জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সেশন জট

নাজমুস চৌধুরি
Published : 3 July 2012, 07:07 PM
Updated : 3 July 2012, 07:07 PM

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ এর সবচেয়ে বড় উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপীঠ। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে প্রায় ১৬০০ কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা দান করে চলেছে। শিক্ষার মান নিয়ে কোন প্রশ্ন নাই কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হল সেশন জট। ৪ বছরের কোর্স শেষ করতে ৫ , ৬ এমনকি ৭ বছর ও লেগে যায়। কারন আমালা তান্ত্রিক জটিলতা, রাজনৈতিক জটিলতা আরও বহু সমস্যায় ভরপুর এই বিশ্ববিদ্যালয়।

এগুলি বলার কারন হচ্ছে আমিও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে অধ্যয়নরত একজন ছাত্র। সিটি কলেজ এ পরছি বি বি এ বিষয়ে। সেশন ২০০৭-২০০৮।
এখন চলছে ২০১২ এর জুন মাস এত দিনে আমাদের কোর্স শেষ হয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু এখন আছি শেষ সেমিস্টারে। যাই হোক বেশি দিন দেরি হয় নাই।
কিন্তু প্রশ্ন এটা নয় প্রশ্ন হল যে প্রায় ১৫ মাস আগে আমাদের যে ৫ম সেমিস্তারের ফাইনাল পরীক্ষা হয়েছে তার ফলাফল এখনও পাই নাই এবং শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কবে পাব তারও কোন ঠিক নেই।
কারন এই প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে তাই যে কয় জন কর্মী আছে তাদের পক্ষে এত গুলি কোর্স এবং এত বড় প্রতিষ্ঠান সামলানো দায় হয়ে পরেছে। কর্মী ছাঁটাই পুরোই রাজনৈতিক কারন কিন্তু এটার ভুক্তভোগী হচ্ছি আমরা সাধারন ছাত্ররা।
এখন চিন্তার বিষয় এইটা ৭ম সেমিস্টার ৬ মাস এর জায়গায় প্রায় ১০ মাস লাগিয়ে শেষ করেছি এবং এখন যেটা তে আছি সেটাও যদি শেষ করতে আরও ১০ মাস লাগে তারপর ফলাফল এর জন্য আরও ২ বছর বসে থাকি তো আমরা কি করব??
হতাশার কোন সীমা থাকবে না, না পাব চাকরী না করতে পারব এম বি এ কারন রেজাল্ট ছাড়া কোন ভার্সিটিই এম বি এ তে ভর্তি নেবে না, রেজাল্ট ছাড়া কেও চাকরী দেবে না, তো আমাদের হবে টা কি?
আর আরও খারাপ লাগে একই সাথে যাদের সাথে স্কুল কলেজ পাশ করেছি তারা বি বি এ শেষ করে চাকরী করছে কেও কেও এম বি এ ও শেষ করার প্রস্তুতি তে লেগে আছে আর আমরা বসে আছি অসহায়ের মত।
এখন প্রশ্ন হল আমাদের বাবার টাকা নাই যে এত খরচ করে কোন প্রাইভেট ভার্সিটি তে পড়ায়, তাই কম খরুচে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছি তাই বলে কি আমাদের এভাবে হতাশার মধ্যে দিন কাটাতে হবে??
এই সেশন জট ের ইতিহাস বহু পুরনো কিন্তু এটা কি পরিবর্তন হতে পারে না??
বদলে যাও বদলে দাও স্লোগান নিয়ে যারা পাবলিসিটি করে তাদের কি এটা চোখে পরে না?
প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা এখন হুমকির মুখে। আর তাদের চেহারায় শুধুই হতাশা.। কি হবে আমাদের?? কি হবে??
এভাবেই বসে থাকব নাকি কিছু করব যাতে আমাদের এই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কিছু ব্যবস্থা করতে পারি।
যখন এই অনিশ্চিত ভাবে পরীক্ষার আশায় বসে ছিলাম তখন মোটামুটি একটা পদক্ষেপ নিয়ে ছিলাম যে এই ফার্মের মুরগি গুলি থেকে কয়েকটা আওয়াজ বের করব কিন্তু কিছুই হয় নাই। দু তিন টা মিটিং এর পরই সব ভেস্তে যায় কারন কেউ ই এখন ঝুকি নিতে চায় না এই শেষ মুহূর্তে এসে, কিন্তু এভাবে বসে থাকলে কি কিছু হবে?
আমার প্রশ্ন টা এখানেই।
সেমিস্টার শেষ হতে ১০ মাস আর ফাইনাল রেজাল্ট এর জন্য আরও দুই বছর।
আপনারা কি প্রস্তুত আছেন তো না থাকলে হয়ে নিন কারন এই বি বি এ শেষ করতে আমাদের আরও তিন বছর লাগছে।
ধন্যবাদ সবাইকে।