পদবীর জোর

অমিত
Published : 26 Oct 2011, 06:57 AM
Updated : 26 Oct 2011, 06:57 AM

আমি আজকে যে ঘটনার কথা বলব সেটি একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের উক্তিতে লেখার চেষ্টা করবো। কতটুকু পারব জানি না তবে চেষ্টা করবো যতটা সহজে এবং পরিবর্তন না করে লেখা যায়।

মুল লেখায় আসি। বক্তা শিক্ষক দেশের একটি নামকরা বহুজাতিক প্রতিস্থানে কর্মরত ছিলেন পরিকাঠামো, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন বিষয়ক পরামর্শক হিসাবে। প্রতিষ্ঠানটির বেতন কাঠামো হিসাবে প্রতিষ্ঠানটির পরিষ্কার কর্মীদের বেতন ছিল মাসিক ৬০,০০০ টাকার আশেপাশে। এটি অবশ্যই বিশাল পরিমাণ অর্থ। বেতন হিসাবে পরিষ্কার কর্মীদের জীবন যাপনও অনেক সচ্ছল ছিল। অসুবিধা দেখা দিল অন্য জায়গায়। বেতন এবং অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল থাকা সত্ত্বেও তাদের সমাজে অবস্থানের কোন পরিবর্তন হচ্ছিল না। কেননা পরিষ্কার কর্মী হিসাবে সমাজে তাদের একটি ভিন্ন দৃষ্টিতেই দেখা হতো। এমনকি কোন ভাল পরিবারের সাথেও তারা কোন সামাজিক সম্পর্কে জড়াতে পারছিল না। ব্যাপারটা অনেকটা, সব থেকেও কিছু না থাকার মতো। তো তারা ঠিক করলেন সবাই মিলে যাবেন পরিকাঠামো, পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন বিষয়ক পরামর্শক এর কাছে অর্থাৎ আমাদের বক্তা শিক্ষকের কাছে। তারা উনাকে অনেক অনুরোধ করে বললেন তাদের পদবী বদলে দেবার জন্য। বিপাকে পরলেন শিক্ষক। কি করা যায়? অনেক অভিধান ঘেঁটে বের করলেন পরিষ্কার কর্মীদের আরেক নাম "জ্যানেটর" তবে এটি প্রায় ব্যাবহারই হয় না। তিনি ঠিক করলেন এই নামটাই তিনি প্রস্তাব করবেন এবং করলেনও।

কিছু দিন পরের ঘটনা। সব জ্যানেটররা একত্রে এসে হাজির শিক্ষকের কাছে। তাদের এবার কোন অভিযোগ নেই বরং তার জায়গায় স্তুতি। সবারই এক কথা, পদবীর পরিবর্তন তাদের জীবন বদলে দিয়েছে। তারা এখন অনেক সম্মান নিয়ে সমাজে চলাফেরা করতে পারছে।

ঘটনা বর্ণনার এখানেই সমাপ্তি।

উপলব্ধিঃ
১/ সমাজে সব সময় টাকাই সব ক্ষেত্রে সব কিছু নয় বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে টাকা দিয়েও সম্মান কেনা যায় না। যা হয়ত আমাদের এখনকার সমাজে অনেক সহজ মনে হয়।
২/ শুধু খোলসকে আমাদের সমাজে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়ে থাকে প্রকৃত কাজকে না দেখে।