দ্রুক ডায়েরি: টাইগার নেস্ট (২য় পর্ব)

নবকুমার দত্ত
Published : 28 March 2018, 04:31 AM
Updated : 28 March 2018, 04:31 AM

দু-দিন রিসোর্টের কনফারেন্স রুমে সিরিয়াস অফিসিয়াল মিটিংয়ে কেটেছে। বিরতির সময়গুলোতে এবং বিভিন্ন ছুতোয় বের হয়ে আমার দু-চোখ চোরের মতো অপ্সরাকে খুঁজেছে।

একবার লবিতে ইতিউতি করছিলাম। একটা কন্ঠ বলে উঠলো, 'তুমি কি কাউকে খুঁজছো?' চমকে উঠে তাকিয়ে দেখি তৈলচিত্র থেকে উঠে আসা অপ্সরী অদূরে দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছে। ধরা পড়ে গেলাম। এই ধরা পড়ায় লজ্জার চেয়ে ধরা পড়ে যাওয়ার সূক্ষ্ম একটা সুখবোধ বেশি কাজ করে।

ওর হাতে একটা ট্রে ভর্তি চকোলেট বিস্কুট ছিলো। আমাকে বললো, 'বিস্কিট খাবে?'

পুরো মাত্রায় বাঙালি প্রেমরস ঢেলে বললাম, 'তুমি এক পেগ হেমলক অফার করলেও চুমুকে পান করে নিবো।' হেসে বললো, 'তুমি খুব মজার মানুষ তো!' আমি বললাম, 'বাই দ্য ওয়ে, আমি নব'। করমর্দনের ছলে হাত বাড়িয়ে ওর হাত মুঠোয় পুরে নিলাম। সে বললো, 'আমি ঈয়েশি'।

আমি বার কয়েক উচ্চারণ করলাম, 'ঈয়েশি, ঈয়েশি, ঈয়েশি।' ঈয়েশি ভ্রূ কুঁচকে বললো, 'তুমি কি নাম মুখস্ত করছো?' আমি বললাম, 'নিউরণে লিখে নিলাম।'

ঈয়েশির হাত বেয়ে, পেলব কবোষ্ণ আঙুলের ডগা বেয়ে আমার দেহে বিদ্যুৎ সঞ্চালিত হচ্ছিলো। আমার মস্তিষ্কের প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে অনুরণিত হচ্ছিলো 'ঈয়েশি ঈয়েশি।' বললাম, 'কাল টাইগার নেস্ট ট্র্যাকিং এ যেতে চাই। তোমার টিপস চাইছি। সন্ধ্যায় লবিতে কথা বলতে পারি?' ঈয়েশি ঠোঁট টিপে মাথা নেড়ে সায় দিয়ে চলে গেলো।

ক্লিফের গা কেটে বানানো হয়েছে টাইগার নেস্ট মন্দির

সন্ধ্যায় পারো ভ্যালিতে ঠাণ্ডা জেঁকে বসে। তাপমাত্রার পারদ একটানে মাইনাসে চলে যায়। পর্বতের মাথায় তখনো নরম কণে-দেখা আলো খেলা করে। ভ্যালি জুড়ে বাড়ি-ঘরে ইলেট্রিকের বাতি জ্বলা শুরু হয় তখনি। দূরে পারো জং (Dzong)- এ আলোর উৎসব লেগে যায়। পর্বতের গায়ে গায়ে দাঁড়িয়ে থাকা বাড়িগুলোর আলোর দিকে তাকালে মনে হয় আকাশটা এখানে উল্টে আছে হাজারো তারার প্রদীপ জ্বেলে। ঠান্ডায় বাইরে আর কিছু করার থাকে না। মিটিং শেষে আরো কিছু গরম কাপড় চাপিয়ে লবিতে এসে বসে রইলাম ঈয়েশির প্রতীক্ষায়। ঈয়েশি আসার পর জেসমিনের একটা আলতো ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়লো ওর শরীর থেকে।

