এমএলএম কোম্পানী নিয়ে টালবাহানা কেন ? চাই অর্থমন্ত্রীর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা!

সুলতান মির্জা
Published : 9 May 2012, 05:12 PM
Updated : 9 May 2012, 05:12 PM

মাননীয় অর্থমন্ত্রীকে এলএমএল কোম্পানীর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছুটা উদাস উদাস মনে হচ্ছে। গত কিছুদিন পূর্বে এমএলএম কোম্পানী ডেসটিনি নিয়ে সংবাদ পত্র, ব্লগ, ফেসবুক এ আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল। আমাদের অর্থমন্ত্রী শুনিয়েছিলেন কিছু আশার বাণী। উনি বলেছিলেন খুব শীঘ্রই এমএলএম কোম্পানী ডেসটিনির অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন। আমাদের সেই আশা গুলো ক্রমেই ফিকে হয়ে যাচ্ছে নিরাশার দোলাচলে। নানামুখী বক্তব্যই হলো এর প্রধান কারণ।

এখন প্রশ্ন হলো অর্থমন্ত্রী কী কোনও পিছুটানে আটকে রয়েছেন ?

অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন সরকার যুবকের মত করে ডেসটিনি নিয়ে একটি কমিশন গঠন করবেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বেশ ভাল কথা কিন্তু পদক্ষেপ কী শুধু প্রেস কনফারেন্স এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে নাকি বাস্তবে রূপান্তরিত হবে ?

আবার গত কিছু দিন আগে দৈনিক কালের কণ্ঠে একটা নিউজ এসেছিল অর্থমন্ত্রী বলেছেন বর্তমান আইনে ডেসটিনি বিষয়ে কোনও কমিশন গঠন করা সম্ভব না।তাহলে কী অর্থমন্ত্রী কোনও মোহে পড়ে গেলেন নাকি ?

আর একটা নিউজ, বিডি নিউজ মারফত জানতে পারলাম, ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সহ বেশ কয়েক জন পরিচালকের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এটাও খুশির খবর নি:সন্দেহে কিন্তু জানার রয়েছে আরও শুধু মাত্র ব্যাংক একাউণ্ড জব্ধ করেই কী পার পাওয়া যাবে ?

আরেক খবর ছিল এমন ইউনি -পে ২ এর এমডি, ডাইরেক্টর কে পুলিশ আটক করেছে। যদিও এই আটকের মধ্য দিয়ে সকল সমস্যা দূরীকরণ সম্ভব নয়। আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। ইউনিপের সকল সম্পদ জব্ধ করে তা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকের কাছে কিভাবে ফেরত দেওয়া হবে সেই বিষয়ে ও পোস্ট করে ব্যাখ্যা প্রয়োজন রয়েছে।

এখন কথা হলো এই সব তথাকথিত এমএলএম কোম্পানীর সম্পদ জব্ধ, কমিশন গঠন না করে একেবারে চিরদিনের জন্য ডেসটিনি, ইউনিপে সহ আরও যত এমএলএম কোম্পানী রয়েছে তাদের সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে সর্বৌত্তম পন্থা। শুধু তাই নয় আর যেন কোনও এমএলএম কোম্পানী গঠন না হতে পারে সেই ব্যবস্থা ও গ্রহণ করতে হবে।

সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কী জানেন ? গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থাটা ও বেশ লুটপাটের মত হয়ে গেছে। যার মূলে রয়েছে এমএলএম কোম্পানী গুলোর বড় ধরনের প্রতারণা। জনগণ কে বোকা বানিয়ে বেশি সুদ দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাল্টিপারপাস, ডাইরেক্ট সেলস এর নাম করে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড,ইউনি পে,সহ আরও অনেক নাম না জানা এমএলএম কোম্পানী। শুধু তাই নয় সামাজিক ভাবে ও করেছে অনেক বড় মাপের ক্ষতি, ভেংগেছে অনেক মহিলার ঘর সংসার, পিতা পুত্রের মধ্যে তৈরি করেছে অবিশ্বাস।

অর্থমন্ত্রীকে মনে রাখতে হবে, এমএলএম কোম্পানী গুলো দিয়ে হয়তো কিছু মানুষের রুজি রোজগার হয়। কিন্তু সমাজের বেশ একটা অংশের জনগণ কিন্তু প্রতারিত হচ্ছে। এখন কিছু বেকার বাচাতে গিয়ে ঘন আবেগের বশবর্তি হয়ে যদি এই সব প্রতারক এমএলএম কোম্পানী গুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নিতে গরিমসি করা হয় তাহলে কিন্তু এর দ্বায়ভার সরকারকেই বহন করতে হবে।

এখন কথা হলো, সরকারের সুস্পষ্ট ব্যাখা প্রয়োজন, প্রতারক রক্ষা করবেন না প্রতারক দের হাত থেকে দেশের খেটে খাওয়া জনগণকে উদ্ধার করবেন ?

মাননীয় অর্থমন্ত্রীকেই এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে এমএলএম কোম্পানী ডেসটিনি, ইউনিপে সহ অন্যান্য এমএলএম কোম্পানী বিষয়ে সরকার কোনও পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে কিনা ? নাকি কোনও পিছুটান রয়েছে যার জন্য সম্ভব পর হয়ে উঠবে না ? যদি এমন কিছু থাকে তাহলে সেই বিষয় টা ও পরিস্কার করতে হবে।

@সুলতান মির্জা।