আমরা সবাই জানি যে, জীব মাত্রই জীবন। তার খাবারের প্রয়োজন, আলোর প্রয়োজন, বাতাসের প্রয়োজন, বেঁচে থাকার জন্য নির্দিষ্ট স্থান ও সুযোগসুবিধা ও থাকার প্রয়োজন। এই পৃথিবীতে অনেক জীব আছে তাদের দেখাশোনার ও প্রয়োজন হয়না। তাঁরা অনেক প্রতিকুল পরিবেশে ও খেয়ে বেঁচে বড় হতে পারে। কিন্তু মাঝেমাঝে অনেক কিছুই আমাদের প্রশ্নের মধ্যে ফেলে দেয়। যেখানে বিজ্ঞান তথ্যপ্রযুক্তি আর বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানীরা সেই প্রশ্নের কুল-কিনারা খুঁজে পায় না। এমন একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে বড় বড় বিজ্ঞানীদের দীর্ঘ পঁঞ্চাশ বছরেও গবেষণা শেষ হয়নি, এখনো গবেষণা চলছে।
চলমান পাথর”( ইংরেজী: Sailing Stones বা Sliding stones ) প্রকৃতির এক বিস্ময়, যে পাথারগুলো আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় নিজে নিজেই স্থান পরিবর্তন করে ৷ পাথরগুলিকে চলমান অবস্থায় কেউ কখনো দেখেনি, তবু পাতলা কাদার স্তরে রেখে যাওয়া ছাপ থেকে পাথারগুলোর স্থান পরিবর্তন নিশ্চিত হওয়া যায় ৷ কিছু কিছু পাথরের কয়েকশ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন হয় ৷ এই ভারি ভারি পাথারগুলো কিভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়, সে রহস্য আজও উম্মোচিত হয়নি ৷ পাথরের টেইলে রেখে যাওয়া সূক্ষ্ম ছাপ থেকে বোঝা যায় পাথারগুলো এমন সময়ে স্থান পরিবর্তন করে যখন উপত্যকায় পাতলা কাদামাটির আস্তরণ থাকে। মানুষ বা অন্য কোন প্রানীর দ্বারা পাথরের স্থান পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আশেপাশের কাদায় তাদের কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না। ক্যালিফোর্নিয়ার রেসট্র্যাক প্লায়া, ডেথ ভ্যালি-তে এমন বিস্ময়কর ঘটনাটি বিশেষজ্ঞদের নজরে আসে ১৯৪৮ সালে ৷ হটাৎ তীব্র বাতাস, কাদামাটি, বরফ, তাপমাত্রার তারতম্যতা বিভিন্ন বিষয় পাথরের সরে যাওয়ার পেছনে কারণ বলে বিজ্ঞানীরা মনে করলেও পাথরের চলার পথের ভিন্নতার কারণে রহস্য থেকেই যায় ৷ পাথার গুলোর এক একটি কয়েক বছর ধরে চলে ৷ কখনো সরল পথে, কোনটি বাঁকানো পথে পরিভ্রমণ করে ৷ এমনও হয় দুটি পাথর সমান্তরালে কিছুদূর পর ঠিক বিপরীত দিকে তাদের দিক পরিবর্তন করে ৷ দীর্ঘ ৫০ বছরের গবেষণায় এখনো পর্যন্ত শুকনো লেক রেস প্রায়া, ডেথ ভ্যালির চলমান পাথরের রহস্য উম্মোচন হয়নি।
১৯৫৫ সালে এম, স্ট্যানলী প্রথমবারের মত প্রকাশ করেন যে, রেস প্রায়া, ডেথ ভ্যালিতে বন্যার পর সৃষ্ট বরফের তাপমাত্রা হীমাঙ্কের নিচে নেমে আসে ৷ ১৯৭৬ সালে রবার্ট শার্প এবং ক্যারে, এম স্ট্যানলী’র আইস-সিট মতবাদ দ্বিমত পোষন করেন ৷ তারা পাথরের চলার পথের ধরন ও জ্যামিতিক বিশ্লেষণ করে একাদিক ট্র্যাকের মাঝে সম্পর্ক দেখতে পান যেটি বরফ খণ্ডের দ্বারা ঘটা সম্ভব নয় ৷ তাঁরা মত প্রকাশ করেন যে, বছরের নির্দিষ্ট আবহাওয়ায় বাতাসের কারণে পাথরগুলো সরে যায় যেটি প্রতি বছর বা দুই বছর অন্তর ঘটে থাকে ৷ ১৯৯৫ সালে জন বি, রেইড এবং হ্যাম্পশায়’র কলেজের ভূ-তাত্বিকগণ শার্প-ক্যারে মতবাদের সাথে দ্বিমত পোষন করেন ৷
