মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী কি দেশ ও জাতির অভিভাবক নন?

খান ইখতিয়ার
Published : 13 August 2012, 08:16 AM
Updated : 13 August 2012, 08:16 AM

সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে বলে শুনা যাচ্ছে। স্থায়ী না সাময়িক তা এ মুহূর্তে বলতে পারছিনা। ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসা মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে এটা যদি স্থায়ীই হয় তবে তা অবশ্যই দেশের জন্য একটা বড় আঘাত হবে,কারণ মধ্যপ্রাচ্যে আমিরাত বাংলাদেশীদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। এমনিতেই সৌদি আরব,কুয়েত সহ কয়েকটি আরব দেশে বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশীদের ভিসা বন্ধ। তার উপর আমিরাতেও বন্ধ হয়ে গেলে তা অবশ্যই দেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে তাতে সন্দেহ নেই ।

নানা উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় অতিবাহিত আমাদের প্রবাস জীবনে দেশের সংবাদ বলতে স্যাটেলাইট চ্যানেল ও অনলাইন পত্রিকাই প্রধান ভরসা। দেশের মত এখানেও দু'চারজন একত্রিত হলে সংবাদ মাধ্যমের সূত্র ধরে চলে তর্ক-বিতর্ক, আওয়ামী লীগ-বিএনপি দলাদলি।তেমনি একটি বিতর্কের সূত্র ধরে আমার আজকের লেখার অবতারণা। আমিরাতে ভিসা বন্ধ করে দেয়ার প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ-বিএনপি'র তর্কের এক পর্যায়ে এক বিএনপি সমর্থক বললেন,আমাদের বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসলে সৌদি আরবে ভিসা খুলে যাবে। সত্যিই কি তাই ? আমাদের দেশের পাকিস্তানপন্থীদের সাথে আরব বিশ্বের সখ্য নতুন কিছু নয়। ইসলামী ব্যাংকের ৩৭% শেয়ারের মালিক সৌদি আল রাজী ব্যাংক। ব্যাংক দু'টির বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে জঙ্গী অর্থায়নের অভিযোগ উঠেছে। সৌদি দাতব্য সংস্থা রাবেতা আলম আল ইসলামীর প্রায় সব কাজই বাংলাদেশে ধরতে গেলে জামায়াতের মাধ্যমে হয়। আমাদের মাননীয় বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও চিকিৎসা, ওমরাহ্‌ বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঘনঘন সৌদি আরব যান। বর্তমানেও উনি রাজকীয় মেহমান হিসেবে আত্মীয় স্বজনের বহর নিয়ে সৌদি আরব অবস্থান করছেন। এটাও বিএনপির সাথে সৌদিদের সুসম্পর্ক প্রমাণ করে। প্রশ্ন হচ্ছে এ সুসম্পর্ক দেশ ও জাতির জন্য কতটুকু ফলদায়ক?

বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে তিনিও আমাদের একজন অভিভাবক। মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের এ করুণ হালে তার আমাদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী মাথা ব্যাথা আছে নিশ্চয়ই। সৌদি আরবের সাথে তার এবং তার জোটের সুসম্পর্কের সূত্র ধরে তিনি যদি বাংলাদেশীদের জন্য সৌদি আরবের ভিসার দ্বার উন্মুক্ত করতে পারেন, তবে সেটিই হবে দেশ ও জাতির জন্য প্রকৃত ফলদায়ক। সেটির জন্য ক্ষমতায় আসার তো কোন প্রয়োজন দেখছিনা। ক্ষমতার বাইরে থেকেও যদি তিনি এ কাজটা করতে পারেন তবে তা হবে বহির্বিশ্বে তার ভাবমূর্তি ও গ্রহনযোগ্যতার পরিচায়ক। তা হতে পারে তার নির্বাচনী তুরুপের তাসও। কিন্তু তিনি কি সেই চেষ্টা করবেন? তিনি কী মনে করেন তিনি ও আমাদের একজন অভিভাবক?