একতরফা শুধু মেয়েদের শিক্ষিত করে তোলার কুফল

নুর ইসলাম রফিক
Published : 10 June 2017, 08:18 PM
Updated : 10 June 2017, 08:18 PM

বর্তমান সমাজে অবিবাহিত শিক্ষিত যুবকদের তুলনায় অবিবাহিত শিক্ষিত যুবতিদের সংখ্য অনেক বেশি। আর এই পার্থক্যের প্রভাব ইতিমধ্যে সমাজে ব্যাপক ভাবে বিস্তার করে ফেলেছে। অধিকাংশ শিক্ষিত মেয়েদের মা-বাবা-ভাই তথা অভিভাবকগণ এখন আর শিক্ষিত মেয়েদের অভিভাবক হয়ে গর্ববোধ করতে পারেন না। বরং শিক্ষিত মেয়েদেরকে অভিশাপ মনে করেন তারা। আর এই অভিশাপ মনে করার কারণ একটাই, শিক্ষিত কন্যার জন্য সমতুল্য শিক্ষিত বর খুঁজে পাওয়া যায় না। উচ্চশিক্ষিত বর তো বহুদূরের কল্পনা, মূর্খবরও খুঁজে পান না শিক্ষিত মেয়ের অভিভাবকরা। কারণ মূর্খ বরপক্ষরা শিক্ষিত মেয়েদের বউ হিসেবে চান না এই ভয়ে যে, যদি মেয়েদের অভিভাবকরা বরপক্ষকে ফিরিয়ে দেন। হ্যা, ফিরিয়ে দেওয়াটাই স্বাভাবিক। একটা সময় শিক্ষিত মেয়েদের অভিভাবকরা উচ্চশিক্ষিত, কিংবা সম-শিক্ষিত বর না পেয়ে বাধ্য হন মূর্খ বরের হাতে তুলে দিতে নিজেদের শিক্ষিত কন্যাকে, এমনকি মেয়ের মতামতকে তোয়াক্কা না করে। নিশ্চই মূর্খ বরের সাথে বিয়েতে শিক্ষিত মেয়ের সুমত থাকার কথা নয়। সুমতের প্রশ্নই উঠেনা!

মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়তে বাড়তে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, শিক্ষিত মেয়েদের জন্য সমতুল্য শিক্ষিত বর খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে মেয়ের বাবা-মা বা অভিভাবকদের। অধিকাংশ শিক্ষিত মেয়েদেরকে বাবা-মা বাধ্য হয়ে কন্যার তুলনায় কম শিক্ষিত ছেলের হাতে তুলে দিচ্ছেন কন্যাটিকে। এতে শিক্ষিত মেয়েদের মনে শিক্ষার সম্মান এবং মান নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। দুইজন শিক্ষিত বোনের একজন ভাই হিসেবে সে সংসয় আমার মাঝেও বিদ্যমান। হয়তো এই মুহূর্তে আমার এই লেখাটি পড়ে অনেক শিক্ষিত বোনদের চোখের জল ঝড়ছে নিজেদের সমতুল্য শিক্ষিত বর পান নি বা পাচ্ছেন না বলে। এই বোনদেরকে আমার এই মুহূর্তে কোন সান্ত্বনা বা প্রেরণা দেওয়ার ভাষা নেই। তাই বোনদের কাছে আমি দু-হাত তুলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে এই বোনদেরসহ সবাইকে এই মুহূর্তে একটা কথা বলছি- আজ যে শিক্ষিত বোনেরা কমপক্ষে সমতুল্য শিক্ষিত বর পাননি তারা যেন এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের ছেলেমেয়ে উভয়কে সমশিক্ষিত বা উচ্চশিক্ষিত করে তোলেন এবং পাড়া-প্রতিবেশি, আত্বীয়-স্বজনসহ সবাইকে ছেলেমেয়ে উভয়কে শিক্ষিত করে তোলার উৎসাহ প্রদান করেন। ক্ষমা করবেন বোনেরা আপনাদের ব্যর্থতা বলার জন্য। এ ব্যর্থতা আপনাদের নয়। এ ব্যর্থতা আমাদের অভিভাবকদের, সমাজের, শিক্ষাবিদদের, শিক্ষানুরাগীদের এবং রাষ্ট্রের।

প্রতিটি সরকারের একতরফা শুধু মেয়েদেরকে শিক্ষিত করে তোলার উৎসাহের কুফল আজ শিক্ষিত মেয়েরা ভোগ করছেন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা। রাস্তাঘাটে, সমাজে এমনও দেখা যায় যে একজন মুর্খ ব্যক্তির স্ত্রী এসএসসি কিংবা এইচএসসি পাস। ঠিক এমন ধারায় চলতে থাকলে ভবিষ্যতে মূর্খ রিক্সার চালক কিংবা মূর্খ ফেরিওয়ালার বউ স্নাতকসম্মান / স্নাতকোত্তরে পৌঁছে যাবে। আর সেটা হবে আমাদের সর্বোচ্চ ব্যর্থতা এবং একতরফা মেয়েদেরকে শিক্ষিত করে তোলার সর্বোচ্চ কুফল।

