
ভূমিকাঃ
ফেসবুক, ব্লগ, কিংবা বিভিন্ন টিভি টকশোতে একটি অদ্ভুত প্রোপাগান্ডা ইদানীং জামাতী ইসলামী নেতা, কর্মী ও ব্লগারদের মাধ্যমে খুব বেশী মাত্রায় প্রকাশিত হচ্ছে। সেটি হচ্ছে, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন আমীর ও বিশিষ্ট রাজাকার গোলাম আজমের ব্যাপারে নাকি বাংলাদেশের হাইকোর্ট ১৯৯৩ সালেই বলে দিয়েছে যে গোলাম আজম একাত্তরে কোনো স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডে যুক্ত ছিলো না এবং এর কোনো প্রমাণই নাকি হাইকোর্ট পায় নি। হাইকোর্টকে সংযুক্ত করে উপরের কথাগুলো মূলত জামাতের এখন একটি বড় অস্ত্র হিসেবে বিভিন্ন ব্লগ, ফেসবুক, জামাতের পত্রিকা। ইউটিউব, টুইটার এবং আরো নানান ধরনের প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক আকারে প্রকাশিত হচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডাটি এক দিক থেকে আতংকের, অন্য দিক থেকে বিষ্ময়ের আর বিরক্তির।
আতংকের এই কারনে যে, একটি মিথ্যে ঘটনা খুবই চমৎকার করে সাজিয়ে, গুছিয়ে মানুষের সামনে প্রকাশ করে যুদ্ধাপরাধের বিচারকালীন সময়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা এবং এই ব্যাপারে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না দেখে। বিষ্ময়কর এই কারনে যে, এই প্রোপাগান্ডা চালানোর সময় জামাতের নেতা কর্মীরা কি একবারও ভেবে দেখেনি যে এই প্রোপাগান্ডাটি অচিরেই মানুষের সামনে ধরা খেয়ে যাবে এবং এই অতি চরম আকারের এই মিথ্যাচার জানতে পেরে সেই বিভ্রান্ত মানুষসহ কোটি জনতা তাদের ধিক্কার দিবে? আর বিরিক্তিকর হচ্ছে এই কারনে যে, কয়দিন পর পর জামাতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা যতসব হাস্যকর প্রোপাগান্ডা বাজারে ছাড়ে আর তারা এই বিশ্বাস নিয়ে বসে থাকে যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বুঝি এরি মধ্যে দিয়ে বন্ধ হয়ে গেলো, এর এইসব হাস্যকর প্রোপাগান্ডা দেখে আমার মত তৃতীয় শ্রেণীর একজন আইনের ছাত্রও লজ্জায় মুখ লুকায় আর স্বাভাবিক ভাবেই আইনের এই পরিমান ভুল ব্যখ্যা দেখে বিরক্ত হয়।
পিছু ফিরে দেখাঃ
আপনারা সকলেই জেনে থাকবেন যে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় গোলাম আজমের ঘৃণ্য ভূমিকার কথা। যারা এখনও জানেন না, তারা এই লিঙ্কে গিয়ে গোলাম আজমের সকল কৃতকর্মের কথা জেনে নিতে পারবেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা যখন বাংলাদেশের মাটিতে গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ, যুদ্ধাপরাধ সহ আরো নানাবিধ অপরাধ সংগঠিত করে তখন এই গোলাম আজম ছিলো মূলত পাকিস্তানী হানাদারদের একজন সহযোগী এবং এদেশীয় দালালদের প্রধান। ১৬ ই ডিসেম্বর যখন পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ৯০ হাজার সৈন্য সহ আমাদের কাছে আত্নসমর্পণ করে ঠিক তার ২৪ দিন আগে অর্থ্যাৎ ২২ শে নভেম্বর গোলাম আজম লাহোরে জামাতে ইসলামীর সেন্ট্রাল কমিটির সভাতে যোগ দেয়ার নাম করে মূলত বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যায়। কেননা ধূর্ত গোলাম বুঝতে পেরেছিলো যে তাদের পেয়ারা পাকিস্তানী বাহিনী ও গোলামের রাজাকার, আলবদর, আল শামস, শান্তি কমিটির পতন সুনিশ্চিত। ১৯৭১ সালের সেই যে ২২ শে নভেম্বর গোলাম আজম বাংলাদেশ থেকে পালালো এবং এরপর গোলাম আযম পাকিস্তান, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত,লন্ডন সহ বিভিন্ন দেশে পাকিস্তানী পাসপোর্ট ব্যাবহার করে যাতায়াত করতে থাকে ও বসবাস করে বিভিন্ন মেয়াদ পর্যন্ত এবং ক্রমাগত চালাতে থাকে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারনা। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারী যে দালাল আইনটি বাংলাদেশে পাশ হয় এবং এই আইনটির মাধ্যমে যেসব দালালদের গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়েছিলো তার ১১ নাম্বারেই ছিলো গোলাম আজমের নাম।এই নোটিশ অনুযায়ী ২২ শে ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ পর্যন্ত যারা দালাল আইনের ট্রাইবুনালে হাজির হতে ব্যার্থ হয়েছিলো তাদেরকে ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ নাগরিকত্ব্ব আদেশের ৩ ধারা অনুযায়ী ১৯৭৩ সালের ১৮ই এপ্রিল একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে ৩৯ জনের নাগরিকত্ব্ব বাতিল করে দেয়া হয়। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলো গোলাম আজম। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫-ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের নৃশংস হত্যাকান্ডের পর ক্ষমতার পট পরিবর্তিত হয়, পরিবর্তিত হয় বাংলাদেশের রাজনীতি। সামরিক শাসক জেনারেল জিয়া ১৯৭৬ সালের ১৭ জানুয়ারী নাগরিকত্ব ফেরত দেবার একটি প্রেসনোট জারি করে যার সুযোগ নিতে চায় গোলাম আজম। এই প্রেসনোটের সুযোগ নিয়ে গোলাম আজম ২০ শে মে ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত নাগরিকত্বের জন্য কয়েকটি আবেদন করে এবং তা প্রত্যাখাত হয়। ১৯৭৮ সালের মার্চে তার আরেকটি নাগরিকত্বের আবেদন বাতিল হয় কিন্তু গোলাম আজম বাংলাদেশে আসবার ভিসা পায় ১৯৭৮ সালে ১১ জুলাই অসুস্থ মাকে দেখতে আসবার কথা বলে, যদিও সেটি সাময়িক ভাবে ৩ মাসের ভিসা দেয়ার মাধ্যমে।ওই একই বছর তার ভিসা দুইবার রিনিউ করা হয়। ১৯৭৮ সালের নভেম্বরে গোলাম তার নাগরিকত্ব্ব দেয়ার জন্য পুনরায় আবেদন করে এবং পাকিস্তানী পাসপোর্ট সারেন্ডার করে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
১৯৮০ সালের ২৭ শে মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংসদকে জানায় যে গোলামের নাগরিকত্ব দেয়া হবে কি হবে না, এটির সিদ্ধান্ত এখনো বিবেচনাধিন রয়েছে।পরবর্তীতে ৩০ শে এপ্রিল ১৯৮১ সালে গোলাম ওথ অফ এলিজিয়েন্স জমা দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এবং পুরো ব্যাপারটি বিবেচনাধীন থাকে। এইদিকে গোলাম আজম নির্বাচিত হয় জামায়াত ইসলামীর আমীর হিসেবে, অথচ পুরো ব্যাপারটাই ছিলো আইন বহির্ভূত। কেননা যেহেতু ১৯৯৪ সালের আগ পর্যন্ত গোলাম পাকিস্তানী নাগরিক হিসেবেই বিবেচিত ছিলো, সেহেতু সে কোনোভাবেই আইন মোতাবেক একটি দলের প্রধান হতে পারে না যা আমাদের সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের সরাসরি লংঘন। এই নিয়ে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও সারা বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ আন্দোলোনে ফেটে পড়ে এবং সরকার ১৯৯২ সালের ২৩শে মার্চ গোলামকে শো-কজ নোটিস পাঠায় গোলামকে এটি জানিয়ে যে, কেন ১৮ ই এপ্রিল ১৯৭৩ এর গেজেট নোটিফিকেশন অনুযায়ী গোলামকে বাংলাদেশ থেকে বের করে দেয়া হবে না। এই শো-কজের পর পরই ২৪ শে মার্চ ১৯৯২ সালে প্রবল গণ আন্দোলনের মুখে তৎকালীন বি এন পি গোলামকে গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়। এবং তার পর-পরই দাবী ওঠে গোলাম আজমের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের, যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে গঠিত হয় গোলাম আজমের বিরুদ্ধে গণআদালত যেখানে গোলাম আজমের ফাঁসির আদেশ প্রদান করা হয়। এদিকে এই গণ আদালত গঠন করার প্রতিশোধ হিসেবে বি এন পি সরকার জাহানারা ইমামসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দেয় যা ইতিহাসে অন্যতম কালো অধ্যায় হিসেবে আজও বিবেচিত হয়।
এদিকে গোলাম আজম গ্রেফতার হয়ে জেলে প্রেরিত হয় ১৯৯২ সালের ২৪ শে মার্চ এবং শুরু হয় তার নাগরিকত্বের মামলা। গোলামের এই নাগরিকত্বের মামলা প্রথমে যায় হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে। এখানে দুইজন বিচারপতি উপস্থিত ছিলেন। তাদের প্রথম জন হলেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইসমাইল উদ্দিন সরকার এবং বিচারপতি জনাব বদরুল ইসলাম চৌধুরী। এদের দুইজনের মধ্যে বিচারপতি জনাব ইসমাইল গোলাম আজমের নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ বহাল রাখেন এবং অন্য বিচারপতি জনাব বদরুল গোলামের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেবার পক্ষে রায় দেন ১৯৯৩ সালের ২২ শে এপ্রিল। রায় যেহেতু দুইজন বিচারপতির রায়ের ভিন্নতা ছিলো সুতরাং এই মামলা নিষ্পত্তি করবার জন্য সেটি চলে যায় হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চে, যেখানে বিচারপতি ছিলেন জনাব আনোয়ারুল হক চৌধুরী। বিচারপতি আনোয়ার, বিচারপতি বদরুলের রায়কে সমর্থন করে গোলামের নাগরিকত্বের পক্ষে রায় দেন এবং এই রায়ের বিপক্ষে আবেদনকারী সরকারী পক্ষ হাইকোর্টের এপিলেট ডিভিশানে যায়। চারজন বিচারপতির সমন্বয়ে গড়া এই বেঞ্চটিতে ছিলেন বিচারপতি হাবিবুর রহমান, এ টি এম আফজাল, মুস্তাফা কামাল, লতিফুর রহমান। এই চারজন বিচারপতি গোলামের নাগরিকত্বের পক্ষে দেয়া পূর্বতন হাইকোর্টের একক বেঞ্চের রায় (বিচারপতি আনোয়ারের রায়) বহাল রাখেন। এই রায়টি দেয়া হয় ১৯৯৪ সালের জুন মাসের ২২ তারিখে।
পাঠক এই মূহুর্তে এসে আপনাদের একটি কথা বলা খুব প্রয়োজন। সেটি হোলো-
উপরের সব রায় গুলোতে কেন গোলামের নাগরিকত্ব বহাল রাখা হোলো, কিভাবে হোলো, কি ছিলো দুই পক্ষের যুক্তি-তর্কে, কিংবা কি-ই বা ছিলো বিচারকদের ব্যখ্যা, জুরিস্প্রুডেন্স, কেইস ল’, এভিডেন্স, এসব আলোচনাতে আমি আজ যাবো না। কেননা এই ব্যাপারটি জানতে আপ্নারা হাইকোর্টের সেই রায়টি পড়লেই তা খুব সহজে জানতে পারবেন একদম বিস্তারিত আইনী ব্যখ্যা সহ। আমি শুধু এই লেখায় ফোকাস করব গোলামের নাগরিকত্ব মামলার প্রথম বেঞ্চের একটি রায়ের একটি বিশেষ অংশ নিয়ে যেখানে বিচারপতি ইসমাইল উদ্দিন সরকার একটি মন্তব্য করেছিলেন যা নিয়ে আজকে জামাত অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে গত প্রায় দেড়যুগেরও বেশী সময় ধরে এবং বিভিন্ন মিডিয়াতে এই প্রোপাগান্ডাটি চালিয়ে তারা বিভ্রান্ত করছে সাধারণ মানুষকে।

কি সেই প্রোপাগান্ডা? কেমন করে জন্ম নিলো এই মিথ্যে প্রোপাগান্ডাটি?:
বিচারপতি ইসমাইল উদ্দিন সরকার তার প্রদত্ত রায়ের প্যারা ১৪ তে বলেন-
[Professor Golam Azam v. Bangladesh (Mohammad Ismail Uddin Sarkar J); Dhaka Law Reports 46 (1993), p. 433.)]

