২৫ মার্চ সারা দেশে এক মিনিট ‘ব্ল্যাক-আউট’ কর্মসূচি

নাভিদ ইবনে সাজিদ নির্জননাভিদ ইবনে সাজিদ নির্জন
Published : 18 March 2018, 07:58 PM
Updated : 18 March 2018, 07:58 PM

গণহত্যা দিবসের রাতে আগামি ২৫ মার্চ সারা দেশ এক মিনিট 'ব্ল্যাক-আউট' কর্মসূচি পালন করা হবে। গণহত্যা দিবস ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ১১ মার্চ রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক সমন্বয় সভার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন জানান, ‍‌"২৫ মার্চ রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত জরুরি স্থাপনা ছাড়া সব জায়গায় এই কর্মসূচি পালন করা হবে।" তিনি আরো জানান, "কেউ কেন্দ্রীয়ভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে দেবে না। নিজ নিজ উদ্যোগে বাতি নিভিয়ে এক মিনিট এই প্রতীকী কর্মসূচিতে যোগ দিতে হবে।" [তথ্য সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম]

১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের পূর্ব পরিকল্পনা আনুযায়ী আন্দোলনরত বাঙালিদের চিরতরে নিস্তব্ধ করতে সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আধুনিক শক্তিশালী অস্ত্র ব্যবহার করে ইতিহাসের একটি নিকৃষ্টতম গণহত্যা চালায়। যুদ্ধের সময় আমাদের জন্ম হয়নি, তবুও বাংলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের থেকে ২৫শে মার্চের গল্প শুনে গা শিউড়ে ওঠে। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা এতোটাই নৃশংসভাবে বাংলার নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে, ভাবতেই ভয় হয়, কতটা ভয়ঙ্কর অন্ধকার কালো ছিলো সেই রাত।

২৫শে মার্চের এই রাত্রির প্রতি শোক এবং শ্রদ্ধা নিবেদনে সম্ভবত গতবছর জাতীয় সংসদে ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। ২৫শে মার্চকে 'ক' শ্রেণিভুক্ত 'জাতীয় গণহত্যা দিবস' হিসেবে সারা দেশে পালন করতে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

২৫ মার্চ কালোরাতের বিরল ভিডিওচিত্র:

https://www.youtube.com/watch?time_continue=2&v=Ee9BWhaWRb4

২৫শে মার্চের ভয়াল গণহত্যার রাত সোয়া ১টায় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে আক্রমণ চালানোর উদ্দেশ্যে এগিয়ে যায়। গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে। বাঙালি জাতি যেন কোনোদিনই স্বাধীনতা অর্জন করতে না পরে এই পরিকল্পনায় তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। যদিও গ্রেফতার হওয়ার আগেই ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর অর্থাত্ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তত্কালীন ইপিয়ারের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন।

"এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক।"

অনেক রক্ত আর ত্যাগ আর বিভীষিকায় অন্ধকার রাত্রিগুলোর বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আসুন, আমরা বাংলার স্বাধীনতার মহান ইতিহাসকে হৃদয়ে রেখে, কালরাত্রির মতো গভীর শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সোনার বাংলা গড়তে অবদান রাখি। দেশটা হোক আলোকিত। ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্রতা মুক্ত। আসুন, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই মিলে একটি সুখী বাংলাদেশ গড়ি।