আমরা কার কথা মানবো- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর না তার প্রতিমন্ত্রীর?

মুতাসিম বিল্লাহ নাসির
Published : 31 May 2012, 08:28 AM
Updated : 31 May 2012, 08:28 AM

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেছেন পুলিশ আগের থেকে ভালো, আর তার প্রতিমন্ত্রী সামসুল হক টুকু বলেছেন পুলিশ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। (যেমনটা পাগলা কুকুর থেকে অনেক সচেতন মানুষ সাবধান করেন যে পাগলা কুকুর থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন যে কোন মূহুর্তে সে কামড়াতে পারে) এখন আমরা কার কথায় দৃষ্টিপাত করবো। সাহারা নিজেকে প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে নিজেকে সফল মনে করেন। তার ভাষায় সে পাকিস্তান আমল থেকে রাজনীতি করেন। সে তার একটি পা ভাঙ্গার উদ্বৃতি দিয়ে পুলিশকে আগের থেকে ভালো বলেছেন যা প্রকারান্তরে পুলিশকে জনগনের কাছে আরো হিংস্র হিসাবে তুলে ধরলেন। তিনি বললেন সাংবাদিকরা এটা না বুঝলেও দেশবাসী বুঝে। ঢাবির পঙ্গুত্ব বরণকারী ছাত্র আবদুল কাদির যখন পুলিশি হামলার নির্মম শিকার হল তার আমলে, সে সময়ে তার পা ভাঙ্গার উদ্বৃতি দেয়া যে কতটা হাস্যকর তা হয়ত ঐ (প্রবীণ!) সাহারা তার পদে থেকে উপলব্ধি করতে না পারলেও বাংলার নিপীড়িত মানুষ যারা প্রতিদিন বিভিন্ন কারণে পুলিশি হামলায় অতিষ্ট তারা বুঝেন। সাহারার মুখের বেসামাল কথাবার্তার দায় একদিন হয়ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকেই নিতে হবে। যখন পুলিশের থেকে আমার মা বোনদের ইজ্জ্বত নিরাপদ নয়। যখন তারা আইনের পোষাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটায় সে সময় এরকম কথাবার্তা যে পুলিশকে আরো অনৈতিক কর্মকাণ্ডে উসকে দেবেনা তার গ্যারান্টি কে দেবে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এরকম বেসামাল কথাবার্তায় সাধারণ মানুষ আরো বেশী নিপীড়নের শিকার হবে। সাহারা খাতুন পুলিশের চাকুরীতে লক্ষাধিক সদস্য থাকায় (জনসংখ্যা বৃদ্ধির ন্যায় পুলিশের সদস্যর ক্রমবৃদ্ধিতে যা দলীয় করণ করার তাগিদে করা হয়েছে) তাতে যেন অস্থির হয়ে বললেন এর মধ্যে যে সবাই ভালো হবে তা নয় ( যেন লক্ষাধিক সন্ত্রাসীর নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তার, যার কারণে কিছু সন্ত্রাসী মাঝে মাঝে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যেতে পারে)। তিনি হরহামেশা প্রচলিত নীতিবাক্য ভূলে গেলেন যে

দুষ্ট গাভীর চেয়ে শূণ্য গোয়াল অনেক ভালো

বরং তিনি ভয়ংকর পুলিশের কর্মকান্ডকে প্রশ্রয় দিয়ে অবুঝ শিশুদের মতো পুলিশের কর্মকাণ্ডের সাফাই গাইলেন যে পুলিশ সংখ্যা তো অনেক তাই সাংবাদিক নির্যাতন মা-বোনদের ইজ্জত লুটের চেষ্টা এর আর তেমন কি অপরাধ! যা তার বক্তব্যর ইঙ্গিত।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার মুখের লাগাম টেনে ধরার অনুরোধ করছি। সেই সাথে তাকে এ ও সতর্ক করছি যে আপনার গাড়ির চাকা এই বাঙ্গালীর ঘর্মাক্ত শরীরের অর্জিত অনেক কষ্টের টাকা। আর এই পুলিশকে শ্রমিকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, কৃষকের খেতে কাজ করে আরো বিভিন্ন শারিরীক মানুষিক কষ্টের অর্জিত টাকায় তাদের লালন পালন করা হয়। এই জনগনের সেবাই তার লালন পালনের উদ্দেশ্য সুতরাং আপনি যদি তাদের বেআইনি কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দেন। গাধার মতো মুখ লুকিয়ে মনে করে থাকেন যে আপনার অধীনে নিয়োজিতদের অপরাধ কেউ দেখেনি তাহলে অচিরেই এর ফলাফল দেখতে পাবেন। আপনার প্রবীণ রাজনীতির যে ইতিহাস আপনার সামনে আছে তা থেকেই আপনাকে শিক্ষা নেওয়ার অনুরোধ করব। ইতিহাসের ছাত্রদের হাস্যরস করে আমরা অনেক সময় বলি যে ইতিহাসের বড় শিক্ষা হলো এর থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। আপনি যেহেতু প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসাবে নিজেকে প্রচারের চেষ্টা করেছেন, আপনার কাছে বিনীত অনুরোধ আপনি ইতিহাস থেকে ক্ষমতায় থেকে ভালো কাজ করার শিক্ষা নিন দেশকে মাৎস্যন্যায় এর হাত থেকে বাঁচান, অন্যায়ের উপযু্ক্ত বিচার করুন গোপালের ন্যায় অরাজক অবস্থা থেকে আপনার বিভাগকে অরাজকতা থেকে মুক্ত করুন। তাতে আপনার মর্যাদা বাড়বে আপনার বিবৃতির গুরুত্ব থাকবে নয়তো আপনার সাগর-রুনির ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটামের ধারাবাহিক বিবৃতি জনগনের কাছে পাগলের প্রলাপের মতোই মনে করতে বাধ্য হবে জনগন।