শিশুরা মিথ্যা কথা বলে কেন?

পড়ন্ত বিকাল
Published : 18 Jan 2011, 08:25 AM
Updated : 18 Jan 2011, 08:25 AM

"মিথ্যা বলা মহা পাপ" এই সত্যটা আমরা সবাই মানি। আমরা বড়রা কেন মিথ্যা বলছি সেটা আমরাই ভালো জানি। কিন্তু আমরা কি জানি আমাদের শিশু সন্তানরা কেন মিথ্যা কথা বলে? ওদেরতো মিথ্যা বলার দরকার নেই। আমরা বড়, আর তাই ছোটদের মিথ্যা কথা সহজে ধরে ফেলি। ধরে ফেলি বলে মনে করি আমরা না জানি কতো বড় মাইন্ড রিডার হয়ে গেছি। কিন্তু আসলে যে আমাদের জন্যই আমাদের শিশু সন্তানেরা মিথ্যা কথা বলে, সেটা কি আমরা জানি?

তো যা বলছিলাম। আমরা অনেকেই জানিনা যে আমাদের আচরনের কারনেই আমাদের শিশু সন্তানরা মিথ্যার আশ্রয় নিতে শুরু করে। শিশুরা ভুল করবেই (কোন বয়সে মানুষ ভুল করেনা বলেন?), একটু বেশীই ভুল করবে ওরা। কিন্তু আমরা বড়রা যখন ওদের ভুলের জন্য ওদেরকে শাস্তি দেই, ধমক দেই, হুংকার করি, চিৎকার করি ওরা ক্রমেক্রমে রপ্ত করতে শেখে যে ভিন্ন কোন পথের আশ্রয় নিতেই হবে। ভুলে গেলে চলবে না যে ও মানুষের বাচ্চা। আর তাই জীবনের নানা পরিস্থিতি থেকে নতুন পথ বের করবেই।

যেমন শিশুটি কিছু একটা ভেংগে ফেললো আর অমনি আমি হুংকার দিয়ে কথা বলা শুরু করে দিলাম। দেখবেন শিশুটি কেমন ভয় পেয়ে গেছে। আর ভয়ের চোটে সে মিথ্যার আশ্রয় নিতে শুরু করে দেয়। আরেক রকমের ঘটনাও ঘটে। শিশুটি হয়তো সত্য কথাই বললো কিন্তু তারপরও তাকে শাস্তি পেতে হলো। এখন আপনিই বলুন, সত্য বললে যদি শাস্তি পেতে হয় তবে কেন সে সত্য বলবে এরপর থেকে? দয়াকরে শিশুর ভুলে শিশুকে নির্মম শাসন করবেন না।

তাহলে দেখা যাচ্ছে আমরা বড়রাই ঘর থেকে একজন শিশুকে মিথ্যা কথা বলার অভ্যেস শুরু করিয়ে দিচ্ছি। আমরা বড়রাই দায়ী। বড়রা না বলে খুব স্পেসিফিক্‌ করে যদি বলি হয়তো আমরা মা-বাবারাই দায়ী।

আজ সে শিশু। তার সত্য কথাতে যদি তাকে শাস্তি পেতে হয় তবে যখন সে কৈশরে থাকবে, তখনও এমন অনেক ভুলই করবে যা আপনি জানতেও পারবেন না হয়তো। কিন্তু তখন আপনার মনে হতে পারে যে, ইস্‌ যদি আমার সন্তান সত্য শেয়ার বলতো তবে আমি সেই বিপদ থেকে বাঁচাতে পারতাম! আর যখন হয়তো সে তারুন্যে থাকবে তখন আরো কোন বড় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভুলে যান এই সব। আসুন আমরা আমাদের সন্তানের সাথে সত্য সম্পর্ক গড়ে তুলি। সে যেন পূর্ণ বিশ্বাস ও এই চর্চার মধ্য দিয়ে বড় হয় যে তার মা-বাবাকে সব সত্য বলা যায়। "পৃথিবীতে আর কেউ না বুঝুক আমার মা-বাবা আমার সত্য কথা বিশ্বাস করে" এটা যেন হয় তার চরম বিশ্বস। তবে এটা কিন্তু এক পাক্ষিক হবে না। আপনাকেও সত্যই বলতে হবে শিশুর সাথে। (এই বিষয়ে আরেকদিন আরো কথা বলবো। মানে যেখানে সত্য বললে আরো সমস্যা কিন্তু মিথ্যাও বলতে চাইছেন না।)