ঈয়েশি জানালো, টাইগার নেস্ট ট্রেইলে ট্র্যাকিং করার জন্য সকালের প্রথমভাগ উপযুক্ত। কিছু খাবার, চকোলেট আর জল নিয়ে যাওয়া জরুরি। আমরা যারা সমুদ্র সমতলে বাস করি, আমাদের জন্য খুব কষ্টকর টাইগার নেস্টে ওঠা। ক্লিফের গায়ের মূল মন্দিরটি সমুদ্র সমতল থেকে ১০ হাজার ২৪০ ফুট উপরে এবং পারো ভ্যালি থেকে  তিন হাজার ফুট উচ্চে। হেইটো ফোবিয়া বা উচ্চতা ভীতি থাকলে উঠার আগে আরেকবার চিন্তা করা উচিৎ। ধীরে সুস্থে বিরতি দিয়ে উঠার পরামর্শ দিলো ঈয়েশি। আর অবশ্যই একটা ওয়াকিং স্টিক নিতে হবে। ওর পরামর্শের চেয়ে আমার মনোযোগ বেশি ছিলো জেসমিনের ঘ্রাণ মাখা পুরো ঈয়েশি-মূর্তির দিকে। এটা সেটা নিয়ে আরো কিছু খুচরো আলাপের পর রাতের খাবার খেয়ে ঘরে চলে এলাম ঈয়েশিকে বিদায় জানিয়ে। রুম হিটারটাকে আরেকটু কাছে টেনে এনে শুয়ে পড়লাম। টাইগার নেস্টের ইতিহাস জানতে শুয়ে শুয়ে ইন্টারনেটে একটু উঁকি দিলাম।

ভূটানিজ জোংখা (Dzongkha) ভাষায় টাইগার নেস্টের নাম টাকসাং (Taktsang)। বৌদ্ধগুরু পদ্মসম্ভব অষ্টম শতাব্দীতে এখানে ধ্যান করেছিলেন তিন বছর, তিন মাস, তিন সপ্তাহ, তিন দিন, তিন ঘণ্টা ধরে। তিনিই ভূটানে বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তন করেন। টাইগার নেস্টে মন্দির তৈরি করা হয় ১৬৯২ সালে। লোকগাথা অনুসারে, ঈয়েশি সোগ্যাল (Yeshe Tsogyal) নাম্নি একজন সম্রাজ্ঞী স্বেচ্ছায় গুরু পদ্মসম্ভবের অনুচর হন এবং গুরুকে সহায়তা করার জন্য নিজে বাঘিনীর রূপ ধারণ করেন এবং তিব্বত থেকে গুরুকে পিঠে করে নিয়ে আসেন টাইগার নেস্টে।  এ। এখানে গুরু ধ্যানস্ত হন।

রাতে বেশ ভালো ঘুম হয়েছিলো। কোথাও কোনো শব্দ নেই। যেনো কোটি বছর ধরে অবিচল ঘুমিয়ে থাকা শিলার ঘুম ভেঙে যাবে সামান্যতম শব্দে! তৈরি হয়ে বের হয়ে এলাম। রাতে পাহাড় চুইয়ে বেরিয়ে আসা জলটুকু সকালে বরফ হয়ে আছে দেখলাম। লবি পেরিয়ে লনে বের হয়ে আসার পর পেছন থেকে দিনের প্রথম শব্দ শুনতে পেলাম, 'হেই'! পেছনে তাকিয়ে দেখি একটা ওয়াকিং স্টিক নিয়ে ঈয়েশি দাঁড়িয়ে আছে। বললো, 'এটা নিতে বলেছিলাম রাতে'। আমি ওয়াকিং স্টিকটা নিয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে নিচের দিকে নেমে গেলাম ঢাল বেয়ে। পাথর চুইয়ে আসা জল বরফ হয়ে জমে আছে পথের পাশে। পায়ের নিচে কাঁচ ভাঙার মতো ভাঙল পাতলা বরফের চাঙড়। মূল সড়কে কিছুক্ষণ দাঁড়াতেই একটা ট্যাক্সি পেয়ে গেলাম ২৫০ টাকায়। ৭-৮ কিলোমিটার উত্তরে এগিয়ে গেলো ট্যাক্সি। গিয়ে দেখি ততক্ষণে অনেক পরিব্রাজক এসে গেছে। কিছু লোক এসে আমাকে ঘিরে ধরলো ঘোড়া ভাড়া করার জন্য। ৫০০ টাকায় আধাপথ উঠিয়ে দিয়ে আসবে ঘোড়ার পিঠে করে। ঘোড়াগুলোকে দেখে আমার খুব মায়া হলো। বেচারারা ঘোড়া হয়ে জন্মেছে বলেই আজ আস্ত মানুষ পিঠে নিয়ে উলম্ব পথে পর্বত বাইতে হয়। ঘোড়াওয়ালাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় করলাম।

