ডিএনডি বাঁধবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চায়

নিতাই বাবু
Published : 10 July 2017, 02:29 AM
Updated : 10 July 2017, 02:29 AM

সুখ-দুঃখ নিয়েই ভবসংসারে মানুষের জন্ম। বেঁচে থাকার জন্য মানুষ যেমন সুখ খোঁজে, একদিন নিদারুণ কষ্ট জীবনে আসতে পারে সেই চিন্তাও মানুষ করে। তাই বলে বছর বছর লাগাতার কষ্ট করে জীবন চলবে এটা কোন ধরনের কষ্ট? এটা একটা বেড়িবাঁধ এলাকার স্থায়ী জলাবদ্ধতার কষ্ট।

বলছি রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে ডিএনডি বাঁধবাসীর কষ্টের কথা। যাদের প্রতিবছরই নিদারুণ কষ্টে থাকতে হয় জলাবদ্ধতার করণে। তারাই হলেন এক সময়ের ২৩৩ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ের প্রকল্প, ডিএনডি বেড়িবাঁধ এলাকার বসবাসকারী মানুষ। বৈশাখ মাস থেকে শুরু হয় ডিএনডি বাঁধের ভেতরে জলাবদ্ধতা।

থাকতে হয় বর্ষাঋতুর শেষ পর্যন্তই পানিবন্দী হয়ে। সামান্য বৃষ্টিতেই ১২ লাখ ডিএনডিবাসী পানিবন্দি হয়ে পড়ে মুহূর্তের মধ্যেই। একনাগাড়ে দুই-তিনদিন বৃষ্টি হলেই তাদের কষ্টের আর সীমা থাকে না। সেই কষ্টের চিত্র দেখা যায় সরেজমিনে গিয়ে। কীভাবে পানিবন্দি হয়ে ডিএনডিবাসী জীবনধারণ করছে। সেই চিত্র কেউ নিজের চোখে না দেখলে আর বিশ্বাস করবে না।

প্রিয় পাঠক, ছবিতে আপনারা দেখতে পাচ্ছেন একটি বাড়ি। দেখতে দেখা যায়, বাড়িটি একটা বন্যাদুর্গত এলাকার। আসলে কিন্তু এটি বন্যাদুর্গত এলাকার বাড়ি নয়। এই বাড়িটি ডিএনডি বাঁধের স্থায়ী জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত একটি বাড়ি। ডিএনডি বাঁধের বেশিরভাগ এলাকার মানুষ এভাবেই পানিবন্দি হয়ে থাকছে বর্ষার পুরোটা সময়। ছবিটি গত ৫ জুলাই ২০১৭ তারিখে গোদনাইল, ক্যানাল পাড় এলাকা থেকে তোলা।

ডিএনডি বেড়িবাঁধ নির্মাণকাল

জানা যায়, ১৯৬৬ সালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা এলাকার ৮ হাজার ৩শ ৪০ হেক্টর জমি নিয়ে ইরীগেশন প্রকল্প তৈরীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তৎকালিক সরকার। যা বাস্তবায়ন করা হয় ১৯৬৮ সালে; নামকরণ করা হয় ডিএনডি বাঁধ।

ছবিটি নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা চৌধুরী বাড়ি সংলগ্ন, বউবাজারের পূর্বদিক থেকে তোলা।

.

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্য

বর্তমান ঢাকা-৪ ও ৫ এবং নারায়ণগঞ্জ-৩ ও ৪ সংসদীয় আসন নিয়ে ডিএনডি বাঁধ। তখনকার সময় শুধু ইরিধান চাষের জন্যই সরকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে। এর অভ্যন্তরে ৫ হাজার ৬৪ হেক্টর জমিই ছিল সেচের আওতায়। বেশিরভাগ জমিতেই চাষ করা হতো ইরিধান। সাথে থাকতো নানারকম মৌসুমি রবিশস্য। এখন আর ডিএনডি বাঁধের ভেতরে চাষিদের চাষাবাদ আগের মতো নেই। কারণ চাষের জমির সংখ্যা খুবই কম তাই।