১৯৮০’র দশকের শেষ হতে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তাঁরা সাতটি ডেথ ভ্যালি থেকে তথ্য সংগ্রহ করে স্ট্যানলীর আইস-সিট মপবাদকে সমর্থন করেন ৷ আধুনিক জিপিএস ট্র্যাকিংনির্ভর স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে পাথারগুলোর স্থান পরিবর্তনের সময় গতি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া গেলেও তাদের স্থান পরিবর্তনের রহস্য এখনো আবৃতই রয়ে গেছে ৷ বিশেষ করে আপস্ট্রিমে পাথরের স্থান পরিবর্তনের সঠিক ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি ৷ হয়তো’বা কোন দিনও এর সঠিক রহস্য উদ্ঘাটন হবে না, কারন এর মূলে রয়েছে সৃষ্টিকর্তা নিজে ৷ তবুও আশা রাখি এর রহস্য উদ্ঘাটন হোক, মানুষ জানুক, স্রষ্টার সৃষ্টিকে ৷ তার লীলা কে বুঝতে পারে ৷ (“তথ্য সংগ্রহ উইকিপিডিয়া” ছবি সংগ্রহ গুগল”)
জাকির হোসেইন বলেছেনঃ
নিতাইদা, বিস্ময়কর পোস্ট। তবে এটি অতি প্রাকৃত নয়। কারন আপনি লিখেছেন- পাথরগুলো এমন সময়ে স্থান পরিবর্তন করে যখন উপত্যকায় পাতলা কাদামাটির আস্তরণ থাকে। তাহলে কাদামাটি ও পাথরের রাসায়নিক পরীক্ষা করা দরকার। তাছাড়া পৃথিবীর ঘূর্ণনজনিত কারনে পাথরগুলো সচল থাকতে পারে। একটা ঘটনা বলি, একদিন ফুটপাথে একজন লোককে পাথর বিক্রি করতে দেখলাম। ভীড় দেখে আমিও দাঁড়ালাম। বিক্রতা অনেকগুলো সাদা রঙের পাথর বের করে হাতের মুঠোয় নিয়ে বললেন- এই পাথর খাঁটি রূপা দ্বারা আংটি বানিয়ে ডান হাতে পরলে মনের মানুষকে পাওয়া যাবে। যারা বিয়ে করেছেন তাদের মধ্যে ভালবাসার বন্ধন দৃঢ় হবে। পাথরের শক্তি গুণের প্রমান দিতে গিয়ে লোকটি- একখণ্ড কাঠের ওপর লেবুর রস বের করে তার ওপর একটা পাথর রাখতেই সেটি চলতে শুরু করল। বেশ কিছু পাথর বিক্রি হল। প্রকৃতপক্ষে লেবুর রসই এখানে সকল ম্যাজিকের মূল। লেবুতে থাকা সাইট্রিক এসিড পাথরের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করে সেটিকে সামনে চলতে সাহায্য করে। ধন্যবাদ দাদা, অজানা বিষয়টিকে জানানোর জন্য।
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
সম্মানিত জাকির হোসেইন দাদা, এটা বিজ্ঞানীদের অনুমান মাত্র ৷ তবে আমার মনে হয় এই ছবিগুলে কোন ফেক ছবি নয় ৷ ছবিতেই তার প্রমাণ হয় যে যখন উপত্যকার মাটি নরম হয়ে পাতলা কাদামাটির মত হয়ে যায় তখনই পাথরগুলো চলতে পারে অনাহাসে ৷ আর যখনই পাথরগুলোর চলার সময় হয়, তখন উপত্যকায় কোন প্রাণী’ই থাকেনা ৷ তা স্যাটলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবিতেই প্রমাণ করে ৷ আর ঢাকায় পাথর বিক্রী,তো সেটা আপনি নিজেই বলে দিলেন সকল ক্ষমতার উৎপত্তি লেবু ৷ চলমান পাথরের একটা ভিডিও বর্তমানে ইউটিউবেও দেখা যায়, সেটা স্পষ্ট নয়, ঘোলা ঘোলা দেখা যায় ৷ ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন আশা করি ৷