যাত্রা শুরু হলো। একটা ঝর্নার জলে ঘূর্ণায়মান প্রেয়ার হুইল বায়ে রেখে ক্রমশ উঁচু ট্র্যাক ধরে উঠা আরম্ভ করলাম। ঋজু পাইন গাছগুলোয় ফল ধরে আছে। পায়ের নিচে কুড়মুড় করে গুড়ো হতে থাকলো পাইনের শুকিয়ে যাওয়া পাতা। রডোডেনড্রন গাছগুলো শীতে প্রায় ন্যাড়া হয়ে আছে। শীতের শেষে বাহারি ফুলে শোভিত হয়ে উঠবে। এখানে সেখানে ঝুলে আছে প্রেয়ার ফ্ল্যাগ, বাতাসে উড়ছে। সর্বত্র নৈশব্দ বিরাজ করছে। মাঝে মাঝে প্রেয়ার হুইলের ডিং ডং আওয়াজ ভেসে আসছে। পুরো প্রকৃতি গম্ভীর ধ্যানে নিমগ্ন যেনো। পুণ্যার্থী আর পরিব্রাজকরা ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে উপরে আরো উপরের দিকে। কেউ কেউ ঘোড়ার পিঠে চড়ে উঠছে। ভারতের লাদাখ থেকে পরিবার নিয়ে তীর্থ করতে আসা এক আর্মি সদস্য বললেন, 'যারা ঘোড়ায় চড়ে উঠছে, তাদের কোনোই পুণ্য হবে না। পরিপূর্ণ পুণ্য লাভ করতে হলে পায়ে হেঁটে কষ্ট স্বীকার করে মন্দিরে যেতে হবে। তবেই ভগবান বুদ্ধের কৃপা মিলবে।'

