ধর্ম ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার কে ‘রোহিঙ্গা রাজ্য’ বানানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে !!

সুলতান মির্জা
Published : 23 Oct 2012, 05:48 AM
Updated : 23 Oct 2012, 05:48 AM

শুনলে কিছুটা দৃষ্টি কটু মনে হতে পারে। কিন্তু এটাই বাস্তব। কেন না, বৃহত্তর কক্সবাজার অঞ্চলে এই মুহূর্তে মানবাধিকারের নামে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন আরএসও, আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন আরনো, ইত্তিহাদ আল তাল্লুব আল মুসলেমিন আইটিএম, এমএসএফ হল্যান্ড, এসিএফ, মুসলিম এইড-ইউকে, ভার্ক, আরটিআই, রিভ ও সেভ দ্য চিলড্রেন এই ১০টি সংগঠনের পৃষ্ঠপোষকতায় দিনকে দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে সাড়ে চার লাখ রোহিঙ্গা। হাত বাড়ালেই বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেয়ে যাচ্ছে রোহিঙ্গারা। ভুয়া ঠিকানা সংবলিত পাসপোর্ট ভিসা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমানো রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে কয়েকটি দেশ। বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে এই রোহিঙ্গা মুসলিমরা দেশের সীমা পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ছে । বিদেশে রোহিঙ্গাদের অপকর্মের দায়ভার নিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। অতি সম্প্রতি কক্সবাজারের রামু ও উখিয়ার বৌদ্ধপল্লীতে হামলার নেপথ্যে রোহিঙ্গাদের জড়িত থাকার বিষয়টি এখন ওই অঞ্চলের ওপেন সিক্রেট এখন গল্পে পরিণীত হয়েছে। বিশ্বাস করতে কস্ট হচ্ছে সবকিছু বোঝার পরও কিসের বদইন্যতায় সরকার বা প্রশাসন রহস্যজনকভাবে নীরব। সরকার বা তাদের প্রেরিত প্রশাসন এই দ্বায়ভার এড়াতে পারবে না।

সরকারের মনে রাখা প্রয়োজন একটি ধর্মান্ধ ধর্ম ব্যবসায়ী গুষ্ঠী বৃহত্তর কক্সবাজার কে 'রোহিঙ্গা রাজ্য' বানানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। বাংলাদেশের এই ধর্মীয় গুষ্ঠীর সাথে মিয়ানমারের কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠীর সুসম্পর্ক রয়েছে। যার দরুন খুব সহজে রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় কর্মরত কয়েকটি বিদেশি এনজিওর মাধ্যমে এই অঞ্চলে অনুপ্রবেশ ও অশান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে যাচ্ছে।

দেশী বিদেশী কিছু জার্নাল বা ওয়েবসাইট ঘাটলে দেখা যাবে গত কয়েক বছর ধরে মিয়ানমার সরকার তাদের সীমান্তবর্তী রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গুচ্ছগ্রামগুলো এবং খালি জায়গায় রাবার চাষের প্রকল্প শুরু করেছে। আর এজন্য ওই গ্রামগুলো তে পর্যায়ক্রমে রোহিঙ্গাদের উপর মিয়ানমার সরকার অত্যাচার বাড়িয়ে দিয়েছে যাতে করে মিয়ানমারে নির্যাতিত হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসে। একই সঙ্গে মিয়ানমার সরকার আরাকানে রোহিঙ্গা অধ্যুসিত গ্রামগুলোর কিছু কিছু জায়গায় মিয়ানমারের অন্য অংশ থেকে স্থানীয় লোকজন এনে বসবাসের সুযোগ করে দিচ্ছে। আর এইজন্য দেখা দিয়েছে সাপরদায়িক সহিংসতা। পুড়ছে ঘর বাড়ি, নির্যাতন করছে রোহিঙ্গাদের উপর। উদ্দেশ্য একটাই যা এইখান থেকে চলে যা। বাংলাদেশে গিয়ে আস্তানা কর।

পত্রিকা মাধ্যমে জানতে পারলাম, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জইনক ড.ওয়াকার উদ্দীন নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তারা রোহিঙ্গাদের জন্য লবিং নিয়োগ করেছে যাতে করে রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার নমনীয় হয় এবং প্রত্যাগত এইসব রোহিঙ্গাদের কে যেন বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশে বৈধ ভাবে থাকতে দেয়। উল্লেখ্য ড.ওয়াকার নিজেও রোহিঙ্গা বংশোদ্ভূত।

ভিবিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি আইটিএম নামের একটি সংগঠন ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে তাদের কার্যক্রমের বিস্তার ঘটিয়েছে। মিয়ানমারের ইউনাইটেড মুসলিম স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এর সহযোগিতায় বাংলাদেশের এখন বাংলাদেশের ধর্ম ব্যবসায়ী গুষ্ঠীর তত্ত্বাবধানে আইটিএম কক্সবাজার সহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় রোহিঙ্গাদের স্থায়ী ভাবে বসবাস করার নিমিত্তে বাংলাদেশ সরকার কে বাধ্য করতে কাজ করছে। এই সংগঠনটির লক্ষ্য যে কোনো মূল্যে এ দেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান ধরে রাখা। এবং স্থায়ী ভাবে বসবাস করার অনুমতি নেওয়া। পোস্টের প্রাসঙ্গিক উল্লেখ্য যে বর্তমানে কক্সবাজারের মোট জনসংখ্যা ২২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৫৭ জন। এরমধ্যে রোহিঙ্গা সাড়ে চার লাখের উপরে। টেকনাফের নয়াপাড়া এবং উখিয়া কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা মাত্র ৩০ হাজার ২২৫ জন। সুত্র: কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

আরেকটা বিষয়ে তথ্য শেয়ার করছি, বর্তমানে কক্সবাজারের প্রায় ৮০ শতাংশ মসজিদের ইমাম রোহিঙ্গা। এসব ইমাম বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্রদের ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করে জিহাদ সংশ্লিষ্ট উগ্রপন্থা সম্পর্কে শিক্ষা দিচ্ছে। যা আমাদের দিচ্ছে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরের ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক গঠনার জন্মদান।

আর তাই এখনি প্রয়োজন সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না হলে হয়তো বা একদিন না একদিন বৃহত্তর কক্সবাজার হয়ে যাবে রোহিঙ্গাদের স্বপ্নের সেই নগরী রোহিঙ্গা রাজ্য।

ধন্যবাদ।
@সুলতান মির্জা।