ব্যাংককের আদলে ঢাকার খালগুলোতেও চলুক যাত্রীবাহী জলযান

শাহ মুর্শিদ
Published : 29 August 2019, 11:11 AM
Updated : 29 August 2019, 11:11 AM

ঢাকা শহরের মৃত-অর্ধমৃত খালগুলো যদি আবার প্রবাহমান করা যায় তাহলে আজকের এই অসহনীয় যানজট থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা পরিকল্পিত বিকল্প পেত ঢাকাবাসী।  ঢাকার খালগুলো পুনরুদ্ধার করে গণপরিবহন প্রকল্পের সাথে  সমন্বয় করা গেলে যানজটের টেকসই সমাধান যেমন সম্ভব, তেমনি মেগাপ্রকল্পগুলোর সুফল নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছানোও সম্ভব হত।

ব্যাংককে যানজট নিরসনের যে প্রকল্পগুলো শহরের প্রাচীন খালের নেটওয়ার্কগুলোকে চমৎকারভাবে যুক্ত করে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে খুব কম খরচে কাজে যাবার সুযোগ করে দিয়েছে।

প্রায় প্রতি দুই কিলোমিটার পরপর ওঠানামার ঘাট রয়েছে। স্কুলের শিশুরাও খালে চলা জলযানে যাতায়াত করে। অফিস-স্কুল শুরু ও ছুটির সময় যখন প্রচণ্ড ভিড় হয়, তবে তখন প্রতি ৩ থেকে ৫ মিনিটে একটা জলযান ঘাটে এসে হাজির হয়। দুর্ঘটনা রোধের জন্য এখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও যথেষ্ট কার্যকর।

ঢাকার জন্য এই রকম একটা ব্যবস্থা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে। হাতিরঝিল একটি ঘাট হতে পারে। এছাড়া কুড়িল থেকে খালের মাধ্যমে পূর্বাচল এবং আশেপাশের এলাকা, বনশ্রী খালের মাধ্যমে একেবারে ডেমরা পর্যন্ত  এবং ঢাকার চারিদিকে বৃত্তাকার নৌপথের সাথে সংযোগ করে একটি পূর্ণাঙ্গ জলপথ হতে পারে ঢাকাবাসীর দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য। তাতে সড়কের উপর চাপও কমবে।


খালের দুই প্রান্তই যেহেতু নদীর সাথে যুক্ত থাকবে তাই জোয়ার-ভাটার কারণে পানি নিয়মিত নিষ্কাশন হবে। পানি ময়লা হবার সুযোগ থাকবে না। ব্যাংককে চাও ফ্রায়া নদীর সাথে সংযুক্ত খালগুলো শহরের পানি নিষ্কাশনের অন্যতম পথ। এসব খালে পাশাপাশি দুটো সরু এবং লম্বা আকৃতির দ্রুতগামী বোট চলতে পারে।  সরু খালে  বড় বড় ঢেউ হয়; তবে চালকেরা দক্ষ হওয়ায় দুর্ঘটনার হার একেবারেই নগণ্য।

পানিতে মাঝে মাঝে দুর্গন্ধ পাওয়া গেলেও জোয়ার-ভাটা আর প্রচুর বৃষ্টির ফলে তা স্থায়ী হয় না। তাছাড়া সময় সাশ্রয়ী এবং ভাড়া আওতার মধ্যে থাকায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা এই সামান্য অসুবিধাকেও বড় করে দেখে না। ব্যাংককের খালে এই গণপরিবহন প্রকল্প  আমাদের জন্যও অনুসরনীয় হলে ঢাকাবাসীর পরিবহন দুর্ভোগ লাঘব হবে।