চাষির চাষাবাদ না থাকলেও মানুষের জমি কিনে ঘরবাড়ি বানানো বন্ধ নেই। তা কিন্তু দিন-দিন বেড়েই চলছে। এই চলা শুরু হয়েছিল ১৯৮৮-১৯৯৮ সালের ভয়াবহ বন্যার পর থেকে। তখন ঢাকার আশেপাশের মানুষ মনে করেছিল, এইরূপ বন্যা এই বঙ্গদেশে ধারাবাহিকভাবেই হতে থাকবে। সেই ভাবনা থেকেই মানুষ উঠেপড়ে লেগে যায়, ডিএনডি বেড়িবাঁধের ভেতরে একটি বাড়ি তৈরি করার জন্য। তাই মানুষ জমি কিনতে-কিনতে এখন এমন হয়েছে যে, ক'দিন পরে এখানে কেনার মতো জমিই থাকবে না। মানুষ মনে করে ডিএনডি বাঁধের ভেতরে একটি বাড়ি করা, আর চাঁদের দেশে বাড়ি করা সমান কথা। কিন্তু এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ছিল, এ প্রকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে ও অতিরিক্ত ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যেই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন। একই সাথে রাজধানী ঢাকায় অবস্থানকারীদের জন্য সতেজ রবি শষ্য সরবরাহ করা।

ছবিটি গত ৫ জুলাই ২০১৭ ইং চৌধুরী বাড়ির পূর্বে শান্তিনগর থেকে তোলা।

.

পানি নিষ্কাশনের জন্য ডিএনডি বাঁধের অভ্যন্তরে আগে যা ছিল

জানা যায়, ডিএনডি বাঁধ এলাকায় পানি সেচ দেয়া ও নিষ্কাশনের জন্য বড় 'কংস নদ' নামে একটি প্রশস্ত খাল ছিল। এ খালের সাথে আরো যুক্ত ছিল নয়টি শাখা খাল। ছাড়াও ২১০টি ছিল আউট লেক, ১০টি নিষ্কাশন খাল। এসব খালের দৈর্ঘ্য ছিল ১৮৬ কিলোমিটারের মতো, এরমধ্যে নিষ্কাশন খালের দৈর্ঘ্য ছিলো ৪৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার। আর ইরিগেশন খালের দৈর্ঘ্য ছিল ৫১ দশমিক ২০ কিলোমিটার। ডিএনডি এলাকায় যদি বৃষ্টিতে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, সেজন্য পানি সেচের জন্য তৈরী করা হয় শিমরাইল এলাকায় ডিএনডি পাম্প হাউজ।

বসানো হয় জাপানের তৈরী করা ৪টি বড় পাম্প, যা প্রতি সেকেন্ডে ৫'শ১২ ঘনফুট পানি নিস্কাশনের ক্ষমতা সম্পন্ন ছিল। দুইটি প্রধান পানি নিষ্কাশনের খাল কাটা হয়েছিল প্রথম পর্যায়ে, তা ছিল ৫৫ পয়েন্ট ২০ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪৫ পয়েন্ট ৪০' কিলোমিটার। এবং দুইটি প্রধান সেচ খাল কাটা হয় প্রথম পর্যায়ে ১৪'শ ১০ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ৪৪' কিলোমিটার। খড়া মৌসুমে জমিতে পানি সেচ দিতে ও বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশন করতে সরকার এ খাল গুলো তৈরী করেছিল। সেসব খালগুলো এখন প্রায় সবই অকেজো। তার প্রমাণ পাওয়া যায় চিটাগাং রোড সংলগ্ন সেচ পাম্পের সামনে গেলে। শীতলক্ষ্ম্যা নদী থেকে সুবিশাল প্রশস্ত খাল এই পাম্পের সাথে সংযোগ, আছে সুইচ গেইট। কিন্তু দেখা যায় না পানি নিষ্কাসনের কোনো দৃশ্য, শুধু দেখা যায় সরকারি কর্মচারীদের আনাগোনা। কাজের কাজ তাদের কিছুই নেই, আছে শুধু চাকরি বাঁচানোর হাজিরা।

ছবি গত ৫ জুলাই ২০১৭ ইং গোদনাইল চৌধুরী বাড়ি ক্যানাল পাড় থেকে তোলা।

.

বর্তমানে জলাবদ্ধতার কারণ

ডিএনডি বাঁধের ভেতরের চারপাশ এখন বড়বড় নীট গার্মেন্টস, রি-রোলিং মিলস্ সহ বহুরকম কলকারখানার জায়গা। আবার পুরো ডিএনডি বাঁধের ভেতরে সেচ প্রকল্পের যেকয়টি খাল আছে, বর্তমানে প্রায় সবগুলোই এখন বন্ধ। ডিএনডি বাঁধের চারপাশ ঘেঁষা যেই প্রধান খালটি আছে, ভূমিদস্যুদের অবৈধ দখলের কারণে খালটি এখন এটি প্রায় অদৃশ্য। খালের মাঝখানে দেখা যায় ঘরবাড়ি, দোকানপাট, রাস্তা, ব্রিজ আর নানারকম স্থাপনা। আবার দিন-দিন বাড়ছে মানুষের বসতি, কেউ আবার স্বপ্নেও দেখে ডিএনডি বাঁধের ভেতরে একটি বাড়ি কারার।

