হোক্কাইডো আইল্যান্ডে এক বাংলাদেশী নারীর জীবনযুদ্ধ আর শিহরণ জাগানিয়া উপাখ্যান ‘অরোরা টাউন’

নুরুন নাহার লিলিয়ান
Published : 5 Feb 2017, 02:39 AM
Updated : 5 Feb 2017, 02:39 AM

দীর্ঘ নয় বছর পর হঠাৎ করেই 'অরোরা টাউন' উপন্যাসের চরিত্রগুলো নিজ মহিমায় মস্তিস্কে হাটাহাটি কিংবা চলাচল করতে শুরু করে। সময় আর সুযোগ হয়ে উঠছিল না। কিন্তু লেখক মন শত ব্যস্ততায় খুঁজে নেয় তার চিন্তা শক্তির শেষ আশ্রয় লেখালেখিতেই।

কোন এক সময়ে জাপানের হোক্কাইডো আইল্যান্ডের গভীর নিস্তব্ধতায় সে চরিত্রগুলো আরও মূর্তমান হয়ে উঠে। জাগতিক জীবন থেকে আমার মনকে বারবার একান্ত নৈঃশব্দে ছুড়ে ফেলে। আমি আমার চারপাশের জগৎ ছেড়ে একান্ত স্বেচ্ছায় নিসঙ্গতাকেই বেছে নেই। সূর্য উদয় থেকে সূর্যাস্ত আমার সমগ্র সময় কেটে যায় তাদের সাথে কথোপকথনে।

উপন্যাসের প্রধান চরিত্র অরুনিমা। বাংলাদেশের চিরচেনা এক শিক্ষিত তরুণী। উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারি জমায় জাপানের হোক্কাইডো আইল্যান্ডের হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ে। কিন্তু কঠিন বন্ধুর পৃথিবীতে সফলতার গল্প কি এতো সহজ? ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন সংস্কতি, ভিন্ন আবহাওয়া, ভিন্ন জীবন আর ভিন্ন বেঁচে থাকার স্বপ্ন। সেই সাথে আছে ব্যয়বহুল জাপানে টিকে থাকার সংগ্রাম। প্রতিনিয়ত অর্থনৈতিক টানাপোড়নের সাথে হিসেব কষাকষি। তারপর একা চলতে চলতেই নিজ দেশের মানুষ আর সমাজের সন্ধান মেলে। নতুন করে জীবনে আসে আলাদা নতুন নতুন মানুষ আর অভিজ্ঞতা।

বাংলাদেশিদের চিরন্তন চিন্তা ভাবনা আর সংস্কৃতি যেন পৃথিবীব্যাপী। নানা রকম চিন্তা আর মানুষের ভীড়ে অরুনিমার একান্ত মন অসহায় হয়ে উঠে। হোক্কাইডো আইল্যান্ডের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যে নিজের মন ভালবাসার আর বেঁচে থাকার স্বপ্ন খুঁজে পায়।

হোক্কাইডো আইল্যান্ডের একদিকে জাপান সাগর আর অন্য দিকে প্রশান্ত মহাসাগর এক ভিন্ন নৈঃসর্গিক সৌন্দর্য। যেখানে বেঁচে থাকুলতা মানুষের মনকে তীব্র করে তোলে। অরুনিমা ও খোঁজে বেঁচে থাকার ভিন্ন পথ। মাটির নিচের শহরের 'অরোরা টাউন' নামের এক শপিং মলের রেঁস্তরায় তার খন্ডকালিন চাকরি হয়। খুঁজে পায় জীবনের নতুন ছন্দ। সেখানে দেখা হওয়া বিচিত্র মানুষ গুলোর জীবন তাকে দেয় নতুন নতুন শিহরণে ভরা অভিজ্ঞতা।

তারপর প্রতিদিনের হাজারো দুঃখ যন্ত্রণার মধ্যেও মাসাহিকো নামের এক জাপানি যুবকের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা অরুনিমার প্রেমিক মনকে ছুঁয়ে যায় একান্ত গোপনে। কিন্তু জীবনের কঠিন বাস্তবতা তা সফল হতে দেয় না। তারপর হোক্কাইডো আইল্যান্ডে বিভিন্ন দেশের মানুষ আর বাংলাদেশির বেঁচে থাকার বিচিত্র অভিজ্ঞতায় অরুনিমা নতুন সাহসে জেগে উঠে। তারপর জীবনের নানা শিহরন জাগানিয়া ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যেই দেখা হয় আরেক উচ্চ শিক্ষিত পুরুষ নাদভির সঙ্গে। নাদভির সাথে শুরু হয় আরেক অধ্যায়। সে অধ্যায়ে অরুনিমা কি তার ব্যক্তিত্ব আর স্বাধীন চিন্তা ভাবনা নিয়ে সুখী? সে কি পারবে শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্নের দরজায় পৌঁছতে?

উপন্যাসটি পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা প্রকাশনীর স্টলে।
স্টল নাম্বার ৬১২-৬১৫
মূল্য ১৬০ টাকা

বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশীদের জীবন যুদ্ধ, জীবনাচরণ এবং হোক্কাইডো আইল্যান্ডের সৌন্দর্যময়তা সব কিছুই সততার সাথে আমি আমার চিন্তায় অংকন করতে চেষ্টা করেছি। আাশাকরি এই উপন্যাসটি পাঠককে নতুন অভিজ্ঞতা দিবে। আপন গুণে পাঠকের হৃদয়কে ছুঁয়ে যাবে।

বইটি সর্বাধিক পাঠকের কাছ পৌঁছানো এবং গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে সকলের কাছে দোয়াপ্রার্থী।

নুরুন নাহার লিলিয়ান
নির্বাহী সম্পাদক
নারী বিষয়ক নিউজ পোর্টাল।

ইমেল: nurunnahar327@gmail.com