নুর ইসলাম রফিক বলেছেনঃ
পাথরে প্রাকৃতিক ভাবে আকৃতির পরিবর্তন হয় এটা কারো অজানা নয়।
অর্থাৎ ছোট থেকে বড় হয়।
কিন্তু পাথরের হাটতে পারা বা চলতে পারা কোন প্রাকৃতিক স্বাভাবিক বিষয় নেই।
যার পা বা পা জাতীয় কোন অঙ্গ নেই তার হাটতে পারাটা নিশ্চয়ই স্বাভাবিক চিন্তা ভাবনার মধ্যে পরেনা।
পৃথিবীর কোথায় পাথর হাটতে পারার নজর নেই।
আপনার উপরুক্ত ছবি গুলি একটা নির্ধারিত জায়গার নির্ধারিত পাথর।
আর এই পাথর গুলি গোল বা ডিম্বা আকৃতির সাধারণ পাথর নয়।
খেয়াল করুন এই পাথর গুলি কাটা পাথর।
পাথরের আবাস স্থল মাটিটাও কিন্তু স্বাভাবিক মাটি নয়।
পাথর চলতে পারে কথাটা বিশ্বাস যৌগ্য নয়। তবে ঐ নির্ধারিত জায়গার নির্ধারিত পাথর যে চলাচল করে তা আপনার ছবিতে প্রমান পায়।
তাই ঐ নির্ধারিত জায়গার নির্ধারিত পাথর গুলির চলাচল নিয়ে গবেষণা হচ্ছে।
কিন্তু পৃথিবীর সব পাথর নিয়ে নিয়ে কিন্তু একই রকম গবেষণা হচ্ছেনা। হওয়ার কথাও না।
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
সম্মানিত নুর ইসলাম রফিক দাদা, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরেও এর গবেষণার শেষ নাই বিজ্ঞানীদের ৷ তবে পাথরগুলো যে চলমান তা কিন্তু ছবিতেই প্রমাণ পাওয়া যায়, কী ভাবে চলছে তার’ই অনুসন্ধান চলছে ৷ আমার লেখার শিরোনামটাও কিন্তু একটা প্রশ্ন ৷ ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন আশা করি ৷
তানজির খান বলেছেনঃ
অনেক আগে এটা নিয়ে পড়েছিলাম। আজ বিস্তারিত জানলাম। খুব ভাল পোস্ট।
আমরা কিন্তু শুক্রবার এক হচ্ছি। মনে আছে তো দাদা ?
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
সম্মানিত তানজির খান দাদা, মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ দাদা ৷ আর শুক্রবার অবশ্যই আসবো আশা করি ৷ ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন ৷
মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বলেছেনঃ
চমৎকার একটি বিষয় উপস্থাপনের জন্য ধন্যবাদ। এ পোস্টটি চোখে না পড়লে হয়তো এমন একটি প্রাকৃতিক রহস্যের হদিসই পেতাম না।
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
সম্মানিত রাজ্জাক দাদা,মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ ৷ এই পোষ্টখানা দেওয়ার উদ্দেশ হলো মানুষকে জানানোর জন্য ৷ মানুষ যাতে যানতে পারে উপলব্ধি করতে পারে ৷ ধন্যবাদ দাদা আপনার প্রবাসী জীবনের শুভ কামনায় আমি ৷
তৌকির বলেছেনঃ
এই স্লাইডিং স্টোন নিয়ে এর আগেও কোথায় যেন পড়েছিলাম। আজকে আবার পড়লাম। নিতাই বাবুর এই পোস্টটা চমৎকার লাগলো। তবে একটা কথা কী, স্লাইডিং স্টোন সায়েন্টিস্টদের নজর কাড়লেও সায়েন্সের একটা লিমিটেশনই তুলে ধরে।
নিতাই বাবু বলেছেনঃ
সম্মানিত তৌকির দাদা, আপনি সত্যি কথাটা’ই বলেছেন দাদা ৷ আর এখটা বিষয় হলো এর কোন অনুসন্ধান করে আজও পর্যন্ত শেষ করতে পাড়লো দাদা ৷ আশা করি এর অনুসন্ধান শেষ হবে আশা করি ৷ ধন্যবাদ দাদা ভালো থাকবেন ৷