ব্ল্যাক ফ্রাইডে’তে বেগম খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলন

আকরাম ইবনে বাশার নিহান
Published : 14 March 2015, 04:52 AM
Updated : 14 March 2015, 04:52 AM

দুই মাসের ও অধিক সময় গুলশান কার্যালয়ে অবস্থান করার পর খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সামনে ২য় বারের মত উপস্থিত । সংবাদ সম্মেলনে বেগম খালেদা জিয়া "তিন দফা প্রস্তাবনা" সরকারের উদ্দেশ্যে পেশ করেন ।

১. দলের নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি এবং গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা। এ ছাড়া পুলিশ ও যৌথবাহিনীর হয়রানি বন্ধ এবং নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার ও তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি।
২. সভা-সমাবেশ ও মিছিলসহ সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর থেকে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার।
৩. সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য দ্রুত সংলাপের আয়োজন।

এবার আসা যাক মূল কথায়। একটা রাজনৈতিক আন্দেলনের জন্য যে জিনিসগুলি লাগে তার মধ্যে অন্যতম হল ১.কর্মী বাহিনি । ২.আন্দোলনের মন মানসিকতা । ৩.চেইন অফ কমান্ড । ৪.জনগনকে তাদের দাবির পক্ষে আনা । ৫.টাকা । ইত্যাদি ইত্যাদি……..
শেখ মুজিব কোথায় যেন বলেছিলেন আন্দোলনের জন্য নিঃস্বার্থ কর্মী হতে হয়। বিএনপির কি সত্যি নিঃর্স্বাথ কর্মী আছে ? প্রশ্নটা ফেলে দেবার মতই তবে আসলেই প্রশ্নটা বিএনপির নেতাদের কাছে করা থাকলো আমার শেখ মুজিব আন্দোলন সর্ম্পকে আরো বলেছেন…
আন্দোলন গাছের ফল নয়।
আন্দোলন মুখ দিয়ে বললেই করা যায় না।
আন্দোলনের জন্য জনমত সৃষ্টি করতে হয়।
আন্দোলনের জন্য ত্যাগী মানুষ থাকা দরকার।
আন্দোলনের জন্য নিঃস্বার্থ কর্মী হতে হয়।
আন্দোলনের জন্য আদর্শ থাকতে হয়।

আর সর্বোপরি, জনগণের সংঘবদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ সমর্থন থাকা দরকার !!

বিএনপি নেতাদের কি আসলেই আন্দোলনের মন মানসিকতা আছে যথেষ্ট সন্দেহ হয় তারা তো টাকার বালিশে টাকার তোষকে ঘুমিয়ে অভ্যাস । তারা কেন নামবে পুলিশের সাথে হাউ কাউ করার জন্য পুলিশের হাতে মার খাবার জন্য তাদের কোন প্রয়জনই নাই । আমি বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা কর্মী মানুষকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ভাই আপনারা হরতাল হরতাল দিলেন কিন্তু আপনারা মাঠে নাই কেন ??? আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের ছেলেরা সকাল থেকে রোদের ভেতর ঠায় রাস্তার ভেতর দাড়ায় থাকে হরতাল বিরোধী অবস্থান নিয়ে । তারা জোরালো কন্ঠে বলে আমরা রাস্তায় নামতে পারি না পুলিশলীগের জন্য । পুলিশ আমাদের নামতে দেয় না । আমি অবাক হয়ে প্রশ্ন করি আওয়ামীলীগ কি এর আগে আন্দোলন করে নি ?  আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কি রাস্তায় ফেলে কুকুরের মত পিটানো হয় নাই ??? । তারা রাস্তায় কি পুলিশের ভয়ে তখন নামেন নাই ???
তারা আবার ও বলে তখন তো গুলি করা হতো না পিটানো হয় আওয়ামীলীগ তো সরাসরি গুলি করে। আওয়ামী লীগের নির্দেশে রাস্তায় পুলিশ বিএনপির মিছিলে ১টা কর্মীকে গুলি করে মারলো ২টা কর্মীকে মারলো আপনি কি মনে করেছেন ৩ নাম্বার কর্মীটাকে যখন পুলিশ গুলি করে মারবে তখন জনগন চুপ করে থাকবে?  বিএনপির উদ্দেশ্যে বলতে চাই একটা রাজনৈতিক আন্দোলনে কখনো সাধারন মানুষ অংশ নেয় না। উদাহরন দেই। আমি-আপনি যে মামার দোকানে বসে চা খাই সে মামা কি কোন দিন যাবে বিএনপি বা আওয়ামী লীগের মিছিলে? সহজ কথায় না।

