ফলের রাজা আমের ১৭টি অসাধারণ গুনাগুণ

মীর নিয়াজ মোর্শেদ
Published : 12 June 2015, 08:56 AM
Updated : 12 June 2015, 08:56 AM

ফলের রাজা আম।আসুন আমরা জেনে নেই ফলের রাজা আমের ১৭ টি অসাধারন গুনাবলী।

পূষ্টি তথ্য

এককাপ আমে (২২৫ গ্রাম) আপনি পাবেন ১০৫ ক্যালরি।এছাড়াও পাবেন ৭৫ শতাংশ এ্যান্টিআক্সিডেন্ট সম্বৃদ্ধ ও রোগ প্রতিরোধী ভিটামিন সি এবং ২৫ শতাংশ ভিটামিন এ।১১ শতাংশ ভিটামিন বি সিক্স ও ভিটামিন বি যা আপনার মস্তিস্কে হরমোন বৃদ্ধি করবে এবং হৃদরোগ কমাতে সহায়তা করে। আছে ৯ শতাংশ প্রবায়োটিক ফাইবার। আরও আছে ৭ শতাংশ কপার,যা রক্তে লোহিত কনিকার উৎপাদন বাড়ায় এবং আমে থাকা পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম আমাদের শরীরের জন্য উপকারী।

১.ক্যানসার প্রতিরোধী

ক্যুয়েরসেটিন,আইসোক্যুয়েরসেটিন,অ্যসট্রাগালিন,ফিসেটিন,গ্যালিক এসিড ও মিথাইলগ্যালেট সম্বৃদ্ধ এ্যান্টিআক্সিডেন্ট থাকার কারনে আম ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম।বিশেষত কোলন,ব্রেস্ট ক্যানসা্‌র,লিউকেমিয়া ও প্রস্টেট ক্যানসারের বিরুদ্ধে আম বেশ কার্যকর।

২.কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে

আমে আছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি,পেকটি্‌ন ও ফাইবার বা আশঁ। এই উপাদানগুলো আমাদের রক্তে কোলস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া পটাশিয়াম আমাদের হৃদপিন্ডের স্পন্ধন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে সহায়ক।

৩.ত্বক পরিষ্কারক

আম ত্বক পরিষ্কারেও আপনি ব্যবহার করতে পারেন।মুখে ব্রনের কারনে সৃষ্টি গর্ত ঠিক করতে পাকাঁ আম কার্যকর।আম পাতলা করে কেটে ১৫/২০ মিনিট মুখে মেখে ধুয়ে ফেলুন।নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি পাবে এবং মুখের গর্ত ভরাটে সহায়তা করবে।

৪.দেহে ক্ষারীয় উপাদানের সরবরাহ

আমে আছে টারটারিক এসিড ও ম্যালিক এসিড।এই উপাদান সমূহ প্রাথমিক ভাবে আমাদের দেহে ক্ষারের পরিমান নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।

৫.আম ওজন কমাতে সাহায্য করে

বিভিন্ন উপকারী ভিটামিন ও অন্যান্য পূষ্টিগুন সম্বৃদ্ধ আম আমাদের ওজন কমাতেও সহায়তা করে।উচ্চ আশঁ সম্বৃদ্ধ আম হজম শক্তি বাড়ায় এবং অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়িয়ে ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে।

৬.ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রন

আমের পাতা হালকা সিদ্ধ করে সারারাত রেখে দিয়ে সকালে সেই পানি পান করলে ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।আম লো গ্লাইসেমিক সম্বৃদ্ধ (৪১-৬০),তাই ডায়বেটিক রোগীরা আম খেলেও খুব বেশী ব্লাড সুগার বাড়ার আশংকা কম।

৭. যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা

পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা ও সেক্স হরমোন বৃদ্ধির জন্য আম কে লাভ ফ্রুট হিসেবেও ডাকা হয়!

৮.চোখের যত্নে আম

আমে অনেক ভিটামিন এ আছে এবং তা আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভাল করে।এছাড়াও আম রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।

৯.হজমে সহায়ক

আমের উচ্চগুন সম্পন্ন ভিটামিন ও প্রি-বায়োটিক ডায়েটারি ফাইবার আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।

১০.হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে

প্রচন্ড গরমে আমের রস আপনার দেহ কে দ্রুত ঠান্ডা করে এবং হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা করে।

১১. দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

আমের ভেতরে থাকা আসাধারন পূষ্টিগুন সম্পন্ন ভিটামিন সমূহ এবং এ্যান্টিআক্সিডেন্ট আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

১২.বডি স্ক্রাব

পাকা আম,মধু এবং দুধ ব্যবহার করে পেষ্ট তৈরি করুন।পেষ্টটি স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহৃত করলে ত্বক নমনীয় ও কোমল হবে ।

১৩.স্মৃতি শক্তি এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করে

আমে আছে গ্লুটামিন এসিড যা আমাদের স্মৃতি শক্তি এবং মনোযোগ বৃদ্ধি করে।ছোট শিশুদের কে নিয়মিত আম খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

১৪.দেহে উচ্চ আয়রন বা লৌহ সরবরাহ করে

মহিলাদের জন্য প্রয়োজনীয় আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের যোগান দেয় আম।এজন্যই আম এনিমিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

১৫.কিডনী পাথরের বিরুদ্ধে কার্যকর

চাইনিজ সনাতন চিকিৎসায় আমকে কিডনী পাথর দূরীকরনে ব্যবহার করা হয়।আমের টক-মিষ্টি স্বাদ এবং দেহকে ঠান্ডা রাখার ক্ষমতার কারনে এটা কিডনীতে পাথর হওয়া রোধ করে।

১৬.সুষম নাস্তা

আম একটি পূষ্টিকর সুষম ফল।নাস্তায় অস্বাস্হ্যকর ডুবো তেলে ভাজা খাবার বাদ দিয়ে নিয়মিত আম খান।মজা পাবেন ষোল আনা আর স্বাস্হ্যের জন্য অত্যন্ত আর্দশ খাবার।

১৭.পাকস্হলির টনিক

আমের পাতা পাকস্হলির টনিক হিসেবে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।রাতে ১০/১৫ টি আম পাতা কুসুম গরম পানিতে সিদ্ধ করে সারারাত রেখে দিন।সকালে মিশ্রনটি ছেঁকে নিয়মিত পান করুন, পাকস্হলির টনিক হিসেবে কাজ করবে।

তথ্যসূত্র-ওয়েবসাইট