ভাসমান ‘ডকইয়ার্ড’ নারায়ণগঞ্জ

নিতাই বাবু
Published : 25 April 2016, 06:49 AM
Updated : 25 April 2016, 06:49 AM

ভাসমান ডকইয়ার্ড বন্দর থানাধীন লক্ষনখোলা সোমবাড়িয়া বাজার গুদারা ঘাঁট সংলগ্নএই ভাসমান ডকইয়ার্ড অবস্থিত৷

এই ভাবেই শুরু হয় মেরামতের কাজ৷

নারায়ণগঞ্জ,বন্দর থানাধীন লক্ষনখোলা সোমবাড়িয়া বাজার গুদারা ঘাঁট সংলগ্ন এই ভাসমান ডকইয়ার্ড অবস্থিত৷ বহু প্রাচীন এই ডকইয়ার্ডটি৷দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন রকমের দেশী বিদেশী জল জাহাজ,স্টীমার,মেরামতের জন্য এই ভাসমান ডকইয়ার্ডে আসে৷ এই ভাসমান ডকইয়ার্ডটি যেমন পানির উপরে ভাসমান,তেমনি পানি দ্বারা'ই সকল ক্ষমতা৷ যখন একটা জাহাজ বা স্টীমার মেরামতের জন্য এখানে আসে,তখন বৈদ্যুতিক পানির পাম্প দ্বারা ডকইয়ার্ডের ভিতরে পানি ভরতে আরম্ভ করে৷প্রায় একঘন্টা সময় লাগে পানি ভরতে৷পানি যখন ভরা শুরু হয়,তখন এই ডকইয়ার্ডটি আস্তে আস্তে ডুবতে থাকে৷একপর্যায়ে ৭/৮ফুট পানির নিচে ডুবে যায় এই ভাসমান ডকইয়ার্ডটি৷তখন মেরামতের জন্য আসা জাহজটিকে অন্য একটা সচল জাহাজে ঠেলে এই ডুবন্ত ভাসমান ডকইয়ার্ডের মাঝখানে নিয়ে যায়৷তারপর ডকইয়ার্ডের কর্মচারীগণের নির্দেশে আঁকা-বাঁকা সোজা করে ঠিক মাঝখানে পিলারের উপর রেখে দিয়ে সাহায্যকারী জাহাজটি সরে যায়৷

এরপর শুরু হয় ভাসমান ডকইয়ার্ডের পানি সেঁচা৷বৈদ্যুতিক মটর সংযুক্ত পাম্প দিয়ে যখন পানি সেঁচা শুরু হয় তখন ভাসমান ডকইয়ার্ডটি আবার আস্তে আস্তে জাগতে থাকে৷সম্পূর্ণ পানি সেঁচা শেষে দেখা যায়,যেন অলৌকিক ভাবে এতবড় জাহাজটি এই ভাসমান ডকইয়ার্ডের ভিতরে ঢুকেছে৷ এরপর শুরু হয় মেরামতের কাজ ঠাল্লুর,ঠুল্লোর,ধাম-ধুম হামারের শব্দ৷১০/১৫ দিন পর জাহাজের কাজ শেষ হবার পর আবার শুরু হয় পানি ভরার পালা৷আবার যখন পানি ভিতরে ভরে ডকইয়ার্ডটি ডুবানো হয়,তখন জাহাজটি আস্তে আস্তে ডকইয়ার্ড থেকে বাহির হয়ে চলে যায় নিজ গন্তব্যে৷ আর মেরামতের জন্য এর সাথেই আছে আরেকটি বিশাল বড় জাহাজের মত বোট৷ এই বোটে আছে ছোট বড় লেদ মেশিন৷ একটা জাহাজ মেরামতের জন্য যা কিছু লাগে সব আছে এখানে৷

আমি যখন ছোট ছিলাম,তখন মাঝে মাঝে বিকালবেলা মাছধরার বড়শি নিয়ে এই ডকইয়ার্ডে আসতাম মাছ ধরতে৷এখন আর আগেকার মত পরিষ্কার টলমলে পানি নাই মাছও নাই৷ তবুও ভরা'বর্যা মৌষুমে দেখা যায় বড়শি দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য,যদি জাতে চাই কি মাছ পেলেন দাদা? উত্তরে বলে কি আর পাবো!মাছ আছে নাকি?ঐ ডাইং এর পানিতে সব শেষ কইরা দিছে দাদা৷ যাই হোক,মাছ নাইবা পেলাম,কালের সাক্ষী এই ভাসমান ডকইয়ার্ড আছে!