বিদায় বিজ্ঞানী স্টিভেন হকিং

নাভিদ ইবনে সাজিদ নির্জননাভিদ ইবনে সাজিদ নির্জন
Published : 15 March 2018, 07:35 PM
Updated : 15 March 2018, 07:35 PM

স্যার স্টিভেন হকিং সম্পর্কে কিছু বলার আগে প্রথমে আপনাদের দেখাতে চাই আমার শয়নকক্ষের দেয়াল।

দীর্ঘদিন আগে স্যার স্টিভেন হকিং এর  বেশ কিছু কথা পোস্টার আকারে দেয়ালে লাগিয়ে রেখেছি।

My expectations were reduced to zero when I was 21. Everything since then has been a bonus [The Science of Second-Guessing (New York Times Magazine Interview, December 12, 2004)] – এই কথাটা আমার এতোটাই ভালো লেগেছিলো যে প্রতিদিন কথাটা একবার মনে করার জন্য ঘরের দেয়ালে লাগিয়েছি। যখন হতাশ হই এই কথাটা মনে মনে উচ্চারণ করি। শূন্য থেকে একটা মানুষ কীভাবে মহাশূন্য ছাড়িয়ে যায়। ২১ বছর বয়সে স্যার স্টিভেন হকিং এর শরীরে Motor Neurone Disease নামক মারাত্বক রোগ চিহ্নিত হলে ডাক্তার বলেছিলেন তিনি বাঁচবেন না, অথচ ৭৬ বছর পর্যন্ত তিনি বাঁচলেন। তার মানে কি এই যে, সব আলো নিভে গেলেও জীবনে কখনো হতাশ হতে নেই।


However difficult life may seem, there is always something you can do and succeed at – জীবন দেখতে যত কঠিনই হোক না কেন, কর্মের মাধ্যমে সফল হওয়ার জন্য কিছু সুযোগ সবসময় থাকে। যারা জিপিএ-৫ পায়নি তারা জীবনে সফল হবে না বিষয়টা এমন নয়। জিপিএ-৫ পায়নি বলে সফল হওয়ার জন্য করার কিছুই নেই, বিষয়টা এমনও নয়। প্রতিটি মানুষের জন্য নিজ অবস্থান থেকে সফল হবার অসংখ্য দরজা খোলা আছে এবং এই দরজাগুলো সবসময়ই খোলা থাকে।

বছর কয়েক আগে, সম্ভত ২০১৪ সালে স্টিভেন হকিং এবং তার স্ত্রী জেন হকিং এর গল্প নিয়ে একটা সিনেমা দেখেছিলাম 'The Theory of Everything', প্রত্যেকের এই সিনেমাটা একবার দেখা উচিত।

https://www.youtube.com/watch?v=Salz7uGp72c

দুঃখভারাক্রান্ত মনে চিরসত্য কথাটা মেনে নিতে হচ্ছে, কৃষ্ণ গহ্বর এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়ে কাজের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত ব্রিটিশ বিজ্ঞানী স্টিভেন হকিং (৮ জানুয়ারি, ১৯৪২ – ১৪ মার্চ ২০১৮) ৭৬ বছর বয়সে মারা গেছেন। মি. হকিং এর তিন সন্তান লুসি, রবার্ট এবং টিম বলেছেন 'আমাদের বাবা আচমকাই আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি ছিলেন মহান বিজ্ঞানী এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন।'

স্টিভেন হকিং এর কিছু ছবি তুলে ধরা হলো:


ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণারত স্যার স্টিভেন হকিং


স্বাধীনতা পুরস্কার গ্রহণ করার আগে হোয়াইট হাউসে বারাক ওবামার সাথে স্যার স্টিভেন হকিংয়ের সাক্ষাৎ, পিছনে আছেন নোবেল বিজয়ী ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস।


জিরো গ্রাভিটিতে স্যার স্টিভেন হকিং


*ছবিগুলো অন্তর্জাল হতে সংগৃহিত
১৪ মার্চ, আমরা একজন অসাধারণ মানুষকে হারালাম, কাজের মাধ্যমে তিনি আমাদের মাঝে বহু বছর বেঁচে থাকবেন।

স্যার স্টিভেন হকিং এর লেখা কিছু বই তুলে ধরা হলো:

অন্য সব বইয়ের পাশাপাশি স্যার স্টিভেন হকিং তার বিখ্যাত বই 'এ ব্রিফ স্টোরি অব টাইম' এর জন্য অমর হয়ে থাকবেন। বুড়ো বয়সে একদিন হয়তো আমি নিজেই নতুন দিনের শিশুদের গল্প শোনাবো, 'স্টিভেন হকিং যখন বেঁচে ছিলেন, সেই সময়ে আমি জন্মেছি। আমি স্টিভেন হকিং এর সময়কার মানুষ!'

মহাজ্ঞানী এই মানুষটি থাকুক হৃদয়ের গভীরে। তাঁর আত্মার শান্তি প্রার্থনা করছি।