কেউ কেউ ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে টাইগার নেস্টে উঠে

মিনিট পনেরো ট্র্যাকিংয়ের পর খুব তেষ্টা পেলো। জল খেলাম এক চুমুক। একটু উপরের দিকে পাইন গাছ থেকে কিশোরীর দীঘল চুলের মতো ঝুলছে শুকনো স্প্যানিশ মস। মাঝে মাঝেই শর্টকাট পথ আছে। তবে দুবার শর্টকাট দিয়ে উঠে বুঝলাম এ বড়ো কষ্টের এবং ঝুঁকিপূর্ণ পথ। একটু ঘোর পথই ভালো। পথে যেতে যেতে পুণ্যার্থীদের হাতে তৈরি বেলে পাথরের ছোট ছোট স্তুপ চোখে পড়লো। আরো কিছু দূর উঠে একটা জলের কল পাওয়া গেলো। ঘোড়াদেরও একই স্থান থেকে জল খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ঘোড়ারা এসে থামছে, জল খাচ্ছে আবার চলে যাচ্ছে। পা চলতে চাচ্ছিলো না। হৃদপিণ্ডে হাতুড়ি পেটা চলছিলো। কয়েকবার ভাবনা এলো নেমে যাই। আর পারছি না। চোখে পড়লো এক বৃদ্ধা তার মেয়ে ও নাতনি নিয়ে ঠুকঠুক করে উঠে যাচ্ছে। একটু লজ্জা পেলাম নিজের কাছে। ছোট বাচ্চারাও উঠছে বাবা-মায়ের সাথে। তাই ঠিক করলাম, যত পরিশ্রমই হোক উপরে উঠবোই। ঈয়েশির দেয়া লাঠিটা কি যে উপকারে এসেছে ব্যাখ্যা করে বোঝানো আমার অসাধ্য। দেড় ঘণ্টা চলে মাঝামাঝি উঠে এলাম। এখানে একটা চা-বিস্কিট খাওয়ার রেস্তরাঁ আছে ভূটানে সরকারের পর্যটন বিভাগের। ১২০ টাকায় বড়ো কাপে এক কাপ চা আর ৫টা বিস্কুট পাওয়া যায়। এখানে এসে সেই বৃদ্ধা ও তার পরিবারকে পেলাম। ওরা আমাকে ঘরে তৈরি শুকনো খাবার খেতে দিলো আদর করে। আমি বৃদ্ধার পিঠে হাত রেখে অনুভব করতে চেষ্টা করলাম মানুষের ইচ্ছা শক্তির জোর। উনি আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। জানলাম উনার বয়স ৭৮ বছর। বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম। ভারতের সিকিম থেকে এসেছেন পুণ্য লাভের জন্য।

৭৮ বয়সী বৃদ্ধা, তাঁর মেয়ে ও নাতনীরা

একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার চলতে শুরু করলাম। দূর থেকে ঝরনার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। আরো মিনিট পঞ্চাশেক উঠে পর্বতের চূড়া ছোঁয়া গেলো। এবার সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে যেতে হবে অনেকটা। খাড়া সিঁড়ি দেখেই পিলে চমকে যাওয়ার জোগাড়। পাথর কেটে কেটে পথ করে নেয়া হয়েছে। সাবধানে পা না ফেললে যা কিছু ঘটে যেতে পারে। নিচে তাকাতেই পারো ভ্যালির পুরোটা চোখের সামনে ভেসে উঠে। নিচে নামার সাথে সাথে ঠাণ্ডা বাড়তে থাকলো। ঝরনার আওয়াজও জোরালো হতে থাকলো। আরো নেমে যাওয়ার পর দেখা মিললো ২০০ ফুট উপর থেকে ধেয়ে নেমে আসা ঝর্ণার। জলের সাথে ঝরছে চাকা চাকা বরফের টুকরো। এখানে সেখানে জমে আছে বরফ। ছোট্ট একটা পুল পেরিয়ে সিঁড়ি ধরে উপরে উঠে গেলেই মিলবে টাইগার নেস্টের মন্দিরের প্রথম গেইট। ঘোরানো সিঁড়ি বেয়ে আরো উঠে গেলে প্রথম মন্দির। দর্শনার্থী ও পুণ্যার্থীরা এখানে এসে ব্যাগ জমা রেখে মন্দির দর্শন ও পুজো দেয়ার জন্য উপরে উঠে যান। দেখা মিললো কয়েকজন ভূটানি তরুণীর সাথে। ওরা ঐতিহ্যবাহী পোশাক কিরা পড়ছিলো মন্দিরে যাওয়ার পোশাক হিসেবে।

ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ভূটানি তরুণীরা 

মন্দির ঘুরতে হলে নিচের একদম যাত্রা পথেই ৫০০ টাকার টিকেট কিনতে হয় অভূটানিজদের। ধুপের গন্ধ, ঘণ্টার আওয়াজ আর মৃদু মন্ত্রোচ্চারণ সমেত একটা স্বর্গীয় আবহ বিরাজ করছে গুরু পদ্মসম্ভবের মন্দিরে। চোখ বন্ধ করে অনুভব করলাম এক শীতল অথচ অপার্থিব অনুভূতি। ভূটানে প্রচলিত আছে যে কেউ কেউ অলৌকিক কোনো কিছু অনুভব করে থাকেন বা দেখে থাকেন এই পবিত্র মন্দিরে এলে। এতো বিপদ সংকুল পথ হলেও কেউ আহত হয় না এই মন্দিরে আসা যাওয়ার পথে। এতোটাই বিশ্বাস লালন করে ভূটানিজ বুদ্ধরা। ভূটানের সর্বত্রই সংস্কৃতি ও ধর্মের প্রভাব প্রকট। কিন্তু বহির্বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত হওয়ার পর কতটা মৌলিকতা ধরে রাখতে পারবে এই শান্তিপ্রিয় দয়ালু মানুষগুলো জানি না। সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদের কাছে সব ছোট ছোট সংস্কৃতি পরাভূত হয়ে চলেছে। আট লাখের কিছু বেশি মানুষের এই পাথুরে দেশটি কতকাল লালন করতে পারবে ঘরের সংস্কৃতি কে জানে? ঘরে ঘরে টিভি ঢুকেছে। পাশের দেশের সকল চ্যানেল দেখা যায় টিভিতে। বাড়িতে দোকানে দেদারসে চলছে ওসব চ্যানেল।

এক অনাবিল আনন্দ নিয়ে ধীর পায়ে ফেরার পথ ধরলাম। ফেরার পথে দেখা হয়ে গেলো সেই বৃদ্ধার সাথে। আমি উনাকে শুভেচ্ছা জানালাম। উনি আবারো জড়িয়ে ধরলেন আমায়। আমার বিস্ময়কে আরো বাড়িয়ে দিতে দৃষ্টিগোচর হলো আরেক বৃদ্ধ দম্পতির সাথে। বৃদ্ধের বয়স ৮০ আর তার স্ত্রীর বয়স ৭৭ বছর। আমি উনাদের জানালাম তাদের দেখে বেশ সাহস পাচ্ছি। উনারা হেসে উঠে জানালেন অগুনতিবার এসেছেন এখানে। সামনে যতদিন বেঁচে আছেন বার বার আসবেন টাইগার নেস্টে মহান বুদ্ধের কৃপা লাভের জন্য।

বৃদ্ধের বয়স ৮০ আর তার স্ত্রীর বয়স ৭৭ বছর

যাইহোক, নেমে আসার পথটা এতোটা কষ্টসাধ্য ছিলো না। কিন্তু পায়ের পেশিগুলো আর মানছিলো না। খুব অত্যাচার করা হয়ে গেছে অনভ্যস্ত পেশিগুলোর উপর। নেমে আসার পথে যত প্রেয়ার হুইল পেয়েছি সব গুলোই ঘুরিয়ে দিয়ে এসেছি। যত প্রেয়ার হুইল ঘোরানো যায় ততই পুণ্য কামাই হয়। ক্ষতি কি কিছু পুণ্য যদি যোগ হয় নগদের খাতায়!

প্রেয়ার হুইল

লাদাখের সেই পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্যটি আসার পথে আমার সঙ্গী হলো। আমাকে আংকেল ডেকে হিন্দিতে অনেক কথা বলে গেলো। লাদাখে বরফ ঢাকা ওদের বাড়ি, স্কুল, স্ক্যাটিং করার গল্প সবই শোনালো নামতে নামতে। যদিও আমার হিন্দির জোর খুবই সামান্য, তারপরও প্রাণের ছোঁয়া থাকলে ভাষায় দেয়াল টপকে যাওয়া যায়। কথা বলতে বলতে কখন যে নেমে এলাম নিচে! লাদাখ শিশু আমার সাথে সাথে আসছিলো। ওকে বিদায়ী আলিঙ্গন করে আমি রওনা হয়ে গেলাম। পরবর্তী গন্তব্য চেলে লা পাস।

লাদাখ শিশুর সাথে

(চলবে…………)