আমরা হাসি না কেন?

অমিত
Published : 19 Oct 2011, 08:08 AM
Updated : 19 Oct 2011, 08:08 AM

আমরা হাসি না কেন? অনেক ধরণের উত্তর হতে পারে। হতে পারে আমরা হয়ত হাসতে ভুলে গেছি, বা হয়ত কেউ বলবেন আমাদের হাসা মানায় না। অনেক আগে কোথাও শুনেছিলাম হাসা নাকি শরীরের জন্য ভাল। হাসির কারনে নাকি মানব দেহে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয় তা শরীর ও মনের জন্য ভাল। আমি আসলে অন্য প্রসঙ্গে হাসির বিষয়ে আজকে লিখতে বসেছি। আমাদের জাতির ইতিহাস বলে আমরা জাতি হিসাবে রসিক এবং প্রেমিক ধরণের। আমাদের সাহিত্যের ইতিহাসও কিন্তু আমাদের সরস জাতি হিসাবেই পরিচয় দেয়। ব্যাপক রসিক কোন ব্যাক্তি একদম চুপচাপ হয়ে গেলে তা কন্তু মোটেও সুখকর ইঙ্গিত করে না। আমাদের খেত্রেও এর ব্যাতিক্রম হবার কথা নয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরেও অনেক রসিক ছিলাম আমরা। কিন্তু রাজনৈতিক পটপরিবর্তন আমাদের হাসি কেড়ে নিতে শুরু করল ক্রমশ। বাঙালি জাতিসত্তার উপরে নতুন একটা জাতিসত্তা চাপিয়ে দেওয়া শুরু হল আমাদের উপর, তা হল বাংলাদেশি জাতিসত্তা। এবং যার সুস্পষ্ট মানে বোঝান হল যে আমরা বাঙালি নই, বাংলাদেশি, তাই বাঙ্গালিরা সব সময় যে আবহে অভ্যস্ত তা আমাদের জন্য নয়। ব্যাতিক্রম হবার চেষ্টায় আমরা আমাদের নিজস্বতাকেও ভুলে যেতে শুরু করতে থাকলাম। এখন হয়ত অনেককেই বিশুদ্ধ বাঙ্গালি সংস্কৃতি কি তা ভুলে গেছেন। ধর্মের দোহাই দিয়ে আমাদের সংস্কৃতিকে আমাদের সামনে প্রকৃত রুপে তুলে ধরা হয়নি, যা বাস্তবিকই অবাস্তব। হাসির প্রসঙ্গত উপলক্ষমাত্র আমি আসলে আমাদের জাতিকে আমরা যে আমাদের কাছে ভুলিয়ে দিচ্ছি সেটাই বলতে চাইছি। নিজস্বতার বাইরে কোন জাতি এখনও পর্যন্ত পৃথিবীতে জাতির রূপান্তর ঘটাতে পারে নাই, পারবেও না। তাতে যা হবে তা হল জাতির অপভ্রংশ। আমি জানি আমার এই সামান্য কথা কারওকাছেও হয়ত তেমন মজাদার কোন বিষয় মনে হবে না, কিন্তু নিয়মিত পরিবর্তনের মোহে আমরা যে আদতে আমাদের নিজস্বতাকে ভুলে যাচ্ছি তা হয়ত অনেককাল পরে কাউকে আবিস্কার করে বের করতে হবে যে আমরা আসলে কি ছিলাম এবং কতোটা সম্মৃদ্ধ ছিলাম।