অনিয়ম বন্ধে সকালের খাবার বর্জন করায় সিরাজগঞ্জ সরকারি শিশু পরিবারের সাত এতিম ছাত্রকে মারধর করে পুলিশে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।অনেকেই হয়তো বিডিনিউজে প্রকাশিত "অনিয়মের প্রতিবাদ করায় মারধর" শীর্ষক সংবাদটি দেখে থাকবেন। এতিম শিশুরা অনিয়মের প্রতিবাদ করায় নিগ্রহের শিকার হতে হ্য় এবং জেলা প্রশাসক জালেমদের সহযোগীতা করেছেন তা সত্যিই উদ্বেগের। শুধু সহযোগীতা করেই তিনি থেমে থাকেননি, তিনি নিজেই নিগ্রহকারির ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
"শিশু অধিকার সনদ" শীর্ষক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে শিশুর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা অবসানে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্কুল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় যখন শিশুদের শারীরিক শাস্তিপ্রদান সরকার যেখানে নিষিদ্ধ করেছে, সেখানে জেলা প্রশাসকের মত উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তার এ ধরণে আচরণ অগ্রহনযোগ্য।
শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারি দেশ হিসেবে সিরাজগঞ্জ শিশু পরিবারে বসবাসকারিরা রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সহযোগীতা পাওয়ার যোগ্য। শিশু অধিকার সনদের অনুচ্ছেদ ২০ এ বলা হয়েছে, "কোনো শিশু সাময়িকভাবে কিংবা স্থায়ীভাবে তার পারিবারিক পরিবেশের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলে কিংবা তার সর্বোত্তম স্বার্থ বিবেচনায় ঐ পরিবেশে তাকে রাখা সমীচীন না হলে সে রাষ্ট্রের কাছ থেকে বিশেষ সুরক্ষা ও সহযোগীতা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবে "।
শিশু নির্যাতনের ঘটনায় শিশুদের সাংবিধানিক অধিকার লংঘিত হয়েছে বৈকি। আইনুযায়ী ও কেবল আইনানুযায়ী ব্যবহারলাভ যে কোন স্থানে অবস্থানরত প্রত্যেক নাগরিকের এবং সাময়িকভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং বিশেষত: আইনানুযায়ী ব্যতীত এমন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে না যাহাতে কোন ব্যক্তির জীবন, স্বাধীনতা, দেহ, সুনাম বা সম্পত্তির হানি ঘটে বলে সংবিধানে (অনুচ্ছেদ-৩১ ) উল্লেখ আছে। জেলা প্রশাসক শিশুদের শারিরীকভাবে আঘাত করার কথা নিজমুখে স্বীকার করেছেন বলে বিডিনিউজের রিপোর্টে আছে যা মানবাধিকার তথা আইনের শাসনের চরম লংঘন।
শিশু অধিকারের বিষয়ে অতীতে হাইকোর্টের স্বত:প্রনোদিত হয়ে রূল জারির নজির আছে। কোন বিজ্ঞ আইনজীবী কি বিষয়টির প্রতি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন? মানবাধিকার কমিশন কি এতিমদের মানবাধিকার রক্ষায় এগিয়ে আসবে?
তথ্যসূত্র:
১. অনিয়মের প্রতিবাদ করায় মারধর, http://bdnews24.com