হত্যা, গুম ও হরতাল– রাজনীতির পাণ্ডাদের কি নতুন সামাজিকীকরণ দরকার?

মুক্তি-মণ্ডল
Published : 23 April 2012, 02:38 PM
Updated : 23 April 2012, 02:38 PM

হত্যা, গুম ও হরতাল রাজনৈতিক ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সাধারণ মানুষ এর থেকে দূরে অবস্থান করেন, অনেকটা ফাঁকা দ্বীপের মতন। সাধারণ জনগণ শুধু মাত্র ভোট দিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিকে/দলকে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব ভোগের অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে থাকেন, আমাদের এই দেশে। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি সম্পর্কে জনগণের যে সামাজিক 'ধারণা' তৈরি হয়ে আছে সামাজিকীকরণের নানা মাধ্যমে তা হালে কোন পানি পায় না। সম্প্রতি গুম হওয়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ ইলিয়াস আলী সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা যায় থাক না কেনো তাতে কিছু আসে যায় না। সে একসময় সন্ত্রাসী ছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের ত্রাস ছিল, বিএনপি আমলেই জেল খেটেছেন, এসব ধারণার কোন মূল্য নাই। তাঁর খারাপ কাজের আমলনামার পাতাগুলা রাজনীতির গূহ্যদ্বার দিয়া কোথায় যে চলে গেছে সে বিষয়ে ভাবার কোন সময় এখন নাই। সে গুম হয়েছে। এটাই বড় খবর। তাঁর খোঁজ পাওয়ার জন্য দলীয় হরতালের তান্ডবে অনেকগুলা তাজা প্রাণ রাজনীতির তলপেট ঘেষেই চিরঘুমে চলে গেল। এইসব চিরঘুমের দেশে চলে যাওয়া মানবগুলাকে কি 'হত্যা' করা হয় নাই? কি বলবো আমরা এসব মানবকুলকে? কোন নামে ডাকব এসব তাজাপ্রাণ সাধারণ জনগণের কাতারে থাকা থোকা থোকা ফুলকে?

রাজনৈতিক পাণ্ডারা হত্যা, গুম ও হরতালের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের ভেতর দিয়ে সমাজে নিজেদের চেহারা-সুরত জনগণের মানসপটে চিহ্ন হিসেবে ফুটিয়ে তুলতেছে বা বলা যায় স্থায়ীভাবে রূপ দিতে চাচ্ছেন, বর্তমান রাজনৈতিক ঘটনা-দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ করলে এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে। এখানে জনগণের যে ধারণা তার কোন মূল্য থাকতেছে না। জনগণ যে সামাজিকীকরণের মাধ্যমে ধারণা'র পরিসরে নিমজ্জিত, আমরা চাই সেখানে রাজনৈতিক পাণ্ডাদের মানসও থিতু হৌক। জনগণের ধারণার সাথে নিজেদের ধারণা মিলায়ে নিক। তারপর রাজনীতি করুক। ক্ষমতাচর্চা করুক। জনগণের পক্ষে হরতাল নয়, এমন কর্মসূচি দিক, যা দিয়ে শাসক গোষ্ঠীর ভিত নড়ে উঠুক।