এভাবে মানুষের স্বপ্নের বাড়ি নির্মাণ বাড়তে-বাড়তে খাল-বিল, ডোবা-নালা সহ পানি নিষ্কাশনের খালগুলোও দিনদিন ভরাট হয়ে গেছে। তাহলে বৃষ্টির পানি সরবে কী করে? পানি সরার রাস্তাই-তো বন্ধ। আর আছে মেয়াদ উর্ত্তীণ সেচ পাম্প, সেগুলো দিয়ে বর্জ্য সহ পানি নিষ্কাশন করতে পারে না। বর্জ্য সহ পানি নিষ্কাশন করতে গেলে পাম্প অকেজো হয়ে পড়ে, তাই ঠিকমতো পানি নিষ্কাশনও করতে পারছে না সেচ প্রকল্প। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের পর খালগুলো আর পুনঃখনন করা হয় নাই। পানি নিষ্কাশনের জন্য যেই কয়টা খাল আছে তার বেশিরভাগ খালই এখন চোখে দেখা যায় না। এ সবের কারণেই, সামন্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার শিকার হয় ১২লাখ ডিএনডিবাসী।

জলাবদ্ধতার শিকার হওয়া এলাকাগুলো

সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি, কদমতলী, পাইনাদী, সিআইখোলা, কালাহাতিয়ার পাড়, পাইনাদী নতুন মহল্লা, মজিববাগ, রসুলবাগ, মাতুইয়াল, দনিয়া, শনিরআখড়া, শহীদ নগর, সবুজবাগ, ভূইঘর, দেলপাড়া, ডগাইর, নয়াপাড়, ধনকুন্ডা, গিরিধারা, সাহেবপাড়া, বাঘমারা, সাদ্দাম মার্কেট, নয়াআটি, নিমাইকাশারী, জালকুড়ি, সানারপাড়, টেংরা, তুষার ধারা, বক্সনগর, হাজীগঞ্জ, গোদনাইল পূর্ব এনায়েত নগর, চৌধুরীবাড়ি ভূঁইয়াপাড়া, তাঁতখানা, সৈয়দপাড়া, চৌধুরীবাড়ি বউবাজার ক্যানাল পাড়, শান্তিনগর, নয়ামাটি, ইসলামনগর সহ আরও নাম না জানা অনেক এলাকা।

এসব এলাকা ছাড়াও জলাবদ্ধতার শিকার হয়, বিভিন্ন বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাট, মসজিদ, মাদ্রাসা, মাজার, স্কুল-কলেজ, সবজি ক্ষেত, নার্সারী, নীচু জায়গায় গড়ে ওঠা নামীদামী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। একাধারে কয়েক দিন প্রবল বর্ষণ হলে, অনেক নীচু এলাকা দুই থেকে তিন ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। এর ফলে দেখা দেয় এক কৃত্রিম বন্যা, ঘোষণার উপযোগী হয়ে ওঠে বন্যাদুর্গত এলাকা। কিন্তু ডিএনডিবাঁধ এলাকাকে কখনোই বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হয় না। কারণ, এই এলাকাটি বন্যা মুক্ত এলাকা, এটি বহু অর্থ ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধ সেচ প্রকল্প।

জলাবদ্ধতার শিকার মানুষের অভিযোগ

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সময়মত কর্তৃপক্ষ কার্যকর পদক্ষেপ নেয় না। বাঁধে অভ্যন্তরে পানি নিষ্কাশনের যেকয়টি খাল আছে, সেগুলো দখলমুক্ত করে পুনঃখনন করছে না। বাঁধের চারদিকে যেই কয়টা ছোট পাম্প আছে, সেগুলো সময়মত চালু বা দেখভালও করছে না।

অনেকেই বলে, "এই বাঁধের ভেতরে আগে এতো বসতি ছিল না, এখন মানুষ জমি কিনছে আর বাড়ি তৈরি করছে। যে যেভাবে পারছে, সে সেভাবেই করছে। একটা প্রকল্পের অভ্যন্তরে বাড়ি নির্মাণের একটা নীতিমালা থাকা চাই, কিন্তু তা এখানে নেই, করছে যার যার মনোমতো।"

আবার অনেকেই ক্ষোভের সাথে বলেন, "এখন আর এই বাঁধের ভেতরে থাকতে মন চায় না। পুরো বছর পানিবন্দী হয়ে থাকার চেয়ে, বাঁধের বাইরে থাকাই ভালো।"