প্রিয় পাঠক, উপরের স্ক্রীন শটটি লক্ষ্য করুন।এই স্ক্রীন শটটি হচ্ছে গোলামের নাগরিকত্ব মামলার প্রথম রায়ের একটি অংশ। এই রায়টি হচ্ছে গোলামের নাগরিকত্ব মামলা যখন প্রথমে হাইকোর্ট ডিভিশনে দ্বৈত বেঞ্চে গেলো তখনকার। রায়টি দিয়েছেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইসমাইল উদ্দিন সরকার এবং এই অংশ নিয়েই গোলামের সমর্থক তথা জামাতের কর্মী-ব্লগার-লেখক-আইনজীবিরা ইচ্ছেমত মিথ্যে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এই স্ক্রীন শটটি দেখিয়েই ওরা বলে থাকে যে, হাইকোর্ট এর বিচারকরাই তাদের রায়ে বলে দিয়েছেন যে গোলাম যুদ্ধাপরাধী কিংবা মানবতাবিরোধী কোনো অপরাধ করেনি। তারা গোলামের কোনো অপরাধের অস্তিত্ব খুঁজে পায় নি।
আসুন দেখি কি বলা হচ্ছে এই ছবিটিতে-
এখানে প্রথম ভাগ যেটি হলুদ সীমানায় আবদ্ধ এবং ২য় ভাগ, যেটি লাল সীমানায় আবদ্ধ করা হয়েছে সেখানে বলা হচ্ছে যে গোলামের যেই ছবি টিক্কা আর ইয়াহিয়ার সাথে দেয়া হয়েছে তাতে করা এটি বোঝায় না যে গোলাম একাত্তরে পাকিস্তানী বাহিনী ও রাজাকার, আলবদর, আল-শামস ও আলবদর বাহিনীর সাথে মিলে মিশে কোনো গণহত্যায় অংশ নিয়েছিলো শুধু মাত্র ইয়াহিয়া আর টিক্কার সাথে গোলামের দহরম-মহরম ছাড়া।
এবার পাঠক লক্ষ্য করুন ছবির গোলাপী সীমানায় আবদ্ধ অংশটিতে যেখানে বিচারক ইসমাইল বলছেন যে তারা এই মামলায় ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী ও তাদের দোসরদের কৃত অপরাধের সাথে গোলামের “সরাসরি” কোনো সম্পৃক্ততা রয়েছে এমন কিছু খুঁজে পায় নি। পাঠক এখানে “সরাসরি” শব্দটি মনে রাখুন এবং এও মনে রাখুন যে বিচারক কিন্তু রাজাকার-আলবদর, আল শামস রা যে অপরাধ করেছে এটি স্বীকার করেছেন এবং তার রায়ের ওই উদ্দিষ্ট অংশে বলেছেন।
এবার আসুন উল্লেখিত রায়ের শেষ অংশে যেটি সবুজ সীমানায় নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এখানে বিচারপতি ইসমাইল অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেছেন যে উল্লেখিত যেসব রিপোর্ট সরকারপক্ষ দিয়েছেন তা এই মামলায় একেবারেই বিচার্য নয় এবং এই মামলায় এটি কোনো কাজেই আসবে না। মূলত এই অংশটি ও তার ব্যখ্যাই হচ্ছে আজকে জামাতের এই প্রোপাগান্ডার সঠিক জবাব।
মাননীয় বিচারপতি ইসমাইল উদ্দিন সরকারের রায়ের ব্যখ্যাঃ
পাঠকদের আবারো মনে করিয়ে দেই যে, এই বিচারপতি-ই কিন্তু একমাত্র বিচারপতি ছিলেন গোলামের নাগরিকত্ব মামলায়, যিনি গোলামের নাগরিকত্ব্ব বাতিলের রায় দিয়েছিলেন। তাঁরই রায়ের একটি অংশ নিয়ে আজকে জামাতীদের এই নোংরা প্রোপাগান্ডা আসলেই আমাদের মনে ঘৃণার উদ্রেক ঘটায়। আমি একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝাই।
ধরা যাক, আমার একটি জমি নিয়ে মামলা চলছে। আমার প্রতিপক্ষের নাম হচ্ছে ধরেন জামাল সাহেব। একটি জমি আমরা দুইজনই দাবী করছি। এখন বিচারপতিদের সামনে যখন মামলাটির যুক্তি-তর্ক কিংবা শুনানী হচ্ছে তখন জামাল সাহেব বললেন, “এই জমি আমার। আমি ১৯৮০ সালে জমিটি কিনেছি।জনাব নিঝুম আমার জমিটি দখল করে নিয়েছেন অবৈধ ভাবে। জনাব নিঝুম ১৯৬০ সালে মেট্রিক পরীক্ষায় ফেল করেছিলো। সে অংকে পেয়েছে ১০, এই দেখুন প্রমাণ হিসেবে ৫টি ছবি যেখানে তিনি বিভিন্ন ক্লাসে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছেন”
কোর্ট তখন কি করবে? এটি বুঝতে একজন আইনজীবি হবারও প্রয়োজন নেই আপনার কিংবা আপনাকে এরজন্য একজন আইনের ছাত্রও হতে হবে না। সিম্পলি কমন সেন্স দিয়ে ভাবুন তো!খুব স্বাভাবিক ভাবেই কোর্ট বলবে যে, “নিঝুম সাহেব যে ১৯৬০ সালে অংকে ১০ পেয়েছেন এমন প্রমাণ আমরা পাইনি এবং এই কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকা ছবি হয়ত তার পড়ালেখায় দূর্বলতা বা ক্লাসের পারফরম্যান্স প্রমাণ করে কিন্তু তাই বলে যে তিনি অংকে ১০ পেয়েছেন তা সরাসরি প্রমাণ করে না এবং এই মামলা অংক বা ভূগোল প্রমাণ করবার জন্য নয়। এই মামলা জমি সংক্রান্ত এবং এই জমির সাথে সম্পর্কিত প্রমাণ ও কথাই এখানে মামলা নিষ্পত্তিতে সহায়তা করবে”
এখন ধরেন এই মামলার ১০ বছর পর আমি একটি ইউনিভার্সিটির অংকের প্রফেসর হলাম। (পাঠক মনে করুন ১৯৬০ সালের অংক পরীক্ষায় আমি আসলেই ১০ পেয়ে ফেল করেছিলাম) এখন যেই ইউনিভার্সিটিতে আমি অংকের প্রফেসর সেখানে আমার ক্রেডিবিলিটি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হোলো এবং বলা হোলো যে আমি আমার রেজাল্ট মিথ্যে করে বানিয়ে এখানে শিক্ষক হিসেবে ঢুকেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করলো, আমার জন্য যথাযথ আইনে বিচারের ব্যাবস্থা করলো। আমি এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে জামাল সাহেবের সাথে আমার জমি-জমার মামলার রায়ের ঐ অংশটি সবাইকে দেখালাম। এখন, মামলার রায়ের ওই নির্দিষ্ট অংশটি দেখিয়ে আমি কি এটা বলতে পারি যে, আমার বিরুদ্ধে এখন যে তদন্ত আপনারা করছেন তা একটি প্রহসন, ১০ বছর আগের কোর্টের রায়েই তো বলে দেয়া হয়েছে যে আমি অংকে ১০ পাইনি। আমি ফেল করিনি। তাহলে এখন আবার কিসের তদন্ত? কিসের বিচার?
ঠিক একই ঘটনা ঘটেছে গোলাম আজমের নাগরিকত্ব মামলার ক্ষেত্রে। সরকার মামলা দিয়েছিলো বাংলাদেশ নাগরিক আদেশ-১৯৭২ এর ধারা ৩ এর মাধ্যমে, কোনোভাবেই এই মামলা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল-১৯৭৩ কিংবা গোলাম আজমের যুদ্ধকালীন অপরাধের ঘটনা প্রমাণ করবার জন্য নয়। এই মামলায় শুধুমাত্র সেসব যুক্তি-তর্ক কিংবা প্রমাণ অথবা কথা-বার্তা গ্রহণ করা হবে যেগুলোর গোলামের নাগরিকত্ব ইস্যুর সাথে সম্পর্কিত হবে। যেহেতু নাগরিকত্ব মামলার ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধ, মানবতা বিরোধী অপরাধ তথা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গোলাম আজমের ভূমিকার কথা বিচারকের কাছে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে সেহেতু বিচারপতি তার উপরের কথাগুলো বলেছেন। এবং তিনি পরবর্তীতে শুধুমাত্র গোলাম আজমের নাগরিকত্বের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ে পর্যালোচনা করে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ দিয়েছিলেন।
উপরের আমার দেয়া উদাহরণ আপনাদের কাছে আরো বেশী করে স্পষ্ট হবে আরো কয়েকটি ব্যাপার লক্ষ্য করলে। আগেই বলেছি গোলামের মামলা শেষ পর্যন্ত নানান রায়ের পর হাইকোর্টের এপিলেট ডিভিশানে গিয়ে পৌঁছে। আসুন দেখি সেখানে বিচারপতিরা কি বলেছেন-
এপিলেট ডিভিশানের বিচারপতি হাবিবুর রহমান এই মামলার রায় দিতে গিয়ে প্যারা নাম্বার ২৭-এ বলেন-
27. The questions whether by his conduct the respondent disqualified himself to be a citizen of Bangladesh or whether he renounced his citizenship of Bangladesh or whether he continued to be a citizen of Pakistan, implying he had already been a citizen of Pakistan are totally irrelevant under Article 3. If the purpose was to deter the persons mentioned in the notification from making anti-Bangladesh propaganda then that was not covered by Article 3. The only question that can be decided under Article 3 whether a person is qualified to be deemed to be a citizen of Bangladesh.
এর পরে কি আর কোনো ধরনের, কোনো রকমের কিংবা কোনো প্রকারের অস্পষ্টতা থাকতে পারে না থাকা উচিৎ? এখানে বিচারপতি হাবিবুর রহমান অত্যন্ত পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন যে গোলাম ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালিয়ে থাকলেও তা এই মামলায় উদ্দিষ্ট ধারা ৩ এর সাথে কোনো রকমেরই সম্পর্কিত নয়। পাঠক, আপনারা জেনে রাখুন, এই মামলাতে যদি গোলামের সমস্ত অপরাধ জলজ্যান্ত ভিডিও নিয়ে এসেও কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের প্রমাণ নিয়ে এসেও বিচারপতিদের সামনে তুলে ধরা হোতো তবে বিচারপতিরা তা একেবারেই আমলে নিতেন না। কেননা মামলাটি গোলাম আজমের নাগরিকত্ব বহাল থাকা/ না থাকা নিয়ে। গোলামের ১৯৭১ সালে কৃত অপরাধ নিয়ে নয়।আপনার যদি লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন বিচারপতি মোহাম্মদ ইসমাইল উদ্দিন সরকার কিন্তু বলেছেন যে উপস্থাপিত ছবি ও ডকুমেন্টস গুলো গোলামের অপরাধের “সরাসরি” সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে না। মানে তিনি এও বুঝাতে চেয়েছেন যে ইন্ডাইরেক্ট যোগাযোগ থাকতে পারে। এর মানে, তিনি পুরো ব্যাপারে আসলে কোনো সিদ্ধান্তেই আসেননি। এর থেকেও প্রমাণিত হয় যে বিচারপতি ইসমাইল কোনোভাবেই গোলামের মুক্তিযুদ্ধকালীন অপঃকর্মের ব্যাপারে কোনো রায়ই দেন নি।
বিচারপতি হাবিবুর তার রায়ের শেষ দিকে প্যারা নাম্বার ৬৫ তে আবারো স্পষ্ট করে বলেন-
65. In considering a matter before it the Court will only consider whether the aggrieved person has got the legal entitlement to the relief claimed. Any consideration of his political antecedents having no bearing on the questions of law involved in the matter will be irrelevant.
শুধু বিচারপতি হাবিবুর রহমানই নন। এই রায়ে বিচারপতি এ টি এম আফজাল কিছু গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন যা এই লেখার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি। বিচারপতি আফজাল তার রায়ের ৮০ নাম্বার প্যারায় বলেন যে –
The only question at issue therefore is: Did the Government exercise its power legally and in terms of Article 3 as would make the notification immune from the doctrine of ultra vires?
