নগঞ্জ, চাঁদপুর, এবং ছাতক নদী বন্দরে তাদেরকে ট্রানজিট দেয়ারও দাবি জানায়। নৌ-সচিব মান্নান হাওলাদার বলেন, অনেকে বলছেন দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে আমরা নৌ-প্রটোকল চুক্তি করছি। বিষয়টি সঠিক নয়। আমাদের স্বার্থ ছেড়ে আমরা ভারতকে কিছু পেতে দেব না। তবে দরকষাকষির জন্য কিছু জিনিস হাতে রাখতে হয়।

কিন্তু আমাদের সরকার যেভাবে উদারতার চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে সমুদ্র, স্থল, ও নৌ বন্দর, মহাসড়ক ব্যাবহার করে তাদেরকে মালামাল পারাপারের উদ্যোগ নিয়েছেন, দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেলে যেই সরকারে মন্ত্রী বলেন আল্লার মাল আল্লা নিয়া গেছে (!) তাতে আমাদের সাধারণ জনগণকে আগামী কালপর্যন্ত অট্টন্ত উদ্বেগ নিয়েই আগামী কাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তারা কতটুকু দেশের স্বার্থ রক্ষা করেন আর কতটুকু জলাঞ্জলি দেন। যদি সরকার বছরে 10 কোটি টাকা পেয়েই খুশিতে আত্মহারা হয় এবং তাতে যদি দেশের স্বার্থ উদ্ধার হয়ে যায় তবে তা ভিন্ন কথা!