১৫ আগস্ট স্মরণে নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০নং ওয়ার্ডে কাঙালি ভোজ ও আলোচনা সভা

নিতাই বাবু
Published : 18 August 2017, 07:34 PM
Updated : 18 August 2017, 07:34 PM


সারাদেশে ১৫ আগস্ট ২০১৭ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালিত হয়। দিবসটিতে বাঙালি জাতি জাতির জনককে গভীর শ্রোদ্ধায় স্মরণ করে। ঘৃণা জানায় ইতিহাসের কলঙ্কজনক হত্যাকাণ্ডের সাথে জরিত খুনীদের। এরই ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ১৮আগস্ট পালিত হয় দিবসটি। আয়োজন করা হয় কাঙালি ভোজ ও এক আলোচনা সভার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য আল-হাজ্ব শামীম ওসমান সাহেব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ১০নং ওয়ার্ড কমিশনার হাজী মোঃ ইফতেখার আলম খোকন। সভাপতিত্ব করেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মহিউদ্দিন মাধবর। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি জনাব হাজী মোঃ ইসাক মিয়া। সভায় গোদনাইল এলাকার আওয়ামী লীগ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।

আলোচনা সভার জন্য গোদনাইল লক্ষ্মীনারায়ণ বাজার সংলগ্ন তৈরি করা হয় মঞ্চ। চারিদিকে লাগানো হয় মাননীয় সংসদ সদস্যের ছবি সংবলিত বিলবোর্ড। বিলবোর্ডে মাননীয় সংসদ সদস্যের ছবির সাথে এলাকার নেতাকর্মীদের ছবিও দেখতে শোভা পাচ্ছিল। খাবারের জন্য আলাদাভাবে করা হয় প্যান্ডেল। সেখানে বহু লোক ছিল খাবার পরিবেশন করার জন্য। ছিল ডেকোরেশন থেকে ভাড়া আনা চেয়ার টেবিল ও থালাবাসন।

১৭ আগস্ট রাত থেকেই কাঙালি ভোজের রান্নাবান্না আয়োজন শুরু করা হয়। সকাল থেকেই আলোচনা সভায় এলাকার মানুষ মিছিল নিয়ে আসতে থাকে। তাদের জামার বুকপকেটের উপরে ছিল কালো ব্যাজ। মাথায় ছিল ফিতার মতো কালো কাপড় বাঁধা। মুখে ছিল শ্লোগান, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। মাননীয় সংসদ সদস্য সভা মঞ্চে উপস্থিত হতে একটু দেরি হয়। এদিকে মঞ্চের চারিদিক আগত মানুষে ভরে যায়, কানায় কানায়। তাদের চোখ শুধু এমপি সাহেব আসার রাস্তার দিকে, কখন আসবে এমপি সাহেব। তিনি আসলেন দুপুর ১২.৩০ মিনিটের সময়। মাননীয় সংসদ সদস্য আসার পর, উপস্থিত সবাই জয় বাংলা শ্লোগান দিতে থাকে। পরে তাকে মঞ্চে আসন গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়; তিনি আসন গ্রহন করেন।


মাননীয় সংসদ সদস্য আসার আগে থেকেই শুরু হয়, ১৫ আগস্ট নিয়ে আলোচনা। সেসময় কাঙালি ভোজ ও আলোচনা সভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, ১০নং ওয়ার্ড গোদনাইল আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

সভায় বক্তব্য রাখেন:
• হাজী মোঃ ইফতেখার আলম খোকন, নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০ নং ওয়ার্ড কমিশনার।
• আল-হাজ্ব মোসাম্মৎ মিনোয়ারা বেগম মিনা, নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০ নং ওয়ার্ড মহিলা কমিশনার।
• জনাব মহিউদ্দিন মাদবর, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি।
• জনাব নূর আলী সাহেব, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
• হাজী মোঃ ইসহাক মিয়া, নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি।
• জনাব ডা: এম.এ মোতালেব। নারায়ণগঞ্জ সিটি ১০নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আইন বিষয়ক সম্পাদক।
• জনাব জাকির মাদবর।
• জনাব জালাল প্রধান।
• জনাব মোঃ হানিফ
• জনাব মোঃ জসিমউদ্দিন।
• জনাব রুবেল মাদবর।
• জনাব সুমন মাদবর।
আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের নাম না জানা অসংখ্য নেতাকর্মী।

তারা তাদের বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতি চরম ঘৃণা-ধিক্কার জানায়। গভীর শ্রোদ্ধায় স্মরণ করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানকে। সেই সাথে স্মরণ করে, জাতির জনকের সহধর্মিণীসহ নিহত হওয়া পরিবারবর্গের সদস্যদের। এরপর বক্তৃতা দিতে ওঠে দাঁড়ান, মাননীয় সংসদ সদস্য আল-হাজ্ব শামীম ওসমান সাহেব। বক্তৃতা শুরুতেই মাননীয় সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপর শুরু হয় তার বজ্রকন্ঠের বক্তৃতা।


মাননীয় সংসদ সদস্য আল-হাজ্ব শামীম ওসমান তার বক্তৃতায় বলেন, "নতুন প্রজন্মকে লেখাপড়ার পাশাপাশি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস সম্পর্কে জানার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।"
মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান তিনি। মাননীয় সংসদ সদস্য আল-হাজ্ব শামীম ওসমান সাহেব আরও বলেন, "বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফেরত এনে তাদের শাস্তি কার্যকর করতে হবে।"
এজন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বক্তৃতা শেষে মাননীয় সংসদ সদস্য সভাস্থলে উপস্থিত সাবার সাথে করমর্দন করেন। এরপর সবাইকে নিয়ে চলে যান খাবারের প্যান্ডেলে। সারিবদ্ধভাবে চেয়ারে বসা এক লাইন মানুষের মাঝে তিনি খাবার পরিবেশন করেন। মাননীয় সংসদ সদস্য একটা প্লেটে অল্প একটু খিচুড়ি নিয়ে খেতে থাকেন। এই দৃশ্য দেখে উপস্থিত সবাই হাততালি দিয়ে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলে শ্লোগান দিতে থাকেন। তারপর তিনি গোদনাইল রসূলবাগ এলাকার ছোটবড় সবার সাথে দেখা করেন। এর কিছুক্ষণ পরই মাননীয় সংসদ সদস্য সভাস্থল ত্যাগ করেন। মাননীয় সংসদ সদস্য সভাস্থল ত্যাগ করার পর, শুরু হয় খিচুড়ি বিতরণ করা। কাঙালি ভোজের জন্য আয়োজন করা খিচুড়ি বিতরণ করা হয়, এলাকার ধনী-গরিব সবার ঘরে ঘরে।