আমার জীবন কাহিনী

নিতাই বাবু
Published : 5 March 2016, 08:09 PM
Updated : 5 March 2016, 08:09 PM

আমি হলাম অসহায় অধম,ভাগ্য বঞ্চিত ব্যাক্তিদের মধ্যে একজ৷জন্মস্থান ছিল নোয়াখালির চৌমুহনী বজরা রেলষ্টেশনের পশ্চিমে মাহাতাব পুর গ্রামে৷বাবা চাকুরি করতেন নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়াধীন চিত্তরঞ্জন কটন মিলস্ আউট অফ সাইট কেলেন্ডারে"চাকুরীতে থাকা অবস্থায় কর্মস্থলে কেলেন্ডারের চাপে বাবার ডান হাতের চারটি আঙ্গুল থেঁতলে যায়, যার পরবর্তিতে এই অসুখেই বাবার মৃত্যূ হয়"আমি তখন ছোট ক্লাশ সিক্স এ পড়ি"অসহায় হয়ে গেলাম আমরা, তখন আমার বড় ভাই চাকুরি করে নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার আওয়াতাধীন আদর্শ কটন মিলে"চার বোন দুই ভাই আমরা,তখন আমার আর লেখা পড়ার নিশ্চয়তা নেই, হাল ছাড়লামনা আমি, বাদাম বিক্রী শুরু করে দিলাম স্কুলের খরচ চালানোর জন্য বহূ কষ্ট করিয়া অল্প কিছু লেখা পড়া করতে পারলাম!!তার পর আদর্শ কটন মালস্ টি বিক্রি হয়ে গেল, বিপদের উপর বিপদ যাচ্ছে, আদর্শ মিলস্ থেকে বিতারিত হয়ে চলে এলাম শীতলক্ষ্মা নদীর পশ্চিম পাড় নগর খাঁনপুরে, অভাবের কারনে তখন আমি রিক্সা চালানে শুরু করে দিলাম! রিক্সা মালিক মজিদ খাঁনপুরের লেচু(লেচ্ছা)মহাজন।

এমনি করে কেটে গেলো দুই বছর। বড় ভাই এক প্রাইভেট টেক্সটাইলে তাঁতে কাজ পেল৷আমার কষ্ট দেখে বড় ভাই আমাকে মাঝে মাঝে মিলে নিয়ে তাঁতের কাজ শিখাতো। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই আমি তাঁতের কাজ পেয়ে গেলাম।এই ভাবেই চললো আমাদের অভাবের সংসার, বিয়ের বাকি ছিল এক বোনের সেই বোনকেও বিয়ে দিলাম অতি কষ্ট করে৷ তারপর নিজেও বিয়ে করলাম৷ বিয়ে করার পর আমার সংসার আলাদা, আর বড় ভাইয়ের সংসার ও আলাদা হয়ে গেলো"মা আমার কাছে,আমার একটি মেয়ে সন্তান হওয়ার পর মা মৃত্যুবরণ করলো"দুই বছর পর আমার আরো একটি ছেলে সন্তান হলো, ছেলে আইএ পাস করার পর সেই ছেলে মৃত্যুবরণ করলো। মেয়ে বিয়ে দিয়েছি গোপালগঞ্জ"ছেলের রেখে যাওয়া নকিয়া c3 মেবাইলটা আমাকেই ব্যবহার করতে হচ্ছে"তখন দেশে 2G ইন্টারনেট,আস্তে আস্তে ইন্টারনেট ব্যবহার করছি,গুগলে একটি একাউন্ট তৈরি করলাম, তারপর বিভিন্ন ব্লগে প্রবেশ করতাম, আর ভাবতাম আমিও একটি ব্লগ তৈরী করবো সেই ব্লগে কোন লেখা লেখি করবোনা, কারন এই লেখালেখির কারনে আমাদের দেশে অনেক সন্মানীত ব্লগার ভাইকে মৃত্যূ বরণ করিতে হইয়াছে৷ আমার ব্লগে শুধু ছবি রাখবো। ব্লগ তৈরী করেছি, ছবি রাখবো! কার ছবি রাখবো? আমার এলাকার মানুষকে আমি খুব ভালবাসি, ভাবলাম এলাকার প্রতিটি মানুষের একটি করে ছবি যদি রাখতে পারি তবে তো ভাল হয়, মৃত্যূর পরও তাদের ছবিগুলো শুধুই ছবি হয়ে থাকবে৷আর পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিনই ছবিগুলি চির অমর হয়ে থাকবে।

ছোটরা বড় হচ্ছে আবার বড়রা বিদায় নিচ্ছে,আমাদের প্রজম্মরা যদি এই ঠিকানায়:- www.godnailrosulbag.blogspot.com ভিজিট করে দেখবে তাদের ছোট বেলার ছবি খানা ও তাদের প্রিয়জনের ছবিগুলো। তখন তাদের ও ভাল লাগবে আর আমার ও চেষ্টা স্বার্থক হবে"আমার প্রিয় পাঠক ভাইও বোনদের আমি অধম অনুরোধ করবো যে, একটু সময় নষ্ট করিয়া আমার এই ব্লগে ভিজিট করে আমাকে সূচীত করিবেন৷ভাল লাগিলে মন্তব্য দানের জন্য রহিল অনুরোধ"প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা,আমি কোন লেখক নই কোন সাহিত্যিক ও নই,আর এই লেখাটা আমি আশা করছি যে,সারা জীবন বিডিনিউজ ব্লগ টিমে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে৷তখন আমিও গর্ব করে বলতে পারবো আমার জীবনের একটা ডায়েরি বিডিনিউজ ব্লগ টিমে জমা আছে৷

প্রিয় সন্মানীত পাঠক ভাই ও বোনেরা আমার, আজ আমি একটি মোবাইলের সাহায্যে 3G ইন্টারনেট ব্যবহার করছি, আগামিকাল আর যদি এই 3G বা ইন্টারনেট ব্যবহার করিতে না পারি? তাই আমি আমার ব্যাক্তিগত তথ্য সঠিক ভাবেই এখানে উপস্থাপন করিলাম। প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা, এটা কোন ইতিহাস নয়, কোন গল্পও নয়, এটা শুধুই আমার একান্ত ব্যাক্তিগত জীবন কাহিনী। তবে আমার মনে হয় অনেক ভাই ও বোনেরা আমার অসহায় জীবনের কাহিনীটা পড়ার পর আমাকে ঘৃণা করিবেন। আর ঘৃণা করার কারনটা হলো, আমি গরীব, অসহায়, অল্পশিক্ষিত তাই। যাই হোক ঘৃণার পাত্র হলে হলাম দুঃখ নেই, তবু আমার জীবনের সত্য ঘটনাটা তো লিখতে পারলাম! প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা, আমার লেখার বানানে অনেক ভুল থাকিতে পারে, ভুল হলে সংশোধন করিয়া নিবেন। পরিশেষে অনুরোধ করে বলবো যে আমাকে ঘৃণা করিবেন না, আমিও একজন মানুষ। সবার শুভ কামনায় আমি নিতাই বাবু।