পুরুষের পাশে নারী শ্রমিক!

নুরুন নাহার লিলিয়ান
Published : 2 May 2016, 01:01 AM
Updated : 2 May 2016, 01:01 AM

'বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যানকর,
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর'

পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই পুরুষের পাশে নারী আর নারীর পাশে পুরুষ থাকাই স্বাভাবিক চিত্র। কিন্তু পরিস্থিতি এবং সময়ের প্রয়োজনে অনেক আন্দোলনই পৃথিবীতে  হয়েছে। সে আন্দোলনগুলোর মধ্যে শ্রমিক আন্দোলন অন্যতম। এই শ্রমিক আন্দোলকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর মে দিবস পালিত হয়। কত আয়োজন এই শ্রমিকদের নিয়ে। কিন্তু বাস্তব জীবনে বিশেষ করে কেমন আমাদের দেশের নারী শ্রমিকরা। বিশ্বের অনেক দেশের মতো আমাদের নারীরা ও পুরুষের পাশে সমান তালে কাজ করে যাচেছ। বিশ্ব শ্রমবাজারে কোন কোন জায়গায় পুরুষের চেয়েও নারী শ্রমিকের চাহিদা অনেক বেশী। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশ গুলোর বৈদেশিক আয়ের অন্যতম উৎস হলো রেমিটেনস। বর্তমান বিশ্বে শ্রম বাজারে পুরুষের সাথে নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে।  কিন্তু এই নারী শ্রমিকদের সঠিক মজুরি এবং নিরাপদ কর্ম পরিবেশ কি আমাদের সরকার দিতে পেরেছে?

উল্লেখযোগ্য হারে নারী শ্রমিক দেশের কাজে কম বেতন এবং কম সুযোগ-সুবিধার জন্য বিদেশে কাজ করতে আগ্রহী। ইদানিং মধ্যপ্রাচ্যে নারী শ্রমিকদের নির্যাতনের কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও সুশীল সমাজের বিবেককে নাড়া দিতে পারেনি। মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করতে গিয়ে অনেক নারী নানা রকম শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের শিকার হচছে। কেউ কেউ প্রাণ হারিয়েছে। আত্মহত্যার মতে ঘটনা ঘটেছে অনেক। কিন্তু এই বিষয়ে কোন সঠিক পদক্ষেপ নেই। এই ব্যাপারে জনগনের সচেতনতা অনেক জরুরি। কাজের জায়গায় পুরুষ সহকর্মী কিংবা মালিকের কাছে নির্যাতনের শিকার হয় অনেক নারী।

বাংলাদেশে যদি কাজের পরিবেশ থাকতো, নারী বলে মজুরি বৈষম্য, অন্যান্য নির্যাতন রোধ করা যেতো তাহলে বাংলাদেশের শ্রম বাজারেও নারীর অংশগ্রহণ অনেক বেড়ে যেত। বাংলাদেশের পুৃরুষ কিংবা নারী মজুরি নিয়ে নানা নির্যাতন সহ্য করেই কাজ যাচ্ছে। একটি দেশকে সুন্দর করতে হলে নারী পুরুষের উভয়ের সহযোগিতা অত্যাবশ্যক। পুরুষের পাশের নারীটিকে নারী নয় সহকর্মী ভাবতে শিখতে হবে। নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং যথাযথ মজুরি ব্যবস্থা শ্রম বাজারে নারী পুরুষের অংশগ্রহণকে আরো বেশি উৎসাহিত করে। বাংলাদেশে কাজের প্রতি সম্মান বোধটা এখনও তৈরী হয়নি। তাই বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কাজের প্রতি সম্মান, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সঠিক মজুরি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। তবুও স্বপ্ন দেখি  বাংলাদেশের পুৃরুষ-নারী সম্মানের সাথে একে অপরকে সহযোগিতার মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।