এরপর সরকার মেয়েদেরকে ভবিষ্যতে প্রতিমাসে হাজার হাজার টাকা শিক্ষাভাতা, শিক্ষাবৃত্তি দিয়েও শিক্ষার প্রতি আগ্রহি করতে পারবে না। তাই এখনি সরকার, সরকারি-বেসরকারি, এনজিও, শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবকসহ সকলের উচিত মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরকেও শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা। ছেলেমেয়ে উভয়কে শিক্ষিত করে তোলা। তবে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে আবার একতরফা ছেলেদেরকে শিক্ষিত করতে গিয়ে মেয়েরা যেন আবার শিক্ষায় পিছিয়ে না যায়। যেমনটা বিংশ শতাব্দীর আগে হয়েছিল। শিক্ষায় এগিয়ে যাক নারী-পুরুষ একসাথে। তবেই এগিয়ে যাবে জাতি। এগিয়ে যাবে দেশ। আমরা হতো পৃথিবীর শ্রেষ্ট দেশ ও জাতি।

এ দিকে সমাজে শিক্ষিত অবিবাহিত যুবকের সংখ্যা কম হওয়ায় শিক্ষিত ছেলেদের কদর সমাজে অনেক বেশি। আর এই শিক্ষিত ছেলেদেরকে নিজেদের মেয়ের জামাই করতে রীতিমত প্রতিযোগিতা শুরু করে দিয়েছেন সমাজের সুপ্রতিষ্টিত, কিংবা প্রভাবশালি, সম্পদশালি শিক্ষিত-অশিক্ষিত মেয়েদেরর অভিভাবকগণ। অর্থ সম্পদ এবং সামাজিক প্রভাবে অনেকেই মূর্খ মেয়েদের জামাই হিসেবে শিক্ষিত যুবকদেরকে লুফে নিচ্ছেন বিরাট সুযোগ ও সাফল্যতা মনে করে। আর এতেই অহংকারি হয়ে উঠছেন শিক্ষিত যুবকদের বাবা-মা-ভাই-বোন, আত্বীয়-স্বজন তথা অভিভাবকরা।

মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়তে বাড়তে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে যে, শিক্ষিত মেয়েদের জন্য সমতুল্য শিক্ষিত বর খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পরেছে মেয়ের বাবা-মা বা অভিভাবকদের। অধিকাংশ শিক্ষিত মেয়েদেরকে বাবা-মা বাধ্য হয়ে মেয়েদের তুলনায় কম শিক্ষিত ছেলেদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। এতে শিক্ষিত মেয়েদের মনে শিক্ষার সম্মান এবং মান নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হচ্ছে। দুইজন শিক্ষিত বোনের একজন ভাই হিসেবে সে সংসয় আমার মাঝেও বিদ্যমান। হয়তো এই মুহূর্তে আমার এই লেখাটি পড়ে অনেক শিক্ষিত বোনদের চোখের জল ঝরছে নিজেদের সমতুল্য শিক্ষিত বর পাননি বা পাচ্ছেন না বলে। এই বোনদেরকে আমার এই মুহূর্তে কোন সান্ত্বনা বা প্রেরণা দেওয়ার ভাষা নেই। তাই বোনদের কাছে আমি দু-হাত তুলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। তবে এই বোনদেরসহ সবাইকে এই মুহূর্তে একটা কথা বলছি- আজ যে শিক্ষিত বোনেরা কমপক্ষে সমতুল্য শিক্ষিত বর পাননি তারা যেন এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের ছেলেমেয়ে উভয়কে সমশিক্ষিত বা উচ্চশিক্ষিত করে তুলেন এবং পাড়া-প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে ছেলেমেয়ে উভয়কে শিক্ষিত করে তোলার উৎসাহ প্রদান করেন। ক্ষমা করবেন বোনেরা আপনাদের ব্যর্থতা বলার জন্য। এ ব্যর্থতা আপনাদের নয়। এ ব্যর্থতা আমাদের অভিভাবকদের, সমাজের, শিক্ষাবিদদের, শিক্ষানুরাগীদের এবং রাষ্টের।

প্রতিটি সরকারের একতরফা শুধু মেয়েদেরকে শিক্ষিত করে তোলার উৎসাহের কুফল আজ শিক্ষিত মেয়েরা ভোগ করছেন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েরা। রাস্তাঘাটে সমাজে প্রায় এমনও দেখা যায় যে একজন মূর্খ ব্যক্তির স্ত্রী এসএসসি কিংবা এইচএসসি পাস। ঠিক এমন ধারায় চলতে থাকলে ভবিষ্যতে মূর্খ রিক্সার চালক কিংবা মূর্খ ফেরিওয়ালার বউ স্নাতক-সম্মান-স্নাতকোত্তরে পৌঁছে যাবে। আর সেটা হবে আমাদের সর্বোচ্চ ব্যর্থতা এবং একতরফা মেয়েদেরকে শিক্ষিত করে তোলার সর্বোচ্চ কুফল।

এরপর সরকার মেয়েদেরকে ভবিষ্যতে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা শিক্ষাভাতা, শিক্ষাবৃত্তি দিয়েও শিক্ষার প্রতি আগ্রহি করতে পারবে না। তাই এখনি সরকার, সরকারি-বেসরকারি, এনজিও, শিক্ষাবিদ, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবকসহ সকলের উচিত মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদেরকেও শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা। ছেলেমেয়ে উভয়কে শিক্ষিত করে তোলা। তবে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যাতে আবার একতরফা ছেলেদেরকে শিক্ষিত করতে গিয়ে মেয়েরা যেন আবার শিক্ষায় পিছিয়ে না যায়। যেমনটা বিংশ শতাব্দীর আগে হয়েছিল। শিক্ষায় এগিয়ে যাক নারী-পুরুষ একসাথে। তবেই এগিয়ে যাবে জাতি। এগিয়ে যাবে দেশ। আমরা হব পৃথিবীর শ্রেষ্ট দেশ ও জাতি।