A point of law cannot be matched by alleging political mis‑demeanour. That is sheer perversity.
আবার প্যারা ৮১ তে তিনি আরো স্পষ্ট ভাবে বলেন-
81. The impugned order, inter alia, refers to conduct and, as noticed above, the Government’s affidavit is mainly based on the respondent’s political conduct during the liberation struggle and after. There is complete unanimity on all hands that the political conduct of the respondent was wholly irrelevant for deciding the question under Article 3 of President’s Order No. 149 of 1972. There is no power under Article 3 for denuding a person of his citizenship for the offence of collaboration with the Pakistan Occupation Army. Indeed there is nothing in President’s Order No. 149 of 1972 which authorised the Government on the date of the impugned notification to disqualify a citizen on the ground of collaboration with the Pakistan Occupation Army. President’s Order No. 149 of 1972 was never intended to punish an alleged collaborator of the said Army by stripping him of his citizenship.
এছাড়াও বিচারপতি মোস্তফা কামাল কয়েকটি গুরুত্ব পূর্ণ কথা বলেছেন তার রায়ের ১২৫ নাম্বার প্যারায়। যেখানে তিনি বলেছেন অত্যন্ত স্পষ্ট ভাবে যে-
The argument of the learned Attorney-General is long on emotion and short on law.
First,
his commentaries on the criminal aspects of the political antecedents of the respondent were never tested in a court of law.
Secondly,
even if the allegations are correct, our citizenship law does not deny citizenship to those who opposed the creation of Bangladesh and even killed freedom fighters and were engaged in murder, rape, etc. Our law has followed the Pakistan law in this respect. There were many Muslims (and Hindus as well) who opposed the creation of Pakistan and even voted against Joining Pakistan in the plebiscites held in the North Western Frontier Province and in Sylhet. Yet the Pakistan Citizenship Law did not deny them citizenship. They were deemed to be citizens of Pakistan if they had permanent residence in the territory of Pakistan and did not leave the same. Bangladesh also followed the same principle. The history of citizenship legislation, detailed earlier, bears ample testimony to that. In Bangladesh, collaborators and Razak’ars were prosecuted under the Collaborators Order, President’s Order No. 8 of 1972, but they were not denied the citizenship of Bangladesh.
মানে হচ্ছে, গোলামের ১৯৭১ সালের কৃত অপরাধ কখনোই কোর্টে প্রমাণিত হয় নি এবং যদি হতোও তাহলেও তা তার নাগরিকত্বের সাথে সম্পর্কিত হোতো না কেননা এতে করে হাজার হাজার রাজাকারের নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে যেতো। এখানে একটি কথা উল্লেখ করা খুবই প্রয়োজন যে, উপরের প্যারায় বিচারপতি মোস্তফা কামাল তার মন্তব্যটি করবার পর পরই এর সাথে বিচারপতি ইসমাইল উদ্দিন সরকারের রায়ের সেই অংশটি ( যেটি নিয়ে জামাত মিথ্যাচার করে, উপরে তা ইতিমধ্যে একবার দিয়েছি বলে এখানে আর দিলাম না) আবারও উদ্ধৃত করেন। কিন্তু তিনি এই ব্যাপারটা আমাদের অত্যন্ত পরিষ্কার করে জানান যে, এই মামলা টি গোলামের নাগরিকত্বের সুতরাং এখানে গোলামের ১৯৭১ সালের কর্মকান্ডের ব্যাপারটি তিনি যুক্তি তর্কে স্থান দিতে চান না।
এইসব আলোচনার প্রেক্ষিতে একটি কথা খুব পরিষ্কারভাবে বলা যায় যে, গোলামের নাগরিকত্ব মামলা আর গোলামের যুদ্ধাপরাধের কিংবা মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলা দুইটি ভিন্ন জিনিস। গোলামের নাগরিকত্ব মামলাতে যেহেতু আবেদনকারী নাগরিকত্ব কেন দেয়া হবে না এই সম্পর্কিত বিভিন্ন যুক্তির পাশাপাশি গোলামের মুক্তিযুদ্ধকালীন অপরাধের কথাও এনেছিলেন ও তা ভুল ভাবে উপস্থাপন করেছিলেন সুতরাং সেই হিসেবেই ও আইনের প্রশ্নে বিচারপতিরা ওই সব ক্ষেত্রে মন্তব্য করেছেন। এবং সেটি যে এই মূল মামলার সাথে সম্পর্কিত নয় বলে বিচারকরা বলেছেন তা তো আপনারা উপরের রায়ের উদ্ধৃত অংশ থেকে দেখলেনই। যেখানে বিচারপতিরা শুধু আইন নিয়ে ও প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়েই কথা বলতে বলেছেন এবং গোলামের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা যেহেতু সেটি ছিলোনা তাই এই ব্যাপারে তারা কোনো রায় কিংবা বক্তব্যও দেননি।
অথচ জামায়াতে ইসলামের মূর্খ নেতা, ব্লগার ও পাতি লেখকেরা চারিদিকে মাইক দিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন যে ১৯৯৪ সালের নাগরিকত্ব মামলার রায়েই নাকি গোলামকে ১৯৭১ সালে তার কৃত অপরাধের ব্যাপারে কোর্ট তাকে সম্পূর্ণভাবে ফেরেশতা বলে রায় দিয়েছেন। অথচ আইনকে মানুষের সামনে ভুল ভাবে ব্যাখ্যা করে, ভুল ভাবে রায়ের ব্যখ্যা করে জামাত একের পর এক অপরাধ করে যাচ্ছে। তারা সাধারণ মানুষকে তাদের মিথ্যে কথা দিয়ে বোকা বানাচ্ছে এবং চেষ্টা করছে সাধারণ মানুষের সহানুভূতি আদায় করতে। জামাত এতই একটি ভন্ডের দল যারা জলজ্যান্ত রায়কে সামনে রেখে সেই রায়কে মিথ্যে করে পরিবেশন করছে, ঠিক তারা যেমনটি করে পবিত্র কোরান শরীফ নিয়ে।
আশা করি এই লেখার মাধ্যমে জামাতের এই বিষয়ে নোংরা ও মিথ্যে প্রোপাগান্ডার সমাপ্তি হবে এবং বাঙালীকে হাইকোর্ট দেখানো বন্ধ হবে।
বিবেকবান মুসলিম বলেছেনঃ
ব্লগারদের উচিত বস্তুনিষ্ট সংবাদ, & ইনফর্মেশন বিরতিক খবর পরিবেশন করা, কর বিরুদ্দে প্রাংগড়া মন্তব্য না করা,
rubel বলেছেনঃ
আসসালামু ভাই
নিশ্চয়ই ভাল আছেন।
আপনি আবার আসলেন মিথ্যার ফুলঝুড়ি নিয়ে। আপনি এখনো বুঝতে পারছেন না আপনার লেখার জনপ্রিয়তা কত টুকু আছে। এভাবে আর কতদিন চলবেন ? আল্লাহ আপনাকে হেদায়েত দান করুন আমীন।
rubel বলেছেনঃ
আমি আছি ভাই । চালিয়ে যান মিথ্যার কসরত।
আতাস্বপন বলেছেনঃ
নাগরিকত্বের মামলায় যেভাবেই হোক যে কারনেই হোক গোলাম আযম জিতে গেছেন । সেটা তথ্য প্রামানের দূর্বলতার কারনেও হতে পারে। এই বিষয়টির প্রতি এবার গুরুত্ব একটু বেশী দিতে হবে। আল জাজিরাতে অলরেডি তার পক্ষের শক্তি প্রচার কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। তাই দূর্বল সাক্ষ্য নয়, একদম সঠিক তথ্য প্রমাণ নিয়ে এগুতে হবে। যাতে সবার মুখ বন্ধ হয়। তা না হলে অল্প ভুলের কারনে ভেস্তে যেতে পারে মহত উদ্যোগ।
rubel বলেছেনঃ
ব্লগের নিয়ম নীতি ভঙ্গ করছেন নিঝুম মজুমদার ।
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
কি ভাই ৭৭ জনের লিস্টি তো এখনো দিলেন না
Mamun Khan বলেছেনঃ
আপনি লেখার ভিতরে যতক্ষানি যুক্তি দেখিয়েছেন তার চেয়ে গালি দিয়েছেন বেশী। অন্যান্য ব্লগারকে পাতি লেখক হিসাবে আখ্যায়ীত করার চেস্টা করেছেন যেটা শোভনীয় নয়। আমি একজন সাধারণ পাঠকমাত্র, তবে সাধরণ উপলদ্ধি থেকে বুজতে পারি বিচারের আগে কেউর সমম্ধে কোন বিরুপ মন্তব্য করা ঠিক না। এই গোলাম আজমকে নাগরিকত্ব পাবার আগে আপনার মতো অনেকেই পাকিস্থানি নাগরিক বলে সম্মোধন করতো এখন তারা এসব বলে না। যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হয়েছে বিচার করতে দেন চুড়ান্ত বিচারের রায়ের পরেই কেবল মন্তব্য কইরেন। আর আপনি বিচারের আগেই অনেক মন্তব্য করেছেন। যা আপনার কাছে শোভনীয় নয়। জামায়াতের সব লোক গোলাম আজম নয়। অনেক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এখন জামায়াত করে আর তাদের গ্রহনযোগ্যতা সমাজের কাছে অনেক বেশী। আর আপনি যাদের চিন্তাধারার অনুসারী , তাদের অবস্থা বর্তমান যুগে সবচেয়ে শোচনীয়। খুন, ধর্ষণ থেকে শুরু এমন কোন হেন কাজ নেই যে, তাদের দ্বারা সংগঠিত হচ্ছে না। অতএব পাককারীভাবে জামাতি বলে গালি না দিয়ে সম্মান দিয়ে কথা বলুন এবং তাতে আপনার সম্মান বাড়বে বই কমবে না।
মুহাম্মদ আমিনুল আবেদীন বলেছেনঃ
লেখক ,
আপনাকে অন্তর থেকে আশীর্বাদ-শুভকামনা। আপনি ডকুমেন্টারী এ বিষয়টি সুন্দর ও সাবলীল আলোচনা করেছেন। আপনি একজন ছাত্র হয়েও বিষয়টিকে সুনিপুন ভাবে আলোকপাত করায় আবারও অভিনন্দন । আশাকরি এ দেশের শিককিত সমাজ এটি নিয়ে না বুঝার কিছু থাকলে তা বুঝে নেবেন। যুদ্ধাপরাধী/মানবতা বিরোধীদের পকক্য পাতদুষ্ট লোকজন আর না বুঝে বক বক করবেনা । এভাবে দেশের কোনও কল্যাণে বা বিতর্কিত বিষয়ে আগামীতে ও ভূমিকা রাখবেন এ প্রততসা করি। জেনে কোনও কিছুর প্রতিবাদ না করা ও আসলে অপরাধ। আপনার সর্বাংগিন কল্যাণ কামনা করি। ধন্যবাদ।
এমরান বলেছেনঃ
মামুন খান,
আপনি যদি পাতি লেখক না হন তাহলে আপনার গায়ে লাগতো না। পাতি লেখক কাকে বলতে চেয়েছেন তা জ্ঞানবান পাঠক সমাজ বুঝেছেন। কিন্তু আপনি না বুঝেই …আপনার সমস্যা হয়ে গেল । হ……আর আপনি যদি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান জামাত করে থাকেন , তাহলে সেটা দূরভাগ্গয়ের বিষয়। তিনি হয়ত: তার ছেলেকে ইতিহাস বলেননি নতুবা তার সন্তান টা রাজাকারদের জারজ ছিল। না হয় মুক্তিযোদ্ধার ঘর এ কোনদিন জামাত/শিবির হতে পারে না। তাই এটা গর্ব করে বলার আগে একটু ভেবে চিন্তে বলুন …প্লীজ ….আর সময় নেই -অহংকার করার।
rubel82 বলেছেনঃ
যতই প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হোকনা কেন , মানুষ জানেই যে গোলাম আজম একজন কুক্ষেত রাজাকার। সুতরাং কোনও সমসসা হবেনা। জামাত নেতাদের এক সারিতে দার করিয়ে গুলি করে হত্তা করা হচ্ছেনা কেন এটা সরকারের জবাব দেয়া উচিত। যারা চিননিত রাজাকার তাদেরতো বিচার করার কিছুনাই.
