তাজমহল দেখে মনে হয়

বিমূর্ত কবির
Published : 7 April 2015, 05:23 AM
Updated : 7 April 2015, 05:23 AM

 

সম্রাট শাহজাহান-কে ধন্যবাদ তাজমহলের মত অমর কৃর্তি তৈরী করার উদ্যোগ নেবার জন্য। তার চেয়ে বেশী ধন্যবাদ সম্রাজ্ঞী মমতাজ-কে স্বামীর আগে মৃত্যুবরণ করার জন্য । তা নাহলে
কোন ভাবেই  সপ্তাচশর্যের এই অন্যতম স্থাপনা আমরা দেখতে পারতাম না । সম্রাট শাহজাহানের জন্য বিষয়টা তেমন কঠিন ছিলনা যদি না তিনি এই সৃষ্টির স্তপতি না হয়ে থাকেন । তাঁর কাছে অর্থ-সম্পদ ছিল সেটা তিনি যোগান দিয়েছেন । তবে হ্যা, কঠিন ছিল যারা এর শিল্পি এবং স্থপতি তাদের জন্য । আমার মনে শুধু এই প্রশ্নটা জাগে , সম্রাট কি তার স্ত্রী-কে অমর করতে চেয়েছিলেন নাকি নিজে অমর হতে চেয়েছিলেন? কিংবা এই তাজমহল কি কেবল প্রেমের নিদর্শন নাকি আরো কিছু? নিজের সারাজীবনের কষ্টের উপার্জন ব্যায় করে কারো জন্য সমাধি তৈরী করা হয়তো কঠিন এবং সত্যিকারের ভালোবাসার নিদর্শন হতে পারে কিন্তু সাধারন মানুষের কাছ থেকে জোর করে আদায় করা করের টাকায় নিজের স্ত্রী-র জন্য সমাধি সৌধ প্রতিষ্ঠা করা কতখানি কঠিন! ইতিহাসে এমন কোন তথ্য কি আছে যে স্ত্রী-র মৃত্যুর পরে সম্রাট প্রতিদিন সন্ধ্যায় স্ত্রী-র কবরের পাশে বসে থাকতেন! সম্রাট কি স্ত্রী-র মৃত্যুর পরে তার স্বাভাবিক জীবন যাপন পদ্ধতি বিসর্জন দিয়েছিলেন? গলির ধারের যে ছেলেটি প্রতিদিন তার প্রিয়তমাকে শুধুমাত্র এক নজর দেখার জন্য অপেক্ষা করে এবং তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে , এবং অবশেষে একদিন তার প্রেমিকার তারই আঙ্গিনা দিয়ে অন্য বাড়িতে চলে যাবার মাধ্যমে তার ভালোবাসার সমাধী রচিত হয় । শোকে দুঃখে সেই ছেলেটি যখন নিজের জীবন বিসর্জন দেয় , সেই ছেলের প্রেম কি বড় নাকি সম্রাট শাহজাহানের প্রেম বড়? ভালোবাসার জন্য কার ত্যাগ বা অবদান বেশি? সম্রাটের নাকি গলির ধারের সেই ছেলেটির?