১৯৭১ সালে জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের একটি সম্পাদকীয়!

সুলতান মির্জা
Published : 7 March 2012, 06:06 PM
Updated : 7 March 2012, 06:06 PM

দৈনিক সংগ্রাম
১৪ নভেম্বর ১৯৭১ / ২৭ কার্তিক ১৩৭৮

পাক সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বদর বাহিনী গঠিত হয়েছে
— মতিউর রহমান নিজামী

১৪ নভেম্বর ১৯৭১, বদর বাহিনীর গুণকীর্তন করে তৎকালীন পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতি মতিউর রহমান নিজামী "বদর দিবস : পাকিস্তান ও আল-বদর" শীর্ষক শিরোনামে একটি সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করে — :

"বদর দিবস : পাকিস্তান ও আল-বদর"

বিগত দু'বছর থেকে পাকিস্তানের একটি তরুন কাফেলার ইসলামী পুনর্জাগরন আন্দোলনের ছাত্র প্রতিষ্ঠান পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘ এই ঐতিহাসিক বদর দিবস পালনের সূচনা করেছে। যারা পাকিস্তানে বিপুল উৎসাহ উদ্দিপনার সাথে এই দিবস উদযাপিত হওয়ার পেছনে এই তরুন কাফেলার অবদান সবচেয়ে বেশি। হিন্দু বাহিনীর সংখ্যা শক্তি আমাদের তুলনায় পাঁচ গুন বেশি। তাছাড়া আধুনিক সমরাস্ত্রেও তারা পাকিস্তানের চেয়ে অনেক সুসজ্জিত। দূর্ভাগ্যবশত পাকিস্তানের কিছু মুনাফিক তাদের পক্ষ অবলম্বন করে ভেতর থেকে আমাদের দূর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তাদের মোকাবেলা করে তাদের সকল ষড়যন্ত্র বানচাল করেই পাকিস্তানের আদর্শ ও অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে ; শুধু পাকিস্তান রক্ষার আত্মরক্ষামূলক প্রচেষ্টা চালিয়েই এ পাকিস্তান কে রক্ষা করা যাবে না ।

… বদরের যুদ্ধ থেকে অনেক কিছুই আমাদের শিখবার আছে। এই যুদ্ধের সৈনিকরা কেউ পেমাদার বা বেতনভুক্ত সৈনিক ছিলেন না। মুসলমানরা সবাই ছিলেন সৈনিক । তারা সবাই ছিলেন স্বতঃষ্ফুর্ত প্রেরনায় উদ্বুদ্ধ, ঈমানের তাগিদেই তারা লড়তে প্রস্তুত হয়েছিলেন বিরাট শক্তির মোকাবিলায়। বৈষয়িক কোন স্বার্থই ছিলো না তাদের সামনে। মরলে শহীদ বাঁচলে গাজী – এই ছিল তাদের বিশ্বাসের অঙ্গ। ঈমানের পরীক্ষায় তারা ছিলেন উত্তীর্ণ। সংখ্যার চেয়ে গুনের প্রাধান্য ছিলো সেখানে লক্ষনীয়। পারস্পরিক দ্বন্ধ কলহের লেশমাত্র ছিলো না তাদের মধ্যে। এক রসুলের নেতৃত্বে তারা সবাই ছিলেন সীসা ঢালা প্রাচীরের ন্যায় ঐক্যবদ্ধ। একমাত্র আল্লাহর সাহায্য ছিলো তাদের সম্বল। আর আল্লাহর সন্তোষ ছিলো তাদের কাম্য। আজকের কাফেরদের পর্যুদস্ত করতে হলে আমাদেরও অনুরূপ গুনাবলীর সমাবেশ অবশ্যই ঘটাতে হবে।
আমাদের পরম সৌভাগ্যই বলতে হবে, পাকসেনার সহযোগিতায় এদেশের ইসলাম প্রিয় তরুন ছাত্র সমাজ বদর যুদ্ধের স্মৃতিকে সামনে রেখে আল-বদর বাহিনী গঠন করেছে । বদর যুদ্ধে মুসলিম যোদ্ধাদের সংখ্যা ছিলো তিনশ তের জন। এই স্মৃতি অবলম্বন করে তারাও তিনশ তের জন যুবকের সমন্বয়ে এক একটি ইউনিট গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বদর যোদ্ধাদের সেই সব গুনাবলির কথা আমরা আলোচনা করেছি, আল বদরের তরুন মর্দে মুজাহিদ দের মধ্যে ইনশাল্লাহ সেই সব গুনাবলী আমরা দেখতে পাব।

পাকিস্তানের আদর্শ ও অস্তিত্ব রক্ষার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে গঠিত আল-বদরের যুবকেরা এবারের বদর দিবসে নতুন করে শপথ নিয়েছে, যাতে তেজোদ্দীপ্ত কর্মীদের তৎপরতার ফলেই বদর দিবসের কর্মসূচি দেশবাসী তথা দুনিয়ার মুসলমানদের সামনে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। ইনশাল্লাহ বদর যুদ্ধের বাস্তব স্মৃতিও তারা তুলে ধরতে সক্ষম হবে। আমাদের বিশ্বাস সেদিন যুবকেরা আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর পাশাপাশি দাড়িয়ে হিন্দু বাহিনীকে পর্যুদস্ত করে হিন্দুস্তানকে খতম করে সারা বিশ্বে ইসলামের পতাকা উড্ডীন করবে। আর সেদিনই পূরন হবে বিশ্ব মুসলমানের অন্তরের অপূর্ন আকাঙ্খা।

তথ্যসুত্র: ইন্টারনেট