অনিয়ন্ত্রিত নৌপরিবহনঃ আর কত মানুষ নদীগর্ভে বিলীন হবে?

খান ইখতিয়ার
Published : 5 August 2014, 07:25 AM
Updated : 5 August 2014, 07:25 AM

নদীগর্ভে কয়েকটি লঞ্চ ডুবে শত শত প্রাণহানি যেন এখন প্রতি বছরের বাস্তবতা। মিডিয়ার কয়েকদিনের আলোচনা সমালোচনার পর ঐ লঞ্চের মতই ডুবে যায় সবার মনোযোগ, শুধু ভেসে থাকে আকাশে বাতাসে স্বজনহারাদের আর্তনাদ। যেন দেখার কেউ নেই, নিয়ন্ত্রণ করার কেউ নেই, কারো দায়বদ্ধতা নেই। একজন আরেকজনের উপর দায় চাপিয়েই সারা, সবটুকু দায় শেষমেশ জীবন দিয়ে পরিশোধ করতে হয় উপায়হীন, নিরীহ যাত্রীদের, নদীগর্ভে সর্বস্ব বিলিয়ে দেয়া স্বজনহারাদের।

যতটা না প্রাকৃতিক দুর্যোগ তারচে বেশি ফিটনেস সমস্যা ও ধারণ ক্ষমতার অধিক যাত্রী পরিবহনের কারণেই অধিকাংশ দূর্ঘটনা ঘটে। লোভী লঞ্চ মালিকদের কাছে যেন দু'পক্ষই জিম্মি, যাত্রীরা আর কোন উপায় নেই বলে আর প্রশাসন উপরি পায় বলে। ফিটনেস সার্টিফিকেট দিয়েই কি সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব শেষ?

অর্থলোভে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দেয়া ফিটনেস সার্টিফিকেট যথাযথ কিনা, যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা মানা হচ্ছে কিনা তা দেখার কি কেউ নেই?

বছরের পর বছর ঘটে চলা এ দূর্ঘটনা রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে না পারা অবশ্যই সরকারের ব্যার্থতা। এ ধরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পদত্যাগের নজীর আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও আছে, কিন্তু আমাদের দায়িত্বশীলরা তো জনগণের মহান খেদমত (?) থেকে গলাধাক্কা দিলেও সরতে চাননা। কার্যকর জবাবদিহিতা নেই বলে আমাদের দেশে কিছু চুনোপুঁটির উপর দায় চাপিয়ে রাঘব বোয়ালরা পার পেয়ে যান। তাদের ক্ষমতার গদি বহাল তবিয়তে থাকে। আর দিনের পর দিন সর্বস্বান্ত হয় নিরীহ মানুষ।

বুঝতে পারিনা আর কত মানুষ নদীগর্ভে হারালে, আর কত লঞ্চ ডুবলে সরকারের টনক নড়বে, কবে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে আর তা বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তার তদারকি করবে। কোন দাবী দিয়ে লাভ নেই, কোন সুপারিশ করেও লাভ নেই, আসুন সবাই বিধাতার কাছে প্রার্থনা করি- তিনি যেন মানুষের প্রাণ নিয়ে খেলা করা এসব অমানুষদের মানুষ হওয়ার তওফিক দেন।