আওয়ামী লীগের সরকার পরিচালনার যোগ্যতা নাই…!

শংকিত পদযাত্রা...
Published : 21 April 2012, 09:41 AM
Updated : 21 April 2012, 09:41 AM

আমার এই ছোট্ট জীবনের স্বল্প জ্ঞানের পরিধিতে এ পর্যন্ত যতটুকু জানি এবং শুনি তাতে বাংলা এবং বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথ পরিক্রমায় আ'লীগ নামক দলটির অবদান অনস্বীকার্য ভাবেই স্বীকার করতে অন্তত আমার কোন আপত্তি নেই। কারন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহামানের ৭ই মার্চের ভাষনটুকু শুনে এবং পরবর্তী বাংলার লড়াকু জনতার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পড়ে এ দলটির উপরোল্লিখিত অর্জনের বাহবা না দেওয়ার কোন কারন আছে বলে মনে করি না।

কিন্তু তারই ধারাবাহিকতায় আওয়ামীলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আমি মনে প্রাণে এতটাই দক্ষ আর বিচক্ষণ মনে করতাম যা অন্য দলের নেতা কর্মীদের সাথে তুলনা করতে বেশ বড় একটা ব্যাবধান তৈরি করে দিত। রাজনৈতিক মত এবং মতবাদ একেকটি দলের একেক রকম হবে এবং এক দলের নীতির সাথে আরেক দলের নীতিতে পার্থক্য থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদেও দেশের দলগুলির অনেক নীতিতে পার্থক্য থাকলেও ক্ষমতায় যাওয় এবং ক্ষমতায় টিকে থাকা কিংবা ক্ষমতায় থেকে যত দুর্নীতি এবং বিরোধী দলে থেকে যত চক্রান্ত করা এই বিষয়গুলিতে বেশ সাদৃশ্য আছে।

আমরা গত চারদলীয় জোট সরকারের শেষের দিকে এসে ক্ষমতায় ফিরে আসার ব্যাপারে তৎকালীন সরকারের দৃঢ় মনোবল দেখেছি এবং তা ভুলুন্ঠিত হতেও দেখেছি জনতার রোষানলে পরে। যদিও আমার এ কথার সাথে দ্বিমত করার মুনুষ কম নন তবুও বলব ক্ষমতায় থাকা আর না থাকার প্রধান নির্বাচক যদি জনতা হয় তবে ক্ষমতারোহনের পর যদি কোন দল অহংকারী কিংবা বিশাল ক্ষমতার অধীকারী মনে করতে থাকে তবে ইতিহাস বলে জনগন যথা সময়ে তার জবাব দিয়েছে এবং দিবে।

যাক সে সব কথা,আমি রাজনৈতিক বিশ্লেষক নই এবং তা করতে যাওয়া আদার ব্যাপারির জাহাজের খবর নেওয়ার মত হাস্যকর ব্যাক্তিতে পরিনত হওয়ার মত বোকাও আমি নই। আর তাই শিরোনামের সাথে সঙ্গতিপুর্ন কিছু বলতে চাই। কিছুদিন আগে আমাদের সাবেক রেল মন্ত্রী সুরঞ্জিত বাবুর এপিএসের অর্থ কেলেংকারী নিয়ে কত কলম-কাগজ আর কিবোর্ডের কিতে কিরকম চাপ গেছে তা আর বলতে। যাক বেশকিছু নাটকিয় বক্তব্য আর কল্পকাহীনির পরে মন্ত্রীর পদত্যাগ আর মাঝখান থেকে কালো বিড়ালের হিরো হয়ে যাওয়া। পরিশেষে কলংক যা কপালে জুটার কথা তার পুরোটাই জুটেছে সুরঞ্জিত বাবুর কপালে, তবে তার বেশ কিছু হিতাকাঙ্খি বেশ আফসোস করেই বলতে শুনেছি-বেচারা সুরঞ্জিত,দক্ষতার সহিত ঘোষ খেতেও শিখলোনা আর যা হবার তাই হয়েছে।

এক ঘটনার রেশ না কাটতেই আবার আরেক জাতীয় ঘটনা,আর তা হল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংঘঠনিক সম্পাদক এবং সাবেক এমপি ইলিয়াস চৌধুরীর গুম হওয়া। যে কোন হত্যা,গুম,অপহরন ও আইনশৃংখলার অবনতি নিয়ে আর সব জনতার সাথে নিজেও যেমন শংকিত সাথে এর বিরোধীতা করেই বলতে চাই ইলিয়াস চৌধুরী সহ সকল গুম বিচার বহির্ভূত হত্যার যথাযথ তদন্ত পুর্বক বিচার এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের জোর দাবী জানাই। কিন্তু ইলিয়াস চৌধুরীর গুম হওয়ার পর যে ভাবে সরকারকে দোষারোপ করা হচ্ছে বিরোধীদলের পক্ষ হতে,যে তাকে সরকারই পরিকল্পিত ভাবে গুম করেছে। এখানেও এসে দেখতে পাই একটি গুম করা হল কিন্তু গুম হওয়ার পর গাড়িটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পাওয়া গেলো এবং সেই গাড়িতেই গুমকারীদের বদন্যতায় ইলিয়াস সাহেবের বাড়িতে খবর/পরিচয় পেতে সুবিধার জন্য একটি মোবাইল ফোনও রেখে গেছেন দুস্কৃতিকারিরা। এখানে এসও সেই একই কথা,একটি গুম করা হল তাতেও দেখাতে পারলনা পেশাদারিত্ব।

যেখানে আওয়ামীলীগ অত্যান্ত বিচক্ষনতার সাথে দেশ স্বাধীনের জন্য মুক্তি যুদ্ধ করল এবং একটি স্বাধীন দেশে উপহার দেওয়ায় রাখল গুরুত্বপুর্ন ভুমিকা সেই আওয়ামীলীগের কাছ হতে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা-গুম এর মত জঘন্য নিন্দনিয় কার্যকলাপ কেমন জানি হিসাবে মিলাতে বড় কষ্ট হয়। তার পরও যদি ধরে নেই সরকারের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ইন্ধনে এইসব ঘটছে তবে অন্তত এটা বলতেই হবে এই কাজগুলিতেও অতীতের মত বিচক্ষনতার পরিচয় দেওয়াটা ছিল অত্যান্ত জরুরী।

তাই এইস বিষয়ে ব্যর্থতার কারনে বলতেই হয়,আ'লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার আর কতটাই যোগ্যতা রাখে অথবা সরকারকে বারবার বিব্রত করে যাওয়া চক্রটিকে সনাক্ত করে জনগনের সামনে হাজির করতে না পারার করনেও একই প্রশ্ন সামনে চলে আসে না কি ?

ছবি-নেট থেকে।