আমাদের প্রার্থনায় প্রিয় ব্লগার উৎপল চক্রবর্ত্তী দাদা

নুরুন নাহার লিলিয়ান
Published : 7 May 2017, 08:03 AM
Updated : 7 May 2017, 08:03 AM


(প্রিয় ব্লগার উৎপল দাদা)

২০১৫ সাল থেকে আমার বিডি নিউজে ব্লগ লেখার যাত্রা শুরু। জীবন আর জীবীকার কারনে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয় । তবুও লেখালেখি নেশার মতো। একদিন কোন ভাবনা প্রকাশ করতে না পারলে যেন নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। কখনও যাপিত জীবনের নানা যন্ত্রণায় থেমে যাওয়ার পথে কেউ এসে আবার উৎসাহ দিয়ে মনকে আন্দোলিত করে। গত বছর থেকে হঠাৎ আইরিন আপার যোগাযোগ বিডি নিউজ২৪ এ আমাকে নিয়মিত করে দিল। তার কাছে কৃতজ্ঞতা সব সময় । তিনিই আবার ডেকে নিলেন ব্লগ বর্ষ পূর্তি প্রোগ্রামে। আর সেখানেই হঠাৎ এক হাসি খুশী মুখের আন্তরিক ভদ্রলোক খুব বিনয়ের সাথে পরিচিত হলেন। আসলে মানুষের সাথে মানুষের মানবিক সম্পর্ক গুলো কেমন করে যে তৈরি হয় কেউ জানে না । সাথে ছিলেন নিমাই দাদা , সৈয়দ আশরাফ মহিউদ্দিন ভাই, কাজী শহিদ শওকত ভাই, আনা আপা, নাজনীন খলিল আপা, সাজ্জাদ ভাই, রফিকুল ভাই, সুমন দা , ফারদিন ভাই সহ আরও অনেকে । খুব ভাল লাগার একটা পরিবেশ । যাদের সাথে ব্লগে কতো রকমের মতামত ব্যক্ত হওয়া তাদের নিজ চোখে দেখা। সবার সাথেই ছবিই তুলছিলাম। উৎপল দাদা খুব আন্তরিকতা নিয়ে আমার পাশে ছবি তুলতে দাঁড়াতে দাঁড়াতে মজা করে বলছিল , এই যা লেখিকা লিলিয়ানের পাশে ছবি তুলে রাখি। আপা দ্রুতই বিখ্যাত হয়ে যাবেন। তখনকার জন্য স্মৃতি রেখে দেই।
আশরাফ মহিউদ্দিন ভাই তার বাচ্চা সুলভ আচরনে হাসছিলেন । তারপর আবার রসিকতা করে বললেন ,আপনার ভ্রমন কাহিনী গুলো আমি নিয়মিতই পড়ি । তবে আপনি কাউকে নেগেটিভ মন্তব্য করেন না কেন …কিছু মতামত তো নেগেটিভ আসতেই পারে । আবার নিজেই উত্তর দিলেন , ওহ আপনি তো লেখক মানুষ ।হৃদযন্ত্র মনে হয় বেশি শক্ত নয় । তবে যাই বলেন আপনি সত্যিকারের লেখক যে কারও মনে কষ্ট দিতে পারে না । খুব অস্থির আর রসিক মানুষ । শিশুর মতো সরল অভিব্যক্তি । মুহূর্তেই ভদ্রলোক কে আপন মনে হতে লাগলো । আমার কোন লেখাটা কেমন হয়েছে । সেটা যেমন বলছিলেন । তেমনি তার লেখায় আমি কি কি ধরনের মন্তব্য করি সেটা নিয়েও ও সরল মজা করছিলেন । তার সঙ্গ যে কোন মানুষের মন ভাল করে দিবে । তারপর আরও বলছিলেন তার কোন একটা লেখা কোন একটা অনলাইন পত্রিকা অন্য নামে ছেপে দিয়েছে । এতে তিনি খুব মর্মাহত। লেখা চুরি যে হয় সেটা নিয়ে ও অনেক কথা হল। লেখা চুরি রোধে কী কী করা যেতে পারে। চোরদের কী কী করা যেতে পারে।


( প্রিয় সবুজে পরিবারের সাথে উৎপল দাদা)

দাদার সাথে আবার দেখা হল বই মেলা । তার প্রিয় দুই মেয়ে চন্দ্রকথা এবং রূপকথাকে নিয়ে বইমেলা দেখতে এসেছিলেন । খুব আন্তরিকতা নিয়ে ডাকলেন । চন্দ্রকথা আর রূপকথার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন । এবারও মজার ভঙ্গিতে তোমাদের লেখিকা আন্টি । মেয়েদের কে বললেন তোমরা আন্টির বাসায় হঠাৎ করে চলে যাবা । আবার বললেন এক সময় বিসিএসআইআর কোয়ার্টারের ক্যাম্পাসে হাঁটাহাঁটি করতেন। আমাকে বললেন, আপনারা এসেছেন। আরও ভাল হল। আমরা কিন্তু হঠাৎ হামলা করবো। স্বভাব সুলভ রসিকতা ।

সেই দুর্দান্ত হাসি খুশি উচ্ছলে থাকা মানুষটি কিনা আগুনে দগ্ধ হয়েছেন। আসলেই বিশ্বাস করতে বেশ কিছু সময় লেগেছে আমার। দাদা ঠিকই ধরেছিলেন। আমার হৃদযন্ত্র বেশি শক্ত নয় । আমি প্রিয় মানুষের ভুল, অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা, কঠিন করে কথা বলা পৃথিবীর তাবৎ রক্তাক্ত রসিকতাকে ভয় পাই। আমার হৃদয় নিতে পারে না। বলা যায় নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়ি।

দাদা আমার বাসার খুব কাছাকাছি থাকেন। যে ইস্টার্ন মল্লিকার কথা বার বার খবরে আসছে সেখানেও আমার যাওয়া হয় । এমন অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় প্রথমে হতবিহবল হয়ে পড়েছিলাম । একে একে সবার আপডেট দেখে দুর্ভাগ্যের এই কঠিন রসিকতাকেও মন মেনে নিল ।

(সংস্কৃতিপ্রেমী উৎপল দা পরিবারের সাথে)

তবে এটা স্বান্তনা যে ভয় পাওয়ার জায়গাগুলো ডাক্তার সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন । আমরা আমাদের জীবনের কাছে অসহায় । আমরা আজও অনেক কিছুই ব্যাখ্যা দিতে পারি না । কেন এমন হঠাৎ করে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে যায়।

মিতুল, আইরিন আপা, সুমন দা, সুকান্ত দা নিয়মিত আপডেট দিচ্ছেন। সেখান থেকে যতটুকু খবর পাচ্ছি। আশাকরি খুব দ্রুত তিনি সবার ভালোবাসায় এবং প্রার্থনায় আবার হাসি মুখ নিয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। আমাদের প্রতি মুহূর্তের প্রার্থনায় তিনি আছেন । আমাদের ব্লগ ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পরিবারের প্রতিটি ব্লগারের শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় তিনি আছেন। আমাদের সবার শুভ কামনায় তিনি আছেন।