আমাদের প্রিয় বাংলাদেশের মত একটি উন্নয়নশীল দেশে মাদক আজ কতটা বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা আমার বুঝতে পারলেও অনেকে উপলদ্ধি করতে পারি না। প্রতিদিনই অসংখ্য নিষ্পাপ প্রান জড়িয়ে যাচ্ছে ইয়াবা,গাঁজা,ফেন্সিডিল সহ নাম না জানা অনেক মাদক দ্রব্যর অন্তরজালে। যে বয়সটিতে কিশোর-কিশোরীরা ব্যাস্ত থাকবে খেলাধুলা,আড্ডা,পড়া লেখা সহ আরো নানা সমাজ ও দেশ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে সেখানে আজ তারা ক্রমেই নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছে মাদক নামক ভয়াবহ দানবের নিকট নিতান্তই নিজেদের বেখেয়ালে। একটি বিষয় যেটি সবচেয়ে ভয়াবহ তাহলো কিছুদিন পর পরই দেখতে পাই মাদকাসক্ত সন্তানের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পিতা-মাতা বাধ্য হয়ে অন্য কোন উপায় না পেয়ে নিজের আদরের সাতরাজার ধনকে তুলে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। সন্তানের পিতা মাতা হয়ে এ কাজটি করা কতক্ষানি কষ্টকর ও বেদনাদায়ক তা একমাত্র তারাই জানেন ও বুঝেন।
প্রতিদিনই সংবাদ মাধ্যমগুলোতে দেখা যায় দেশের কোথাও না কোথাও বিপুল পরিমানে মাদক দ্রব্য ধরা পড়ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সাথে ধরা পড়ছে সংশ্লিষ্ট বিক্রেতারাও কিন্তু কোন এক অজানা কারনে মাদক দ্রব্যগুলো সরকারের মালখানায় জমা হলেও বেরিয়ে আসছে ধরা পড়া মাদক বিক্রেতারা। আইনের দুর্বল ধারা প্রয়োগ করে কোনমতেই এসব মাদক বিক্রেতাদের রাখা যাচ্ছে না আইনের আওতায়। এভাবে চলতে থাকতে দেশ মেধাহীন হয়ে পড়তে খুব বেশী একটা সময় লাগবে বলে মনে হয় না। আমার নিজের পেশাজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে নিম্নের কিছু প্রস্তাব সরকার যদি একটু বিবেচনায় নেয় তবে মাদকের ভয়াবহ আগ্রাসন কিছুটা হলেও কমতে পারে, সেগুলো হচ্ছেঃ
**প্রচলিত মাদক নিয়ন্ত্রন আইনকে সম্পূর্ণ আকারে ঢেলে সজাতে হবে।
**মাদক আসক্তদের গ্রেফতারে উৎসাহী না হয়ে প্রকৃত মাদক বিক্রেতাদের গ্রেফতারে উৎসাহী হতে হবে।
**মাদক আইনে সাজার মেয়াদ বাড়ানো সহ এই অপরাধগুলোকে অ-জামিন যোগ্য অপরাধ হিসেবে মাদক নিয়ন্ত্রন আইন ও দণ্ডবিধিতে অন্তর্ভুক্ত করতে করতে হবে।
**আসামী ধরা পরার পরবর্তি ৯০ দিনের মধ্যে যেন জামিনের কোন আবেদন না করতে পারে তার ব্যাবস্থা রাখতে হবে।
**সহজলভ্য হিসেবে চিহ্নিত গাঁজা,ইয়াবা,ফেন্সিডিল কে কালো তালিকাভুক্ত করে এগুলো উদ্ধারে ও বিক্রি বন্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করতে এবং মোবাইল কোর্টকে মাদকের ব্যাপারে সাজা প্রদানের অসীম ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
এগুলোর সাথে মাদক আইনের মামলা বিচারের জন্য পারিবারিক আদালতের আদলে যদি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা যায় তবেই মাদক নিয়ন্ত্রন আইনের যথার্থ প্রয়োগ সম্ভব নয়তো আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যে অদ্ভুত এক আধারের পথে নিক্ষেপিত হবে তা হলফ করে বলা যায়।