বিশ্ব দর্শন দিবস: সংকট উত্তরণে দর্শন

মো. আশরাফ-উজ- জামান
Published : 18 Nov 2020, 11:06 PM
Updated : 18 Nov 2020, 11:06 PM

এবছর ১৯ নভেম্বর বিশ্ব দর্শন দিবস পালন হবে। ইউনেস্কো ২০০২ সাল থেকে 'বিশ্ব দর্শন দিবস' পালন করে আসছে। প্রতি বছর নভেম্বর মাসের তৃতীয় বৃহস্পতিবার দর্শন সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এ দিবসটি পালন করা হয়। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো- "The importance of philosophy in times of crisis" অর্থাৎ "সংকটে দর্শনের প্রয়োজনীয়তা"।

জাতিসংঘ-ইউনেস্কো বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে 'দর্শন দিবস' পালন করলেও বাংলাদেশে এ দিবসের ছোঁয়া লাগে না সাধারণ মানুষের মধ্যে। এমনিতেই দর্শন সাধারণের কাছে কিছুটা রহস্যময় ও দুর্বোধ্য। সেক্ষেত্রে এ রকম দিবসগুলো দর্শন শাস্ত্রের সাথে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক স্থাপনের একটি সুযোগ। দর্শনকে সহজভাবে সাধারণের কাছে তুলে ধরতে পারলে দর্শন সম্পর্কে মানুষের অনেক ভুল ধারণা দূর হতো।

পুরো বিশ্ব এখন নানা কারণে অস্থিতিশীল। করোনাভাইরাস, যুদ্ধ, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভ্যাক্সিন, বর্ণ বৈষম্য, অর্থনৈতিক বৈষম্য, বাক স্বাধীনতা-ইত্যাদি নানা বিষয়ে মানুষ অস্থির হয়ে আছে। এ সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার ত্বরিৎ কোনও পথ নাই। কিন্তু কিভাবে সমস্যাগুলো হ্রাস ও মোকাবেলা করা যায়- সে বিষয়ে দর্শন আমাদের সাহায্য করতে পারে। এই  অস্থির পৃথিবীতে কিভাবে স্থির জীবন-যাপন করা যায় সে শিক্ষাও দর্শন থেকে পাওয়া যেতে পারে।

দুর্নীতির রাহুগ্রাস থেকে বাংলাদেশকে মুক্ত করার উপায় অনুসন্ধান করতে পারে দর্শন। করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানবিকতা খুঁজে পেতে আমাদের সাহায্য করতে পারে দর্শন। দর্শন যেমন বাকস্বাধীনতা সংরক্ষণের পক্ষে থাকে, তেমনি বাক স্বাধীনতার দায়িত্বশীল প্রয়োগের নির্দেশনাও দেয়। দর্শন ধর্মের মর্ম অনুধাবনে সহায়তা করে আবার ধর্মীয় উন্মত্ততার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তাই  বিশ্বকে অস্থিতিশীল করার বিষয়গুলোর সাথে দর্শনের যেমন সংশ্লিষ্টতা আছে তেমনি এই  অস্থিতিশীলতাগুলোকে স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে পারে দর্শন। মহামারীর এই সংকটকালে সেই ভূমিকাকে কাজে লাগিয়ে আমরা একটি সুন্দর-সহিষ্ণু-শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠার দিকে এগোতে পারি।