রুবেল বলেছেনঃ
বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ নিঝুম মজুমদার।
আর মামুন খান লিখেছেন “অনেক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা এখন জামায়াত করে”
আমি বলব মামুন ভাই, অনেক ভাল পিতার ঘরে অনেক অবাধ্য সন্তান থাকে। রাজকাররা নানান কায়দা-কানুন করে অনেক ভাল ছেলেমেয়েদের মগজ-ধোলাই করে দিয়েছেন।
আবার অনেক মুক্তিযোদ্ধা স্বার্থের মোহে রাজাকারদের সাথে মুখ মিলিয়ে জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ বলছে।
অনেকে রাজাকারদের নির্দোষ বানানোর চেষ্টায় বিভিন্ন খেলায় মেতে উঠেছেন।
সত্ত কখনো চাপা থাকেনা। সুতরাং বন্ধ করুন ষড়যন্ত্র, নইলে একসময় জাতি আপনাদের ঘৃণা করবে রাজাকারদের মতই।
Enam বলেছেনঃ
নিঝুম সাহেব, গোলাম আযমের নাগরীকত্ব মামলার রেফারেন্স না হয়, না’ই টানা হলো। সাঈদী’র মামলাটি তো এখন বিচারাধীন। এ পর্যন্ত দেয়া স্বাক্ষীগনের জেরা থেকে কোন্ সত্যটি বেরিয়ে এসেছে বলতে পারেন? ১৯৭১ সালে দেলোয়ার সিকদার পিং রসূল সিকদার নামে এক রাজাকার ছিল, সে তার অপকর্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তি সময়ে জনরোষে পড়ে মৃত্যুবরণ করেছে। সেই মৃত দেলোয়ার সিকদার এর অপকর্মের সব দোষ এখন এসে নিরপরাধ দেলোয়ার হোসেন সাঈদী’র উপর চাপানোর চেষ্টা হচ্ছে। কেবলমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে তাকে ঘায়েল করার জন্য। এ ছাড়া স্বাক্ষীদের পালিয়ে যাওয়া, স্বাক্ষী হাজির করার ব্যপারে প্রসিকিউসনের যেই লেজে গোবরে অবস্থা, এ সব দেখে অনুমান করতে কষ্ট হয় না, এটি বিচারের নামে কত বড় প্রহসন। পুরোন কাসুন্দী বাদ দেন। এখনকার এ তরতাজা ইস্যু সাঈদী’র ব্যপারে তার বিপক্ষে স্বাক্ষীদের এ যাবৎ দেয়া জবানন্দী এবং তৎপরবর্তী জেরার আলোকে বলেন তো দেখি আপনার কী মনে হয়?
জীবন পথিক বলেছেনঃ
প্রপাগান্ডা শব্দটা তবে আপেক্ষিক। কে কোন বিষয়ে কার পক্ষে প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে সেটা সময় আমাদের কাছে পরিস্কার করে দেবে ভবিষ্যতে ।
এত বিশাল সামন্ত নিয়ে প্রসিকিউশন যখন বলে “আমরা অসহায় বোধ করছি” তখন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের লজ্জাই লাগে। জাতিগত ভাবে যে কলঙ্ক আমরা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি সেটা যদি নোংরা পানি দিয়ে করার চেষ্টা করি তবে সেটা হয়তো আর একটা কলঙ্কের জন্ম দেবে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য। ধন্যবাদ সবাইকে
সত্য চিরকাল সত্য ।
রাইয়ান বলেছেনঃ
জামাতীরা গো আজমকে খোদার চেয়ে বেশী মনে করে।। আজ তার জন্য যাদের এত দরত দেখায় সে যে অন্যের ক্ষতি করেছে সে কি বিচার পাবে না কোরানে তো েস টা বলে না। কোন মুক্তিযোদ্ধার ছেলে অন্তত জামাত করে না । এটা জামাতীদের প্রপাগোন্ডা।
আহমেদ বলেছেনঃ
ধিক এসব হয়েনার দলকে—যারা বুঝে শুনেই না বুঝার ভান করে। নিঝুম মজুমদার এত সরল ভাষায় উপস্থাপনের পর ও যারা না বুঝার ভান করে প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে অন্য দিকে ঘুরছে….তাদেরকে ধিক । আপনাদের কিছু বলার সাহস না থাকলে অন্য ব্লগে লিখুন! কিন্তু অপ্রাসংগিক লেখার প্রয়োজন কী? আর জঙ্গি পথিক ও এনামের জন্য বলি –সাঈদী এটিই, যে বাবুটির স্ত্রীকে ধর্ষণের পর গর্ব বতী হয়ে লজ্জায় ইন্ডিয়া পালিয়ে গেছে বলে মৃত্তুর খাতে সুয়ে সাক্কী দিল সেটি কেন শুনলেন না?আর বিশাল সামন্ত নিয়ে প্রসিকিউশন অসহায় বোধ করছে জামাতীদের ভয় ভীতিকে। তারা তাদেরকে নানা রকম ভয় ভীতি দেখিয়ে অসহায় অবস্থায় ফেলার চেষ্টা করছে। দেইলয়া রাজাকারের বিরুদ্ধে এখনো সাফাই গাইবেন ? ধিক রাজাকারের দলকে ধিক……আর কিছু লিখতে ও গৃনা হচ্ছে।
rubel82 বলেছেনঃ
আহমেদ ভাই, রাজাকার দের সাপোরটারদের আশ্রয় শেষ হতে হতে এখন ব্লগ ই তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল। তাদের এভাবে বিতাড়িত করবেন না প্লীজ.
rezaul বলেছেনঃ
গালাগাল করা ভাল মানুষের কাজ না
মোত্তালিব দরবারী বলেছেনঃ
বিচার প্রক্রিয়া সবসময় উপস্থাপিত তথ্য প্রমানের উপর নির্ভর করে। বর্তমান সরকারের সময়ও কিন্তু আদালত বলেছে চার্জ গঠন সঠিক হয়নি। অতীতের মত বর্তমানেও ওরা কী প্রমানের অভাবে পার পেয়ে যাবে?
ধন্যবাদ আপনাকে উচুমানের লেখা উপহার দেয়ার জন্য।
মাহি জামান বলেছেনঃ
গোলাম আজমের বিচার চাই। এরপর শিরাজ শিকদারসহ স্বাধীনতাত্তোরকালে নিহত ২০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা-রাজনৈতিক কর্মী হত্যার বিচারও করতে হবে। ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যার বিচার চাই। হোটেল সোনারগাঁর সন্নিকটে গাড়ীতে আগুন দিয়ে ১৯ নিরপরাধ মানুষ হত্যার বিচার চাই। এরশাদ ও মঈন উ আহমেদ এর মত সৈরাচারীদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশের গনতন্ত্র হত্যাকারীদের বিচার চাই। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ভারতের হাতে তুলে দেয়ার চক্রান্তকারীদের বিচার চাই। একসময় শেখ মুজিবের চামড়া তুলে নেয়ার ঘোষনা দিয়ে এখন আওয়ামী লীগের নৌকায় আশ্রয় নেওয়া মুতিয়া, সুরঞ্জিত, ইনুদের বিচার চাই। বঙ্গবন্ধুর ঘোষনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের `চাটার দল’ ও `চোরের খনি’ ‘র কুশিলব এবং তাদের উত্তরসূরীদের বিচার চাই যারা দেশকে তলা বিহীন ঝুড়িতে পরিনত করেছিল। ৯৬ ও ২০১১ সালে শেয়ারবাজার লুটের হোতাদের বিচার চাই। বিডিআর বিদ্রোহের নেপথ্য নায়ক ব্যারিস্ট্রার এমপি’র এর বিচার চাই। ১০ টাকায় চাল খাওয়ানোর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে মানুষকে প্রতারনার বিচার চাই। বিদ্যুৎ খাতে লুট-পাটের বিচার চাই। তারেক-কোকো-খালেদার বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা দূর্ণীতির অভিযোগ করেও তা প্রমানে ব্যর্থতার বিচার চাই। দলবাজ মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের বিচার চাই। অন্ধ ব্লগারদের সুবিচার চাই।
jaan alam বলেছেনঃ
অপেক্ষা করুন এবং ধৈর্য ধরুন.
ক্যান্টনমেন্ট এর বাড়ির ঘাড়ে কামড় দিয়েছে ছাড়ে নাই.
ইউনূস এর ঘাড়ে কামড় দিয়েছে ছাড়ে নাই.
ফারুকের/রশিদ গং দের ঘাড়ে কামড় দিয়েছে ছাড়ে নাই.
একুশে আগাস্ট গ্রেনেড হামলাকারীদের ঘাড়ে কামড় দিয়েছে ছাড়ে নাই.
বাঘিনী যখন একবার গোলাম আযমের ঘাড়ে কামড় দিয়েছে তখন আর রক্ষা নাই.
অপেক্ষা করুন এবং ধৈর্য ধরুন.
KISMAT বলেছেনঃ
মাহি ভাই:
সালাম।
একুশে august grenade hamlar kotha bollen naa?
কর্নেল তাহের এর কথা বলেননা ?
gonofashi te hazar hazar muktijoddha jara fashi te julechey tader kotha bollenna?
eershad eer bichar eer jonno tin tin baar shomoy peyachilam, shei kothata bollenna?
naki cantonment eer bari aar gulshan eer bari,KISAS,blood money heshabeh grohon kora hoye chilo?
ভুল বলেহ থাকলেহ মাপ করেহ দিবেন নিজ গুণে।
আমরা সবাই পাপী কর কথা কাকে বলবেন?
কবে যে আমরা নিজের চেহারা নীজে মনোযোগ দিয়ে আয়না দেখবো….।
সেই দিন কী আসবেহ?
Enam বলেছেনঃ
Ahmed কে বলছি আমি সব দেখে এবং শুনেই মন্তব্য করেছি। মনে হচ্ছে আপনি কল্পকাহিনী আর গল্পের ভিড়ে সেই খাটে শুয়ে দেয়া স্বাক্ষীর সব কথা শুনেছেন, কিন্তু এই কথাটা শুনেন নাই যে সে আইনজীবীদের জেরার এক পর্যায়ে স্বীকার করেছে যে ঐ এলাকাতে দেলোয়ার সিকদার, পিতা- রসূল সিকদার নামে যে রাজাকার ছিল সে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে জনরোষে পড়ে নিহত হয়েছিল। যেখানে অন্য কয়েকজন স্বাক্ষী বলেছিল সেই দেলোয়ার সিকদার’ই নাম পরিবর্তন করে এখন দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী হয়েছে। তার মানে কি ঐ দেলোয়ার সিকদার কবর থেকে উঠে এসে এখন দেলোয়ার হোসেন সাঈদী হয়েছে????!!!!!!
দূর থেকে বলেছেনঃ
নিঝুম মজুমদার
গোলাম আজম সাহেব যদি অপরাধী হয়ে থাকেন, তাহলে বিচার হবে। আর যদি বিচারের নামে প্রহসন হয় তাহলে এর বিচার ও একদিন হবে।
নিঝুম নিচের লিখাটি একটু মনোযোগ দিয়ে পড়ুন এবং দেখুনতো ওদের চিনতে পারেন কিনা-
আওয়ামী বাম বুদ্ধিজীবিরা একাত্তরের ‘স্বাধীনতার ইতিহাস’কে খুব সচুরতার সাথে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বহুল প্রচলিত টার্ম- ‘ইহুদী গণহত্যা’ – ‘হলোকাস্ট’র সাথে এক করে ফেলছে। এই ‘হলোকাস্ট’ বর্তমানে এমনই একটা শব্দ যা নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করলেই তার বারোটা বাজিয়ে দেয়া হয়। সারা বিশ্বের মিডিয়া একযোগে ইরানী নেতা আহমাদিনেজাদকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিল ‘হলোকাস্ট ডিনাইল’ এর অভিযোগ এনে। তিনি দুই বছর আগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ও ছাত্রদের লক্ষ্য করে এই ব্যাপারে পরিষ্কার করে বলেছিলেন, “অস্বীকার নয়, আমি বলেছি এ নিয়ে রিসার্চ হোক। কেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই শব্দটা নিয়ে রিসার্চের অনুমোদন নাই, কি করে সভ্য জগত হলোকাস্টের ইতিহাস নিয়ে ছাত্রদের চর্চা করতে নিষেধ করে দিল?”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস এতদিনে ঠিক ওই পর্যায়ে নিয়ে আসছে ইহুদী ঘরানার আওয়ামী বুদ্ধিজীবিরা। তারা যা বলবে তার বাইরে কোন কিছুই বলা যাবেনা। আওয়ামী ভন্ডামী উন্মোচনের যেকোন গবেষণাকে তারা হলোকাস্টের স্টাইলে ‘স্বাধীনতা বিরোধী’ বলে আখ্যায়িত করে। সত্যি বলতে কি এটিই তাদের একমাত্র ‘ফোর্স’ যা দিয়ে তাদের কর্মীবাহিনীকে সর্বদাই উজ্জীবিত করে রাখে। তারা মনে করে বাংলাদেশটা তাদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে। অন্যরা হবে তাদের দ্বারা চালিত, ঠিক যেমন আমেরিকানরা মনে করে তারাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি!
মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই দলের নেতাদের চরিত্র কেমন ‘ফুলের মতন পবিত্র’ তা জানতে হলে আজকেই তাদের নিয়ে স্টাডি করুন। আপনার আশপাশেই নজর দিলেই তাদের সম্মন্ধে একটা ধারণা পেয়ে যাবেন। ২০১০ এ এসে আওয়ামী লীগ যেমন ‘ধর্ষন লীগ’, টেন্ডার লীগ’, ‘বাজিকর’, আর ‘চাপাতি লীগ’ বলে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে, ‘৭১ এবং তার আগেও তাদের পরিচিতি এই রকমই ছিল অথবা তার চেয়ে বেশীই ছিল। শেখ মুজিব ছাত্রজীবনে টেন্ডার ছিনতাই করেছেন। তাই দেখে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ধমকও দিয়েছেন। পার্লামেন্টে নিজ হাতে স্পীকারকে চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছেন, সিরাজ সিকদারকে হত্যা করে মুজিব বলেছেন, “কোথায় আজ সিরাজ সিকদার”, চল্লিশ হাজার জাসদ কর্মীকে খুন করে বলেছেন “লাল ঘোড়া দাবড়িয়ে দিমু”। এরকম অসংখ্য কুকীর্তির উদাহরণ একমাত্র এই দলেই রয়েছে। অথচ এগুলো নিয়ে জাতীয়তাবাদী বা ইসলামিস্ট কেউই বাংলাদেশীদের শিক্ষিত করতে পারেনি। তার মানে মিডিয়া বানাতে পারেনি বা প্রচারণা চালানোর কৌশলও তাদের নেই।
সবচেয়ে নির্মম সত্য হলো আওয়ামী বিরোধীরা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকলেও আওয়ামী জাহেলিয়াতের সর্বসাকুল্য খতিয়ান তৈরি করতে মনযোগী হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে তাদের ভন্ডামী নিয়ে কোন রিসার্চও তারা সরকারীভাবে নথিভুক্ত করেনি। মেজর জলিল, ফরহাদ মজহার, বদরুদ্দীন উমর, আহমদ সফাদের একাডেমিক গবেষনাগুলোকে তারা প্রাতিষ্ঠানিক রুপ দেয়নি যার ফল এখন তারা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে।
সারা দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের বিস্তারিত তালিকা করলেই বোঝা যেত কতজন আওয়ামী লীগের লোক ছিল। এমনকি শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকাও করা হয়নি। আওয়ামী নেতারা যে জান বাঁচাতে পগাড় পার হয়ে ভারতে ছিল সে কথাগুলো মানুষজন চল্লিশ বছর পরে এসে ভুলতে বসেছে। আজকের সবচেয়ে মুখরা মন্ত্রী ও নেতারা যে তখনকার পরিচিত রাজাকার বা পাকিদের পদলেহী ছিল তা এখন কে বিশ্বাস করবে?
মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের ৯৯ ভাগ চেয়ারম্যান ছিল আওয়ামী লীগের লোক। পুলিশের এসপি ও চেয়ারম্যানরা মিলে রাজাকার, শান্তিবাহিনী নিয়োগ দিয়েছে । তারা ছিল পাক আনসার এবং পুলিশ বাহিনীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত একটা বাহিনী। এরা আর্মিদের দেখিয়ে দিত কারা মুক্তিযোদ্ধা। সে অনুযায়ীই বর্বর পাক সেনারা বাংলাদেশীদের উপর অত্যাচার করত। পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টে আলবদর, আলশামস ও রাজাকার বাহিনীকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী বাহিনী হিসেবে ঘোষণা করা আছে।
সেসময় ইসলাম পন্থী দলগুলোর রাজনৈতিক মাঠে অবস্থান ছিল ‘ছাগলের তিন নম্বরবাচ্চা’র মত। আওয়ামী লীগের ধারে কাছেও ছিল না জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলামী, মুসলিম লীগ। সংগতকারনেই সংখ্যানুপাতে তাদের ভাগে খুব বেশি পড়েনি। এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় দল ছিল মুসলিম লীগ। এরপর জামাত। সেই জামাতই বলছে, ‘৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানে জামায়াতের ৫৫৬ জন রুকন আর মাত্র তিন হাজার কর্মী ছিল।’
১৯৭২ সালের দালাল আইনের অধীনে প্রায় ১ লাখ লোককে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে অভিযোগ আনা হয় ৩৭ হাজার ৪৭১ জনের বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে ৩৪ হাজার ৬২৩ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণের অভাবে কোনো মামলা দায়ের করাই সম্ভব হয়নি। ২ হাজার ৮৪৮ জনকে বিচারের জন্য সোপর্দ করা হয়। বিচারে ৭৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় এবং ২ হাজার ৯৬ জন বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। যে ৭৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাদের মধ্যে ইসলাম পন্থী নেতারা কেউ ছিলেন না। এদের ফাঁসাতে না পেরে ১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর শেখ মুজিবুর রহমান শেষমেষ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করতে বাধ্য হন।
আসুন, এবার আমরা দেখি আওয়ামী লীগের প্রথম সারিতে কারা যুদ্ধাপরাধী।
পুতুলের দাদা শশুর নুরু মিয়া
প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই শ্রমমন্ত্রীর পিতা নুরু মিয়া একাত্তরে শান্তি কমিটির স্থানীয় চেয়ারম্যান ছিলেন। ফরিদপুর জেলায় শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকায় এখন চারটি মাত্র নাম বিদ্যমান- ডা: কাজী ইমদাদুল হক, আজিরুদ্দীন খান, আনিস কাজী ও আদিল উদ্দীন হাওলাদার। বেয়াইর পিতার নামটি মৃত রাজাকারের নাম থেকেও উধাও হয়ে গেছে।
ওদিকে প্রধানমন্ত্রি হাসিনা বলেছেন, পুতুলের দাদাশ্বশুর রাজাকার হলেও যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না। ফরিদপুর আ’লীগ নেতাদের উদ্দেশ্যেতিনি আরো বলেছেন,
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কড়া ভাষায় বলেছেন, দেশে রাজাকার বলে কোনো শব্দ নেই। দেশে কোনো রাজাকার নেই। তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের দাদাশ্বশুর ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রয়াত খন্দকার নূরুল হোসেন নূরু মিয়া ফরিদপুরে রাজাকারদের তালিকার ১৪ নম্বর রাজাকার হলেও তিনি যুদ্ধাপরাধী ছিলেন না বলে শেখ হাসিনা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি ফরিদপুরের নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেছেন, তার ভাই শেখ সেলিম ফরিদপুরের রাজাকার মুসা বিন শমসের ওরফে নূইলা মুসার সঙ্গে ছেলে বিয়ে দিয়ে আত্মীয়তা করেছেন—এটা কেন তারা কখনও বলেন না; অথচ শেখ হাসিনার মেয়ের দাদাশ্বশুর নূরু মিয়ার নামে সবাই অভিযোগ করেন যে, তিনি রাজাকার ছিলেন। নূরু মিয়া পিস কমিটির সদস্য থাকলেও যুদ্ধের সময় তিনি কোনো অপরাধমূলক কাজকর্ম করেননি বলে শেখ হাসিনা গর্বের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের মনে করিয়ে দেন।
শেখ সেলিমের বেয়াই মুসা বিন শমসের
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায়, তখন দৈনিক জনকন্ঠে ‘তুই রাজাকার’ শীর্ষক এক ধারাবাহিক সিরিজে ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার মুসা বিন শমশেরের একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে লোমহর্ষক কাহিনী ছাপা হলে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। জনকন্ঠের সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের ওপর নারকীয় হামলা চালায় মুসা বিন শমশেরের ভাড়াটে গুন্ডারা। পরে গুরুতর আহত ওই সাংবাদিকের পা কেটে ফেলতে হয়েছিল। শুরু হয় তার পঙ্গুজীবন। আরো পরে শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দিয়ে আলোচনায় আসে মুসা বিন শমশের। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা লন্ডনের হ্যামারস্মিথ এলাকায় সুখে শান্তিতে বসবাস করছেন।
মুসা বিন শমসের ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার আকরাম কোরায়শী ও আরো অনেক সৈন্য নিয়ে যখন ফরিদপুরের মহিম স্কুল সংলগ্ন ধর্মশালায় ঢুকে তার কেয়ারটেকার কেষ্টমন্ডলকে হত্যা করে মন্ডলের চার কন্যা ননী, সোহাগী, বেলী ও লতাকে ধর্ষনের পর ধর্ষন করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়। ওই হানাদার আর্মি অফিসার ফরিদপুর শহরের গোয়ালচামট এলাকার মদন গোপাল আঙিনা এলাকার মেয়ে কমলা ঘোষকে ধর্ষন করে বীরত্বের বুক ফুলিয়ে চলে গিয়েছিল।
ননী ও বেলীকে পাকিস্তানী আর্মিরা তাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই চার বোন আর তাদের মা মাখন বালার স্থান হয় ফরিদপুরের পতিতা পল্লীতে। ওদিকে কমলা ঘোষেরস্বামী জানতে পারে তার স্ত্রী’র লাঞ্চিত ও নির্যাতিত হবার ঘটনা । স্বভাবতই এই স্বামী বঙ্গ জননী কমলাকে আর ঘরে নেয় নি । ফলশ্রুতিতে কমলা দেশের বাইরে আশ্রয় নেয় সময়ের পরিক্রমা। এখন তিনি দেশের বাইরে বেঁচে আছেন একা হয়ে ।
ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির তালিকায় ফরিদপুর জেলার প্রধান ১৩ জন রাজাকারের মধ্যে তার নাম আছে শুরুর দিকেই। কিন্তু যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ঘৃন্য রাজাকার মুসা বিন শমশের ওরফে নুলা মুসা নিজেকে রীতিমতো ‘মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক’ হিসেবে দাবি করে বসে আছে! ‘ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি’র আহ্বায়ক ডা. এমএ হাসান আওয়ামী লীগে যুদ্ধাপরাধী খোঁজার বিষয়ে বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করবো, দলের মর্যাদা অক্ষুণ্ন ও নিষ্কলুষ করার জন্য নিজেদের উদ্যোগেই জরুরি ভিত্তিতে একটি তদন্ত কমিটি করা উচিত।’ (আমাদের সময়, ২৮ এপ্রিল, ২০১০)
১৯৭১ সালের আগে এই নুলা মুসা ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামীলীগের পক্ষে মাইকিং করেছিলো । ১৯৭১ সালের অসহযোগ আন্দোলনেও তার ভুমিকা ছিলো বলে কথিত রয়েছে । ২১ শে এপ্রিল যখন ফরিদপুরে পাক সেনারা ঢোকে তখন এই নুলা মুসাই পাক আর্মিদের স্বাগত জানিয়েছিলো । ২২ শে এপ্রিল ১৯৭১ সালে এই আকরাম কোরায়শীর সাথে এক বৈঠকে এই নুলা মুসাকে দেখা যায় ।এই ঘটনার প্রতক্ষ্যদর্শী ছিলেন ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আবু ইউসুফ সিদ্দীক পাখি ।
বাংলাদেশের ধনাঢ্যব্যবসায়ী ড. মুসা বিন শমসেরের ৭ বিলিয়ন ডলারের একাউন্ট ফ্রিজ করেছিল সুইস ব্যাংক। গতবছরের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে অনিয়মিত লেনদেনের অভিযোগ এনে এ হিসাব জব্দ করে সুইস কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তার লন্ডনস্থ আইনজীবিরা। এবিশাল অর্থ তিনি গড়ে তুলেছেন আন্তর্জাতিক অস্ত্র, তেল ও ক্ষমতার দালালী (পাওয়ার ব্রোকারেজ) করে। বাংলাদেশে তার ড্যাটকো নামে জনশক্তি রফতানির একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ড. মুসা ১৯৯৪ সালে সর্বপ্রথম তার বন্ধু ব্রিটেনের বিরোধী দলীয় নেতা (পরে প্রধানমন্ত্রী) টনিব্লেয়ারের নির্বাচনী ফান্ডে ৫০ লাখ পাউন্ড অনুদান দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে বিশ্ব দরবারে আলোচনায় উঠে আসেন। একজন বিদেশী নাগরিক হওয়ায় টনিব্লেয়ার অবশ্য সে অনুদান গ্রহণ করেননি। তার পরে নানা কর্মকান্ডের মাধ্যমে এ ব্যবসায়ী মাঝে মধ্যেই বিশ্ব মিডিয়ার আলোচনা বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছেন। লোক মুখে আছে তার বিচিত্র ও বর্ণাঢ্য জীবনের অনেক চমকপ্রদ কাহিনী। ১৯৯৭ সালে ড. মুসা বিন শমসের তার ইউরোপিয়ান সদর দপ্তর হিসেবে একবার আয়ারল্যান্ডের কালকিনি দুর্গ কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সফল হননি।
