একটি সবুজ পাসপোর্ট

নাঈমুজ্জামান
Published : 26 May 2016, 06:27 AM
Updated : 26 May 2016, 06:27 AM

১ম অংশ

পাসপোর্ট বানাতে গেছিলাম যশোরে, অনলাইন সব পূরণ করে প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে গেছি পাসপোর্ট অফিসে। প্রথম দিন গেছি ১২.৫০ দিকে কিন্তু হল না কারন তারা ১ টার পর জমা নেয়না অফিস ৫ টা পর্যন্ত। অথচ তিনি থাকেন না ১ টার পর। বাহ! ২য় দিন তারা ২ বার ভুল ধরল আমার ২বার ঠিক করতে করতে বিকাল ৪টা। এরপর উপপরিচালক বক্তব্য, এখন সার্ভার বন্ধ, অফিস ৫টা পর্যন্ত। তবে ২য় দিন একবার তারা আমার কাগজ উপর আঠা দিয়ে ব্যাংক স্লিপ লাগিয়ে দিয়েছিল এইজন্য বিল ১০ টাকা, ভুল আমার যেহেতু আমি লাগাই নি তাই দিলাম টাকা সাইফুল মিয়া কে সে একজন আনসার সদস্য । ৩য় দিন আমি ঘুম থেকে উঠার আগে আব্বুই পাসপোর্ট অফিস এ চলে গেছেন যথারীতি ফোন বাবা তুমি তারাতারি চলে আস ছবি তোলা হবে। বান্দা হাজির বাবা তুমি কি টাকা দিছে হা বললাম কেন যেহেতু আমরা উপপরিচালক এর কাছে গেলে হচ্ছে না তাই তাকে ৫০ টাকা দিয়ে পাঠালাম। সেই সাইফুল। ওকে কাজ শেষ এবার, গেলাম ছবি তুলতে সেটাও শেষ। ঢাকা এসে শুনি আব্বু ১৫০০ টাকা প্রদান করছে।

২য় অংশ

শৈশব থেকেই আমার আব্বুর অফিস এ যাতায়াত বেশি এবং অফিস কাজ কর্ম কি হবে না হবে সব নিয়ে একটু বেশি গল্প আমার কারন আমার বেশি কথা বলা চুপ করে বসে থাকতে পারি না। একবার আব্বু কে বললাম আব্বু তুমি সারাদিন এত অফিস এ যাও তোমারে কি বেশি টাকা দেয় না হলে তুমি এত কাজ কর টাকা নিতে পার না তাইলে অনেক টাকা হবে আর তুমি এত এত টাকা দিবা আমারে আর আমি খাব। সঙ্গে সঙ্গে আম্মুরে নাইমের মা শোন তোমার ছেলে ত মানুষ হবে না তার পড়ালেখা বন্ধ করে দেও। শুনলাম কিছুক্ষণ তারপর এত পড়া দিয়ে আব্বু রাতে পড়া নিবে বলছে। আম্মু কিছুক্ষণ বুঝাইল বুইজলাম ঠিক না। রাতে আর কি মাথা ত হার্ড-ডিস্ক না পড়া পারলাম না সুদে আসলে মার। আসল উদ্দেশ্য যখন মার তখন কি আর ঠেকানও যায়।

সরকার আব্বু দেয় ৩০০ টাকা পরাশুনা বাবদ খরচ আমার যায় চার মাসে ১ লক্ষ ৩০ হাজার কম বেশি কারন সরকার শিক্ষা কে বাণিজ্যে রুপান্তর করে এখন মাঝে মাঝে ভ্যাট চিন্তা ভাবনা করে। তার উপর এই দেশে চলাচলে আমার দিতে হয় অঘোষিত ভ্যাট না দিলে উপায় নাই। আমরা ত আটকা তার উপর সরকার যে আকারে প্রতি বছর ভ্যাট চিন্তা করে মাঠে নেবে নিজেদের তল্পি গোছাই সেটাত কথাই নেই।

৩য় অংশ

আমার এমন কোন দিন কাটে না বাবা-মায়ের সাথে কথা না বলে কিন্তু আজ একবারও ফোন ধরিনি। আমি সৎ না এটা আমার কর্ম নয় কিন্তু যে জিনিসটা আমার পরিচয় বহন করে আমার দেশের বাইরে সে জিনিসটা যদি অসৎ উপায়েই করা হয় তাহলে অন্য দেশে গিয়ে আমার দেশের কথা আমি কি ভাববো?

কিছু লোক আছে যারা দেশের বাইরে থেকে প্রচুর স্ট্যাটাস দেয় বছরে একবার আসে দেশের প্রতি তাদের অগাধ ভালবাসা বুদ্ধিজীবী কিন্তু তারা জানে না এদেশের মানুষজন কিভাবে দিন কাটায় হয়ত ধারনা আছে তাদের কিন্তু সত্যিকার অনুভূতি নাই। লেকচার সর্বদা আনন্দদায়ক কিন্তু বাস্তবায়নকারিই জানে কিভাবে কতটুকু তেল তার ঝরাতে হয় অন্তত এই দেশে।