একজন মুরুব্বি বলেন, "বাঁধ দেওয়ার আগে শীতলক্ষ্ম্যা নদীর সাথে যেকয়টি সংযোগ খাল ছিল, বাঁধ কেটে সেগুলো আবার খুলে দিলেও হবে ভালো কাজ। এতে নদীর জোয়ার ভাটার গড়াগড়িতে আমাদের এলাকার, ডোবানালার পানি সবসময় থাকবে পরিষ্কার। থাকবো মিলেমিশে বাঁধের বাইরের মানুষের সাথে, তারা যেমন থাকে আমরাও তেমন থাকবে।"

কথাগুলো বললেন, ডিএনডি বাঁধ এলাকায় বসবাসকারী কয়েকজন মানুষ।

ভুক্তভোগী মানুষের সামান্য কিছু দাবি

পানিবন্দী এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ কমাতে দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা উন্নত করার পাশাপাশি খাল ভরাটের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।

একবার যা শুনেছিলাম

শুনেছিলাম ২০১০ সালে সরকার ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছিল। এরমধ্যে রয়েছিল- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকার শিমরাইল ও আদমজী এলাকায় দুইটি পাম্প স্টেশন স্থাপন, ফতুল্লার পাগলা ও ফতুল্লা এলাকায় দুইটি পাম্পিং পয়েন্ট স্থাপন করা। ১৪৫টি কালভার্ট, ১৫০টি সেতু নির্মাণ ও মেরামত করা। ৯৪ কিলোমিটার খাল খনন ও পুনঃখনন এবং খালের পাড় নির্মাণ করা। অবৈধ দখল ঠেকাতে ৬০ কিলোমিটার খালের দুই পাড় গ্রিল দিয়ে ঘেরাও এবং ৯ দশমিক ২৫ কিলোমিটার খালের দেয়াল উঁচু করা। প্রকল্পটি পুরোপুরিভাবে আলোর মুখ না দেখার কারণে ডিএনডিবাসী আর রেহাই পায়নি জলাবদ্ধতা থেকে। কোনোদিন আর রেহাই পাবে কি না, তা-ও কারোর জানা নেই।

ডিএনডি বাঁধবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চায়

ডিএনডি বেড়িবাঁধ অভ্যন্তরে জলাবদ্ধতা এক স্থায়ী সমস্যা হিসেবেই দেখা দিয়েছে। তারমধ্যে ডিএনডি বাঁধের যেসমস্ত নীচু এলাকা আছে, সেই এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা দিন দিন বিপর্যয়ের দিকে এগুচ্ছে। জলাবদ্ধতার অভিশাপ ডিএনডিবাসীর জীবনযাত্রাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। বছরের পর বছর ধরেই চলছে এই সমস্যা। সমস্যা সমাধানের জন্য পরিকল্পনা, মহাপরিকল্পনা, আশ্বাস ইত্যাদি চলছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান কিছু হচ্ছে না। আর সাধারণ মানুষও এই জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে না।

স্বাভাবিক বৃষ্টিতেই ডিএনডি বাঁধের বেশিরভাগ এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। যদি একবার দুই তিনদিন যাবৎ মুশলধারায় বৃষ্টিপাত হয় তাহলে কি যে হওয়ার কথা, তা অনুমান করতে আর কারোর কষ্ট হবে না।

একসময় এই ডিএনডি বাঁধের ভেতরে খাল ছিল, বড়বড় পুকুর ছিল, ধান চাষের জমি ছিল, এখন ওইসব যেন রূপকথার গল্প হয়ে যাচ্ছে। যে খালগুলো ডিএনডি বাঁধের চারপাশ দিয়ে বয়ে চলতো, সেই খালের স্বচ্ছ পানিতে থাকতো কত মাছ! সেসবও এখন গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়, নতুন প্রজন্মের কাছে। এখন আছে শুধু জলাবদ্ধতার কালো কুচকুচে পঁচা পানি, সেই পানির গন্ধে দম ফেলাও দায়। তবু ওইসব নিয়ে ডিএনডিবাসীর কোনো দুঃখ নেই, দুঃখ শুধু একটাই, তা হলো জলাবদ্ধতা। তারা দুর্গত এলাকা ঘোষণা চায় না, ডিএনডিবাসী সরকারি রিলিফ চায় না। তারা চায় এই জলাবদ্ধতার ছোবল থেকে বাঁচতে। ডিএনডিবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চায়, তারা এর স্থায়ী সমাধান চায়।