প্রিন্সমুসা বাংলাদেশী নাগরিক। তার জীবনের সাফল্যের কাহিনী তুলে ধরেছেন নাশরাত। মুসা বর্তমান বাস করছেন গুলশানে অবস্থিত তার প্রাসাদোপম বাড়িতে। এ বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই পার্টি থাকে। সেখানে সবসময় তার দেশি বেদেশি হাইপ্রোফাইল মেহমানরা উপস্থিত থাকেন। পার্টিতে খাবার পরিবেশনের জন্য রয়েছে প্রশিক্ষিত কয়েক ডজন সেফ। এরা সবাই রান্না-বান্না ও পরিবেশনার উপর উচ্চ ডিগ্রিধারী।
আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম রাজাকার পরিবারের সদস্য
অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের বড় ভাই হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য তার নেতৃত্বেই ঢাকায় প্রথম শান্তি কমিটি গঠিত হয়। একই সঙ্গে তিনি রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনীর সঙ্গে লিয়াজোঁ রক্ষা করতেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই স্বাধীনতাবিরোধী কাজে বড় ভাইকে সার্বিক সহযোগিতা করেন। পাক আর্মিদের কাছ থেকে গুলি এনে রাজাকারদের সাপ্লাইয়ের কাজটি তিনিই করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকায় তার রাজাকার ভাইয়ের মালিকানাধীন প্রিন্টিং প্রেসে তিনি ম্যানেজার হিসেবেও চাকরি করেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ১৯৯৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।
২৭ মে, ২০১০ এ দৈনিক আমারদেশএই নিয়ে একটি ব্যাপক অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করে। পত্রিকাটি লেখে, নেজামে ইসলাম পার্টি ও অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইউনানী চিকিত্সক ও ঢাকা তিব্বিয়া হাবিবিয়া ইউনানী কলেজের অধ্যক্ষ হাকিম খুরশিদুল ইসলামের চার ছেলে।
তারা হচ্ছেন যথাক্রমে হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম ও মোরশেদুল ইসলাম। ১৯৫৭ সালে হাকিম খুরশিদুল ইসলামের মৃত্যুর পর বড় ছেলে হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম এ কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। পর্যায়ক্রমে তিনি এ কলেজের অধ্যক্ষ হন। একই সঙ্গে তিনি নেজামে ইসলাম পার্টির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। পরে তিনি তত্কালীন পাকিস্তান নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক হন। ১৯৬৯ সালে এ দেশে পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন জোরদার হলে নেজামে ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষায় প্রচারণা চালানোর জন্য ‘নেজামে ইসলাম’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করা হয়। হাকিম আজিজুল ইসলাম এ পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শেখ মুজিবুর রহমানসহ পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে তিনি এ পত্রিকায় ‘ইবলিশের দিনলিপি’ নামে প্রতি সপ্তাহে একটি বিশেষ সম্পাদকীয় লেখেন।
মাত্র ৭ বছর বয়সে পিতাকে হারিয়ে কামরুল ইসলাম বড় ভাই হাকিম আজিজুল ইসলাম ও ভাবী ফয়জুন নেছা রানুর স্নেহাশীষে বড় হতে থাকেন। বেগম ফয়জুন নেছা অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সম্পর্কে আমার দেশকে বলেন, ১৯৬১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি আমি তাদের পরিবারে আসি। এ সময় কামরুল ছিল ১০-১১ বছরের কিশোর। আমার স্বামীই তার ভাই-বোন নিয়ে ১৩-১৪ জনের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। ছোট ভাই-বোনদের পড়ালেখার খরচ জোগাতেন তিনিই। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় কামরুলের বয়স ছিল ২১ বছর। ওই সময় আমরা সবাই এক বাসাতেই ছিলাম। যুদ্ধে তার স্বামী হাকিম আজিজুল ইসলাম ও দেবর অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অতকিছু বলতে পারব না এবং আমার পরিবারের বিরুদ্ধে যায়- এমন সত্য প্রকাশ উচিত হবে না। তবে এতটুকু বলতে পারি, স্বাধীনতার পরপরই বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের একজন এমপির নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী আমাদের বাসায় হামলা করে এবং আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে হামলাকারী মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের সবাইকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকিও দিয়ে যায়। এর একদিন পরেই মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা আমার স্বামীর পরিধেয় বস্ত্র ও চশমা আমার কাছে পাঠায়। পরে আমার দেবর কামরুল ইসলাম ও মামুন নামে একজন ম্যাজিস্ট্রেট বহু খোঁজাখুঁজির পর একটি পরিত্যক্ত গর্ত থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় আমার স্বামীকে উদ্ধার করেন।
পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকার ৪৮/১, আজগর লেনে অবস্থিত অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের বাড়ির আশপাশের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ মাসই বড় ভাই হাকিম আজিজুল ইসলামের সঙ্গে ছিলেন। আজিজুল ইসলাম ২০০৫ সালে মারা যান। পিতা হাকিম খুরশিদুল ইসলামের রেখে যাওয়া জায়গায় তারা ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ৫ তলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। বর্তমানে এ বাড়িটি ইসলামী ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামকে আমি শিশুকাল থেকেই চিনি। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বড় ভাইয়ের সঙ্গেই থাকতেন এবং তার কাজে সহযোগিতা করতেন। ১৯৯৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। এর আগে ১৯৮৫ সালে এলএলবি পাস করে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৯৯৪ সালে তিনি ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ৬৪ নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত পার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। এ নির্বাচনে তিনি বিএনপি প্রার্থী কামালউদ্দিন কাবুলের কাছে পরাজিত হন।
তিব্বিয়া হাবিবিয়া কলেজে হাকিম আজিজুল ইসলামের এক সময়ের সহকর্মী জানান, আজিজুল ইসলাম সাহেব ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। কলেজে যোগ দেয়ার আগে তিনি নেজামে ইসলাম পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি প্রেস ব্যবসা করতেন এবং একটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। হাকিম আজিজুল ইসলামের প্রেসেই কামরুল ইসলাম ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন।
এ বিষয়ে আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে আমার দেশকে তিনি বলেন, আমার ভাই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেননি। তিনি রাজাকার কিংবা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহযোগী ছিলেন—এ ধরনের কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। মুক্তিযুদ্ধে তার নিজের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম।
আশিকুর রহমান
আওয়ামী লীগের বর্তমান কোষাধ্যক্ষ আশিকুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় টাঙ্গাইলের এডিসি ছিলেন। এই এডিসিরাই রাজাকার, শান্তিবাহিনী নিয়োগ দিত। টাংগাইলের মুক্তিযোদ্ধারা আশিকুরের রাজাকারী চরিত্র সম্মন্ধে সম্যক অবহিত। মার্চ ৩১, ২০১০ এর এক সমাবেশে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আশিকুর রহমানের যুদ্ধকালীন সময়ের বিভিন্নকর্মকান্ডের সমালোচনা করে বলেছেন, আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেক যুদ্ধাপরাধী আজ নেতৃত্বের আসনে সমাসীন।
মোসলেম উদ্দিন, এম, পি
আওয়ামী লীগের এম পি মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিয়ে রিপোর্ট ছেপেছে আওয়ামী এমপি সাবের হোসেনের পত্রিকা ভোরের কাগজ , ৮ এপ্রিল ২০১০।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ মহাজোট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলাটি হয়েছে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক ও জোড়বাড়িয়া গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলী মণ্ডলের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ১০৯/১১৪/১১৩/১৩(ক)৩০২/২০১/৪৩৬/৩৭৯/৩৪ ধারায় অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিনসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলাটি করেছেন।
মামলার এজাহারে অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিনসহ বিবাদীরা স্বাধীনতাবিরোধী, রাজাকার, আলবদর, আলশামস, দালাল, যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি, দেশদ্রোহী ও আইন অমান্যকারী লোক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলাটি করার পর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফর রহমান শিশির মামলাটি গ্রহণ করে ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, ১৯৭১ সালের ২৭ জুন দুপুর ২টায় সব বিবাদী পাকবাহিনীসহ মামলার বাদী জালাল উদ্দিনের বাড়ি লুণ্ঠন করে অগি্নসংযোগ করে বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রাজ্জাক, আবদুস সালাম, আবদুল মান্নানের বাড়িসহ আরও ৪-৫টি বাড়ি ভস্মীভূত করা হয়।
নোয়াখালীর ওবায়দুলল্লাহ মজুমদার ও চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত ‘এমপিএ’ অধ্যাপক শামসুল হক
নোয়াখালী থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের ‘এমএনএ’ (জাতীয় পরিষদ) মো. ওবায়দুলল্লাহ মজুমদার ও চট্টগ্রাম থেকে নির্বাচিত ‘এমপিএ’ (প্রাদেশিক পরিষদ) অধ্যাপক শামসুল হক দু’জনই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর তৈরি এমএ মালেকের নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। তারা দুজনই পরলোকগত।
