বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে এক সময় খুব লিখতাম। আমাকে সেই সুযোগটা করে দিয়েছিল সম্পাদক শফিক রেহমান, তার সাপ্তাহিক যায় যায় দিন ও তারপর দৈনিক যায় যায় দিন পত্রিকায়।
৯৬'ট্রামে হাসিনা সরকারের সমালোচনা খুব করে করতাম। চেয়ে ছিলাম সরকারের পরিবর্তন হোক। ২০০১ সালের জোট সরকারকে নিয়েও সমালোচনা লিখতাম। তারপর ১/১১ সরকারের রোষানলে পড়ে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। এর অনেক গুলো কারনের মধ্যে একটা ছিল বিএনপির সংস্কারপন্থী নেতা মাহবুব সাহেবকে প্রকাশ্য জুতাপেটা করার ছবিটি প্রকাশ করা। মাহবুব সাহেব ছিলেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। তাই সেনাবাহিনী শাষিত সরকারের রোষানলে পড়েন শফিক রেহমান।
আরেক স্বৈরশাসক এরশাদের আমলেও তার পত্রিকা বন্ধ এবং তাকে দেশ ছাড়া করা হয়।
১/১১ এর উদ্দিন সরকার জোর করে যায়যায় দিনের দখল করে নেয়। আওয়ামীপন্থী এক ব্যবসায়ী বর্তমানে যায়যায় দিন চালাচ্ছে। সেখানে শফিক রেহমানের শিষ্যরা কেউ নেই। গলা টিপে হত্যা করা হয় পত্রিকাটির সক্রিয়তা। ৮ টাকার পত্রিকাটি এখন ৫ টাকা হয়েছে তারপরও কেউ কিনছে না।
পত্রিকাটির হত্যাকাণ্ডের পর শফিক রেহমানের হাতে গড়া বেশ কিছু উদিয়মান লেখকের সাহিত্য চর্চা, রাজনৈতিক কলাম লেখা হারিয়ে যায়। শফিক রেহমানের অনেক দিনের স্বপ্নর অকাল মৃত্য হয়। আমরা যারা টুকটাক লিখতাম এবং প্রতিদিন যায়যায় দিন পড়তাম, তাদের কষ্ট হয় খুব বেশি। পরবর্তীতে আমরা অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় চেষ্টা করি।
কিন্তু লেখার ক্ষেত্রে যে স্বাধীনতা শফিক রেহমনের কাছে পেতাম। তা আর কোথাও নেই। নতুনদের কেউ আর প্রমোট করতে চায় না। মালিকদের দলীয় মনমানসিকতার কারনে সম্পাদকরাও কোনাঠাসা অবস্থায় থাকেন।
বড় পত্রিকা গুলির মালিক হচ্ছে দেশের প্রভাবশালী ব্যাবসায়ীরা। তারা সব সময় সরকার গুলির তোষামোদ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তারা কিছুতেই সরকার কে ক্ষ্যাপাতে চায় না।
যেমন যুগান্তরের মালিক হচ্ছে যমুনা গ্রুপ, ট্রান্সকম গ্রুপের হল প্রথম আলো, আর কালের কণ্ঠ হল বসুন্ধরা গ্রুপের। এখানে এই তিনটার উদাহরন দিলাম। এরা প্রত্যেকেই সরকারের পদলেহন করে যাচ্ছে, ভবিতষৎ সরকার গুলির পদলেহন করে যাবে। তাতে কোন ভুল নেই।
তারা ব্যবসায়ী বলেই তাদের কাছে দেশের ভাল মন্দের চেয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানের ভালমন্দটাই বেশি জরুরী।
শফিক রেহমান বাংলাদেশের অন্যতম একজন সফল মানুষ। যার অনুপ্রেরণায় সহযোগীতায় অনেক লেখকের জন্ম হয়েছে। সারা বিশ্বে জুড়ে রয়েছে তার ভক্ত অনুসারীরা। যেই কারনে তার একটি প্রত্রিকা মাসিক মৌচাকে ঢিল একলক্ষ কপি বিক্রি হয়। এবং তার সেই স্লোগান "পাঠকই যার লেখক আর লেখকই যার পাঠক" আজও নবীণ লেখকদের পথ দেখায়।