রাজনৈতিক আন্দোলন সব সময় রাজনৈতিক কর্মীদের করতে হয় এবং অবশ্যই সেগুলি ত্যাগী কর্মী হতে হবে । ২০১৪ সালে বিএনপির ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি হবার পর অনেক ছাত্রদল নেতা আন্দোলন করলো বেশ কিছু দিন । আমি এক ছাত্রদল নেতাকে জিজ্ঞেস করলাম কাহিনি কি ভাই আপনারা আন্দোলন করতেছেন কেন ? কমিটি আপনাদের কইরা দিছে উপর থেকে উপর এর কথা মানেন না কেন ? সে উত্তরে বললো ত্যাগীরা তো এই কমিটিতে স্থান পায় নাই যারা স্থান পাইছে তাদের তো আমরা নেতা হিসেবে মানি না,কেন মানি না ? জিজ্ঞেস করলে বলি এই বারের কমিটিতে যে সাধারন সম্পাধক হইছে বেগম জিয়া তাকে কোন এক সমাবেশের পর ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ঢাকার বাইরে থেকে যে কর্মী গুলি এসেছে তাদের ব্যাবস্থা করো সে সুন্দর কইরা মোবাইল অফ কইরা বাসায় গিয়া ঘুমায় রইছে এই নেতা আমরা কেমনে মানি ? । আর এই নেতা কিনা কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাধক নিধারন হয় ।এই বিএনপির নেতৃত্ব, সব জায়গায় র্স্বাথ,এই রকম নেতাদের দিয়ে চেইন অফ কমান্ড কিভাবে ধরে রাখা যায় ? ছাত্রদল থেকে বিএনপি মূল দল সব জায়গায় ভেঙে পরেছে চেইন অফ কমান্ড বেশ কিছু দিন আগে পত্রিকায় দেখেছিলাম বিএনপি নেতাদের কাছে বেগম জিয়া কথা দিয়েছেন এবার তারা আন্দোলন করবেন । বেগম জিয়া কথা দেন তাদের নেতাদের ? তার মানে কি তিনি আগেই বুঝেছিলেন ? তারা কিছু করতে পারবে না শুধু মাত্র নেতাদের মন রক্ষা করার জন্য এই আন্দোলন ? বেগম জিয়া নেতাদের মন রক্ষা করার জন্য এই জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনে এতো গুলি সাধারন মানুষ মারা গেল? যাদের হয় তো অনেকে রাজনীতির সাথে কোন সর্ম্পক নেই ।

রাজনৈতিক আন্দোলনে যদি কোন মানুষ মারা যায় তাহলে সে হবে রাজনৈতিক কমী ২ পক্ষের সংঘর্ষে সে মারা যাবে । সাধারন মানুষ কেন মারা যাবে ? তারা কি সাধারন মানুষ মেরে তাদের দাবির পক্ষে সাধারন মানুষকে আনতে চাচ্ছে? যেটা হাস্যকর একটা ব্যাপার ।বিএনপির অবস্থা হচ্ছে সেই খরগোশটার মত যে কিনা ঝোপের মাঝে মাথা লুকিয়ে ভাবে আমাকে কেউ দেখছে না আমাকে কেউ দেখছে না । মানুষ সব থেকে সব বুঝে বাঙালী এতো বোকা না বার বার বিএনপি প্রমান করতে চাচ্ছে ছাত্রলীগ যুবলীগ এই বোমা গুলি মেরে সাধঅরন মানুষ গুলিকে মারছে, আচ্ছা তারা যদি মেরে ও থাকে তাদের কে বোমা মেরে এক প্যাকেট বনসনের টাকা পাবার সুযোগ কে করে দিচ্ছে? অবশ্যেই খালেদা জিয়া তিনি যদি নেতাদের মন রক্ষা করার আন্দোলন না দিতেন তাহলে কি তারা এক প্যাকেট বেনসনের টাকার বদলে একটা পেট্রল বোমা মারতে পারতো? উত্তর না। এই উত্তর রাস্তার মোড়ের ভিক্ষুক ও দিতে পারবে। এইভাবে মানুষকে নিজেদের দিকে টানা অসম্ভব। আওয়ামী লীগ যেমন একটা নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তাতে অনেক সাধারন মানুষই তাদের উপর কিছুটা ক্ষোভ আছে। কিন্তু বিএনপি যেভাবে সাধারন মানুষ মারছে তাতে করে তারা বিএনপির দিকেও যেতে পারছে না । তারা কিভাবে যাবে খুনি একটা দলের কাছে?

সেদিন বাসে উঠছি হেলপার বলতেছে মামা জানালা গুলি লাগায় দেন বোমা মারতে পারে । তাদের আত্মা সব সময় ধক ধক করে কখন যেন কি হয় কিন্তু পেটের দায়ে বের হয় । এই ভাবে মানুষকে নিজেদের পক্ষে টানা যায় না । টাকার খেলা ও শেষ যেই টাকা কর্মীদের জন্য ছিল সেই টাকা ও তো মনে হয় নেতারা মেরে দিছে । কে আসবে আন্দোলনে ? টাকার কর্মীতে তো আন্দোলন চলতো টাকা ও নাই টাকার কর্মী ও নাই এখন কি করার ? সাধারন মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলন ? ভুলে যান সে কথা আবার ও বলছি রাজনৈতিক আন্দোলনে কখনো সাধারন মানুষ আসে না এসে ছিল একবারই ৭১ এ কোন রাজনৈতিক আন্দোলনে কোন রাজনৈতিক দলের ৫/৭ হাজার কর্মী নেতা এক সাথে হয় আর সাধারন মানুষের ঐক্যমত সাথে তাহলেই সেই উদ্দেশ্য সফল হয় । বিএনপিকে আবার ও বলছি জ্বালাও পোড়াও আর জামায়েতকে বাদ দিয়ে দল গোছান ঠিক মত । স্বার্থবাদীদের দিয়ে দল অথবা দেশের কখনো উন্নতি হয় না হওয়া সম্ভব ও না ।