এসব নিয়ে আমাদের সময়, ২৮ ও ২৯ এপ্রিল ২০১০ এ “আওয়ামী লীগেও ছিল যুদ্ধাপরাধী! সেই তালিকা তৈরি করছে জামায়াত” এবং “নির্বাচিত সংসদ সদস্য হয়েও আওয়ামী লীগের ২৫ নেতা পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মেলান” নামে চমৎকার দুইটা রিপোর্ট প্রকশিত হয়। সেগুলোর উপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হয়েছে নিম্নোক্ত প্রতিবেদন।
তালিকাভুক্ত অপর আওয়ামী লীগ নেতারা হচ্ছেন-
চট্টগ্রামের প্রাদেশিক আসন ২৪ থেকে নির্বাচিত ‘এমপিএ’ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, পটুয়াখালী থেকে নির্বাচিত ‘এমপিএ’ মুজিবুর রহমান তালুকদার, যশোর থেকে নির্বাচিত ‘এমপিএ’ মো. মঈনুদ্দীন মিয়াজী, খুলনার ‘এমপিএ’ হাবিবুর রহমান খান, বগুড়া থেকে নির্বাচিত গণপরিষদ সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে নির্বাচিত ‘এমএনএ’ জহির উদ্দিন, লে. কর্নেল একেএম মাহবুবুল ইসলাম (পাবনা), সৈয়দ হোসেইন মনসুর (পাবনা), মো. আবদুল গাফফার (খুলনা), মো. সাঈদ (খুলনা), মোশাররফ হোসেন শাহজাহান, একে ফায়জুল হক (বরিশাল), এবিএম নুরুল ইসলাম (ফরিদপুর), আমজাদ হোসেন খান (ফরিদপুর), মো. নুরুল ইসলাম (ঢাকা), আখতারুজ্জামান (ময়মনসিংহ), সৈয়দ বদরুজ্জামান ওরফে এসবি জামান (ময়মনসিংহ), ডা. আবুল হাসেম (সিলেট)।
উল্লেখিত ২০ নেতার প্রত্যেকে জাতীয় পরিষদ অথবা প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। দৈনিক পাকিস্তানও আজাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় এসব নেতার স্বাধীনতাবিরোধী বিবৃতি প্রকাশ হয়। তালিকাভুক্ত এসব আওয়ামী লীগ নেতারা মুক্তিযুদ্ধের সময় কেবল বক্তৃতা বিবৃতি দিয়ে ইয়াহিয়া সরকারের পক্ষই নেননি, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা করেন বলেও তাতে উল্লেখখ আছে। যে কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়েই সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কিছু গণপরিষদ সদস্যের সদস্য পদ বাতিল করা হয়। অনেকের নাগরিকত্বও বাতিল করা হয়েছিল। উলেস্নখিতদের অনেকেই ইতোমধ্যে মারা গেছেন।
‘৭১ সালের ৩ জুলাই সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানকে খণ্ডবিখণ্ড করার জন্য জনগণ আমাকে ভোট দেয় নাই।’ ৬ জুলাই মুজিবুর রহমান তালুকদার পৃথক বিবৃতিতে ‘পাকিস্তানকে খণ্ড-বিখণ্ড করার জন্য আওয়ামী লীগের মতলব সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা ছিল না’ বলে মন্তব্য করেন।
হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘পাকিস্তানএক ও অবিচ্ছেদ্য। পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে পারে এমন কোনো শক্তি পৃথিবীতে নেই।’
সাবেক ধর্মপ্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম
একাত্তর সালে তিনি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তখন ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমজাদ হোসেন, টাঙ্গাইলের সাবেক আওয়ামী লীগ এমপিএ খোদাবক্স মুক্তার, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও মহকুমা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মো. ফিরোজুর রহমান, ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক আবদুস শুকুর মিয়া, ফরিদপুর আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জলিল মিয়া মোক্তার, অ্যাডভোকেট কাজী খলিলুর রহমান, অ্যাডভোকেট জামাল উদ্দিন মিয়া, চট্টগ্রাম সদর মহকুমা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আবুল বাশার, নেত্রকোণার আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল ইসলাম খান, নেত্রকোণা শহর আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, মহকুমা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি চাঁদবক্স পাটওয়ারী মোক্তার, নেত্রকোণার বায়লাতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি ডা. গিয়াসউদ্দিন আহমদ, নেত্রকোণা শহর আওয়ামী লীগ সদস্য সোহরাব হোসেন, নেত্রকোণা মহকুমা আওয়ামী লীগ সদস্য এমদাদুল হক, চাঁদপুর আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. মুজিবুর রহমান চৌধুরী, চাঁদপুর মহকুমা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন পাটওয়ারী মোক্তার, চাঁদপুর রেডক্রস সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট ফজলুল হক, চাঁদপুর মহকুমা আওয়ামী লীগের কার্যকরি সদস্য খুরশিদ আলম চৌধুরী, মহকুমা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ বজলুর রহমান শেখ, চাঁদপুর আওয়ামী লীগ সদস্য ও তরপারচান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান মৃধা, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ও ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজিজ শেখ পাটওয়ারী, চাঁদপুর আওয়ামী লীগ সদস্য ও ঠিকাদার মোফাজ্জল হোসেন, ফরিদগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. নুরুল ইসলাম, রাজশাহীর সোহরাওয়ার্দী আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান, যশোর আওয়ামী লীগ নেতা মীর তৈয়ব, মোহাম্মদ আবদুল হাকিম বিক্রমপুরী।
নেত্রকোনা শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, তিনি আওয়ামী লীগের বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব সম্পর্কে অবহিত ছিলেন না। তিনি মুসলমানদের চিরশত্রু ভারতের সমর্থনপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী দুষ্কৃতকারীদের উৎখাতকল্পে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জনপ্রতিনিধি হয়েও আওয়ামী লীগের পঁচিশ নেতা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। তারা কেউ ছিলেন এমএনএ (জাতীয় পরিষদ সদস্য) আবার কেউ ছিলেন এমপিএ (প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য)। হানাদার বাহিনীকে তারা সবধরনের সহযোগিতা দিয়েছেন। দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গেও তাদের কয়েকজন যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে সরকারি ও দলীয় সিদ্ধন্তে ‘৭১ ও ‘৭২ সালেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
মুজিব নগর সরকারের মন্ত্রিপরিষদ, বঙ্গবন্ধু সরকার আমলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্তপ্রকাশিত কিছু গ্রন্থ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এই পঁচিশ জনের মধ্যে কয়েকজন পরবর্তীকালে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে মন্ত্রীও হন।
এরকম পঁচিশ জনের মধ্যে সাতজন ‘৭১ সালের ২৬ মার্চ রাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে পাকিস্তানী বাহিনীর সঙ্গে সমঝোতা করে মুক্তি পান এবং পাকবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেন।
তারা হচ্ছেন_ একেএম মাহবুবুল ইসলাম (পাবনা), একে ফায়জুল হক (বরিশাল), অধ্যাপক শামসুল হক (চট্টগ্রাম), অংশু প্রু চৌধুরী (পার্বত্য চট্টগ্রাম), ডা. আজাহার উদ্দিন (ভোলা), একেএম মাহবুবুল ইসলাম (সিরাজগঞ্জ) ও আহমদ সাগির হোসেন।
এছাড়া তৎকালীন আওয়ামী লীগ থেকে আরো যেসব নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি স্বাধীনতার বিরোধিতা করেন তারা হচ্ছেন_ আবু সোলায়মান মণ্ডল (পীরগঞ্জ, রংপুর), আজিজুর রহমান (গাইবান্ধা), নুরুল হক (রংপুর), এনসান আলী মুক্তার (টাঙ্গাইল) একেএম মোশাররফ হোসেন (ময়মনসিংহ), আফজাল হোসেন (নারায়ণগঞ্জ), ওবায়দুলস্না মজুমদার (নোয়াখালী), সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (চট্টগ্রাম), মো. মঈনুদ্দীন মিয়াজী (যশোর), হাবিবুর রহমান খান (খুলনা), মো. হাবিবুর রহমান (বগুড়া), জহির উদ্দিন (মোহাম্মদপুর, ঢাকা), সৈয়দ হোসেইন মনসুর (পাবনা), মো. আবদুল গাফফার (সাতক্ষীরা), মো. সাঈদ (খুলনা), মোশাররফ হোসেন শাহজাহান (ভোলা) এবিএম নুরুল ইসলাম (ফরিদপুর), সৈয়দ বদরুজ্জান ওরফে এসবি জামান (ময়মনসিংহ)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময়ে তাদের অনেকের নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছিল। (এ্যাডভোকেট নয়ন খান)
আল্লাহ সকলকে হেদায়েত দান করুন। আমিন!
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
@দূর থেকে, apnarআপনার মন্তব্যটা যদিও আমার পোস্টের সাথে এক বিন্দু পরিমাণ প্রাসঙ্গিক নয় তারপরেও অন্যান্য ব্লগার রা যাতে বিভ্রান্ত না হয় তাই দুই এক পয়সা যোগ করতে চাই।
জামাতী ইসলাম নতুন এক ভং ধরেছে ইদানীং। এই ভাওয়ের নাম হচ্ছে ” টু কু-কিউ”। এইটা একটা ডিফেন্স। নুরেমবার্গ ট্রায়াল থেকে শুরু করে পৃথিবীর অনেক ট্রায়ালেই এই ভং যুদ্ধাপরাধীরা খুবই ব্যার্থতার সাথে ধরেছিলো। এই ভং একটা আইনী ডিফেন্স। এই ডিফেন্সের মানে হচ্ছে ” আচ্ছা যান আমি ধরে নিলাম আমি অপরাধী, তাইলে যারা বিচার করতেসে তারাও অপরাধী” এইটাই হচ্ছে ডিফেন্সের মূল কথা। জানিনা এই ডিফেন্স দিয়ে কি প্রমাণিত হয়। আমার কাছে এই ডিফেন্সটাকে একটা ছাগলামী মনে হয়। প্রকারান্তরে অপরাধী এইটাই স্বীকার করে নিচ্ছে যে, “হ্যা আমি আবুল অপরাধ করেছি ঠিকি, মোকলেইচ্চাও করেছে”।
একটা উদাহরণ দেই,
সে সময় পাকিস্তানী জান্তারা ক্ষেপা ছিলো আওয়ামীলীগ তথা শেখ মুজিবের দলের উপর। সেনাবাহিনী যখন এটাক করলো তখন সেনাবাহিনীর সমর্থনে এবং পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো জামাত। এখন পাকিস্তানী বাহিনী যখন এটাক করবে তখন লীগ পালিয়ে যাবে কেননা তখন হানাদারদের মূল লক্ষ্যই তো থাকবে আওয়ামীলীগ। আর তার সুযোগ নিবে জামাত, কেননা জনপ্রিয়তা কিংবা জনগনের ম্যান্ডেটে তারা কোনোদিনি ক্ষমতায় বা রাষ্ট্রের শাষন ব্যাবস্থায় আসতে পারবে না, এটা তারা জানে। সুতরাং এটা তো অঙ্গকের মত সোজা যে, এই সময় জামাতই বাংলাদেশে হানাদারদের চামচা হয়ে নেতাগিরি ফলাবে এবং সেখানে তাদের রাজত্ব কায়েম করবে। এত সহজ একটা হিসাব বুঝতে পারেন না, আর নিয়ে এসেছেন আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান থিওরী???? হাস্যকর!!!! সেই সময় আওয়ামীলীগ তো দূরের কথা সাধারণ মানুষ জান নিয়ে পালিয়ে বাঁচে নাই, আর আপনি এসেছেন এখানে আমাদের ভূগোল পড়াতে!!!!
গোলাম আজম-খাজা খয়ের উদ্দিন শান্তিবাহিনী গঠন করেছে ৯ ই এপ্রিল ১৯৭১ সালে। এটা তো আমার কথা না। এটা জামাতের মুখপাত্র সংগ্রামের কথা। এছাড়াও জামাত কি কি করেছে, কি কি বলেছে তার সকল প্রমাণ আপনি এই লিঙ্কে গেলেই পাবেন। দেখে নিন।
আজকে পাকিস্তানের পত্রিকা দি টাইমস বোমা ফাটিয়েছে। তারা বলেছে যে, একাত্তরে পাকিস্তানী বাহিনীর থেকেও অধিক হিংস্র ছিলো জামায়াতে ইসলামী। আপনাদের পেয়ারের পাকি বন্ধুরা যেখানে তাদের পেপারে এই কথা বলছে, আমরা আর কি বলব আপ্নিই এখন বলে দিন। আসুন দেখি- তারা কি বলছে-
আর আপনি বললেন শেখ মুজিব নাকি চেয়ার ছুড়ে স্পীকার শাহেদ আলীকে হত্যা করেছে। কত মিথ্যা একটা প্রোপাগান্ডা আপনি ছড়ালেন, আপনি কি তা জানেন? আপনার নামে মামলা হওয়া উচিৎ আসলে। ৩০ আগস্ট (১৯৫৮) পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের বাজেট অধিবেশন শুরু হলে ন্যাপ সদস্য মাহবুব আলী স্পীকার আব্দুল হাকিমের ( কৃষক শ্রমিক দলভুক্ত) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। তাঁর বিরুদ্ধে অধিকাংশ সদস্য অনাস্থাসূচক মনোভাব প্রকাশ করলে ডেপুটি স্পীকার শাহেদ আলী (আওয়ামী লীগের) কর্মভার গ্রহণ করেন। ২১ সেপ্টেম্বর অধিবেশন চলাকালে কৃষক শ্রমিক পার্টির সদস্যরা সামান্য তর্ককে কেন্দ্র করে ডেপুটি স্পীকার শাহেদ আলীকে আক্রমণ করলে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। ২৫ সেপ্টেম্বর ৯১৯৫৮) তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ডেপুটি স্পীকার শাহেদ আলীর উপর এই আক্রমণ ছিল কৃষক শ্রমিক পার্টি ও মুসলিম লীগের সম্মিলিত পদক্ষেপ। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল যে কোনো প্রকারে বিদ্যমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি ও সামরিক শাসন জারির পথ প্রশস্ত করা। তারই চূড়ান্ত পরিণতি পরবর্তী ৭ অক্টোবর (১৯৫৮) পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি এবং পাকিস্তানের রাজনৈতিক মঞ্চে জেনারেল আইয়ূব খানের আগমণ। -সূত্র : বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাস, ১৯৪৭-১৯৫৮, ডঃ মঞ্জুর ইসলাম মঞ্জুর।
যেই নিউ ইয়র্ক টাইমস এখন জামাতের সাফাই গাইছে তারাই সে সময় কি লিখেছিলো আসেন দেখি-

এছাড়াও এই বিষয়ক কয়েকটা লেখা দেখুন-
প্রথম উদাহরণ
২য় উদাহরণ
৩য় উদাহরণ
আর আপনি আওয়ামীলীগের যেসব নেতাদের কথা বলছেন যে, তারাও যুদ্ধাপরাধী ছিলো কিংবা অভিযোগ রয়েছে, এমনটি হলে আমরা সবাই চাই বিচার। বিচারের কাঠগড়ায় সব অপরাধীকেই দাঁড়াতে হবে। একটা ডাকাতির মামলায় যদি ৫০ জন অভিযুক্ত থাকে তখন সেই ৫০ জনের ভেতর যদি ১০ জন গ্রেফতার হয় আর ৪ জন না হয় সেটাতে আপনি সরকারকে ধরতে পারেন, সরকারের কাছে জিজ্ঞেশ করতে পারেন,আপনি তাদের বিচারে গঠিত আদালতের নজরে আনতে পারেন। কিন্তু তাই বলে কি ওই ধৃত ১০ জন বাকী ৪০ জনকে না ধরাতে ডাকাতি করবার অভিযোগ থেকে মুক্ত হয়ে যায়? না যেতে পারে? আপ্নি-ই আমাকে সেটি বুঝিয়ে বলুন। যেসব আওয়ামীলীগ নেতাদের কথা এখানে উঠালেন তারা যদি সত্যই যুদ্ধাপরাধী হয়ে থাকে তবে তাদের বিচারও হবে বাংলার মাটিতে। আমরা চাই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। কে কোন দলের এটা দেখবার টাইম নাই।
আর বিচার মাত্র শুরু হয়েছে। আগে ধৃত ৮ জনের বিচার চলুক। এই প্রসেস টা বাঁধাগ্রস্থ না হলে আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশের সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার একে একে এই স্বাধীন ট্রাইবুনালই করবে। আর তাছাড়া আপনি যেসব অপরাধীদের কথা বললেন, তাদের অপরাধের বিবরণ ট্রাইবুনালের কাছে পাঠান। তাদের মনোযোগ আকর্ষন করুন। অবশ্যই ট্রাইবুনাল তা আমলে নিবে।
কিন্তু অমুক দলের অমুক যুদ্ধাপরাধী অথচ বিচার হচ্ছে না, কিন্তু জামাতের নেতাদের বিচার হচ্ছে শুধু, এই টাইপ হাসির কথা বলে আর হাস্যকর তথ্য দিয়ে হাসির পাত্র হবেন না।
কেমন? মনে থাকবে নিশ্চই
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
আর বঙ্গবন্ধু সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করেছেন বলে যেই প্রোপাগান্ডা চালানো হয় তারও মুখোশ উন্মোচিত করেছি এইখানে। দেখে নিন
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
গোলাম আজমের মিথ্যাচার সম্পর্কে জানতে অমি রহমান পিয়ালের কয়েকটি লেখা আপনাকে পড়তেই হবে-
১
২
৩
এত কিছুর পরেও যদি আপনার চোখ খোলে তবেই স্বার্থক
উদাশ পাখি বলেছেনঃ
নিজুম ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনি গোলাম আজম কে দোষি করতে যাইয়া অনেক সত্য ঘটনা প্রকাশ করেছেন। এটা মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে যে গোলাম আজম আসলেই নির্দোশ। যে রিপোর্ট গুলো আপনি প্রকাশ করেছেন তা আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেক উপকার আসবে।
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
গোলাম কে দোষে করবার কিছু নেই। সে বাই ডিফল্ট দোষী। ১৯৭১ সালে তারা করা কর্মকান্ড দেখুন।
লিঙ্ক
arian বলেছেনঃ
ভেরি গুড
মুহাম্মদ আমিনুল আবেদীন বলেছেনঃ
দূর থেকে বলছেন ভাই ?
———————-কত দূর থেকে? আপনার নাম কী ? কোন স্থান থেকে ? পাকিস্তান ? তবে না বলাই বাহুল্য ! পাঠক সমাজ বুঝে নিয়েছেন। কিন্তু কষ্ট লাগে আপনাদের এত বেহায়া পনা দেখে।আপনি লেখকের তত্ত্য নির্ভর লেখার উপর আমার দেশ,আমাদের সময়,সংগ্রাম,দিনকাল এসব নিয়ে দাড়িয়ে গেলেন? সাবাস ! আর এসব পত্রিকা সূর্য পূর্ব দিকে অস্ত যায় লেখলেই তা মানুষ সতত মেনে নেয় -তা অন্তত সচেতন পাঠক মাত্রই জানেন ।
শেখ মুজিব যখন স্কুল ছাত্র তখন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাক মন্ত্রী হিসেবে তা পরিদর্শনে যান। শেখ মুজিব স্কুলের সমস্সার দাবি নামা নিয়ে তার সামনে গিয়ে পেশ করেন। এত ছোট বয়সে এরকম সাহস দেখে বড়বাঘ (হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ) ছোটবাঘ (শেখ মুজিব) কে বলেছিলেন ….একদিন তুমি বড় হয়ে এদেশের নেতৃত্ব দেবে । পরবর্তীতে সে কথাই সত্যি হল। হায়রে ইতিহাস ! হায়রে মানুষ ! মানুষ এত বিকৃতি ঘটাতে পারে? তবে আপনার মত যারা ওসব পত্রিকা পড়ে ইতিহাস জানে তাদের সবার ই একি দশা ই হবে। তবু ও একটি কথা চিন্তা করলে কষ্ট হয়, যে লোকটির ডাকে সাড়া দিয়ে দলমত নির্বিশেষে সবাই ঝাপিয়ে পড়ে (পাক-পন্থী রা ছাড়া )লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা এনে দিয়ে স্ব পরিবারে হত্যা করে জাতিকে আবার কলুষিত করল,তার পর ও কী এই মিথ্যাচার বন্ধ হবে না । একজন মৃত লোকের বিরুদ্ধে বলা কি গুণাহের কাজ নয় মুসলিম ভাইগন?
আওয়ামিলীগে যুদ্ধাপরাধীর বিরাট ফিরিস্তি মানলাম। ওই নেতাদের বাবা দাদা রাজাকার ছিল। এখন তার প্রজম্ম আওয়ামি যোদ্ধা বনে গেছে। …মানলাম! ইসলাম ধর্মের ফয়সালা মতে যদি কোনও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী মুসলিম হয়,তবে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়ে নিস্পাপ হয়ে যায়। তাহলে রাজাকারের বাচ্চা রাজকারপন্থী (গুনাহগের) না হয়ে আওয়ামি হলে তো ভালই হল। সে কেন রাজাকার হবে? তার শাস্তির কথা কোন ধর্মে, কোন আইনে আছে ? এখন তো মুক্তিযোদ্ধার ছেলে জামাতি হলে দম্ভ করে বলতে দেখি। কোনটা ভাল ?
যুদ্ধাপরাধীদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার কথা লিখেছেন,তাহলে এই গোলাম আজম পালিয়ে গিয়েছিল কেন?1975 সালে শেখ মুজিবকে মারার সময় ও 11337 জন যুদ্ধাপরাধী জেলে ছিল তারা কী দোষে জেলে ছিল? তাদেরকে কে ক্ষমা করল? তিনি কবর থেকেই মাফ করেছেন ? এসব মিথ্যাচার বাদ দেন।সব কিছুর সীমা থাকে। এটা অতিক্রম করলে তা আল্লাহ ও সজ্য করেনা । তাই আপনারা অন্তত মিথ্যার বেসাতি না সাজিয়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে চেষ্টা করুন। যদি আল্লাহর উপর আস্থা থাকে , মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে সত্যের সাহায্যকারী হিসেবে আল্লাহ রয়েছে ,আর মিথ্যাবদির বিচার ও তিনি করবেন –অন্তত মুসলিম হিসেবে এই বিশ্বাস টুকু রাখতে পারছেন না?
আল্লাহ দূরের ও কাছের সব ভাইবোন দের মনে ধৈর্য্য ও শান্তি এনায়েত করুন। আমিন । চুমমা আমিন।
rubel বলেছেনঃ
প্রিয় ইসলাম প্রিয় ভাই/বোনেরা
আসসালামুল আলাইকুম
নিঝুম মজুদার এখানে অনেক বিভ্রান্তিকর/সাজানো/মিথ্যা কিছু লিংক দিয়েছেন আপনার কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।
ধন্যবাদ
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
রুবেল ভাই ৭৭ জনের হিসাব তো দিলএন না। সবার সামনে মিথ্যেবাদীতে প্রমানিত হলেন। আফসোস
sukun বলেছেনঃ
[অশোভন প্রকাশভঙ্গি গ্রহণযোগ্য নয় বিধায় মন্তব্য মুছে দেয়া হলো :ব্লগ টিম]
মিনহাজুল আবেদীন বলেছেনঃ
ও ভাই আপনি চাটুকারদের মত চামচামী না করে আগে বুঝতে শিখুন।
লিখার জন্য আরো টাইম লাগবে।
মিথ্যা বলবেন তো নিজেও সেই অপরাধে অপরাধী হবেন।
আল্লাহ আপনাকে বোঝার শক্তি দিন।
সুমন বলেছেনঃ
নিঝুম মজুমদার,গালাগাল করা ভাল মানুষের কাজ না.
সরাসরি বলেছেনঃ
প্রিয় বন্ধুরআ, আপনাদের মধ্যে কী কেউ আছেন যিনি অকটু উদ্যোগী হয়ে ঐ ব্লগের সব লিখা আকসাথে করে একটা বই বানাতে পারবেন? এই ইতিহাস, এই দলিল খুব মূল্যবান। বইটার প্রিন্ট কপি খরচ করতে যদি কোনও সহযোগিতা লাগে তাহলে আমি সেই সহযোগিতাতে সহ যোদ্ধা হতে চাই। আমাদের পূর্ব পুরুষরা দিয়েছেন সাধীনতা । আমাদের উচিত এখন টা ধরে রাখা। এই সব ইতিহাস সাহায্য করবে অতীতে সাধীনতার বিপক্ষে কী ধরনের কাজ হয়েছে টা জানতে। আজ আমাদের এই ক্ষুদ্র চেষ্টা রেখে যেতে হবে ভবিষত প্রজন্মের জন্য। ধন্যবাদ।
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
rubel বলেছেনঃ
এই দেশে আছে কিছু বুদ্ধিজীবি টুপি, দাড়ি আর ইসলামের কথা বললে বলে মৌলবাদী।
আসুন বন্ধুরা সবাই বাঙলাদেশকে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্টা করতে এগিয়ে আসি। আর শয়তান রুপী নমরুম, নাস্তিকদের ………..
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
ভাই ৭৭ জনের হিসাব তো দিলেন না
হৃদয়ে বাংলাদেশ বলেছেনঃ
আমি দৃঢ়ভাবে নিঝুম মজুমদারের বিশ্লেষন গ্রহন ও সমর্থন করছি। তবে আইনের ছাত্র নিঝুমের কাছে শুধু ঔৎসুক্য থেকে প্রশ্ন করছি, আমাদের জজসাহেবরা কি স্বর্গ থেকে এসে রায় লিখে ফের স্বর্গে চলে যান? আমাদের এই ধুলিধুসরিত, আনন্দ-বেদনার পৃথিবীর কোন কিছুই কি তাদের স্পর্শ করেনা? কোন মানবিক কিছুই কি বিচার্য নয়?
-নিঝুম মজুমদার বলেছেনঃ
@হৃদয়ে বাংলাদেশ ভাই, আপনার মত এই প্রশ্নটা আমারো মাঝে মধ্যে মনে হয়। দীর্ঘঃশ্বাস ছেড়ে মেনে নেই অনেক কিছুই…
হৃদয়ে বাংলাদেশ বলেছেনঃ
@বিবেকবান মুসলিম, নিঝুম মজুমদারের ব্লগতো আমরা দেখছি প্রামান্য তথ্য টইটম্বুর। আপনি “প্রাংরা” অভিযোগ কোথায় দেখেছেন, যদি একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের জানাতেন, তবে আমাদের জ্ঞান দিতেন তবে আল্লাহ আলীউল আলীম আপনাকে অশেষ সওয়াবের ভাগী করতেন।
আতিক বলেছেনঃ
সাংঘাতিক ব্যাপার ইন্টারনেটের ব্লগ জগৎ দেখতেছি প্রায় অধিকাংশটাই শিবিরের পোলাপাইন দখল করে নিছে।ওরা রাস্তা থুইয়া ইন্টারনেট জগৎটাকে দাওয়াতি কাজের যায়গা বানাইছে। কথায় কথায় ইসলাম মুসলমান যেমনে কয় মনে হয় বাংলাদেশে ওরা কয়টাই মুসলমান।