মালালা ইউসুফাজাই, এক অতিপ্রাকৃতিক চেহারা

অরীত্র আহমেদ
Published : 1 Jan 2013, 03:18 PM
Updated : 1 Jan 2013, 03:18 PM

মালালার ওপর হামলায় পর বাংলাদেশের বহু মানবতাবাদীদের হায় হায় রব উঠেছিলো, হোমপেজে মালালার জন্য বেদনা, ক্রন্দন এর ঠেলায় টেকা দায় হয়ে পড়েছিলো। মালালার জন্য ভালোবাসা ফুটন্ত পানির মতো উথলায়ে উঠতেছিলো।

আজকে তাদের মুখে এই মালালাই মারলো বিশাল বড় জুতা। মালালা টুইট করেছে যার অর্থ হলো বাংলাদেশ টিম তাদের সফর বাতিল করায় মালালা চ্রম কষ্ট পাইছে, সে বাংলার টাইগারদের বিড়াল বলেছে।

আমি মানুষটা ব্যাপক খারাপ, মুখে কথা তেমন আটকায় না। যে দেশে মালালা নিজে গুলি খেয়ে এখন অন্য দেশে পড়ে আছে, সেই দেশে কেন নিরাপত্তা ইস্যুর জন্য অন্য দল টিম পাঠাচ্ছে না, এইটা বোঝার জন্য কি আইনষ্টাইনের ব্রেন লাগে ইডিয়েট? মালালা ইউসুফাজাইকে যারা নারী আন্দোলনের পথিকৃত ভাবছেন, তাদের বলি, এই ক্যারেক্টারটি আসলে পুরোটাই একটা প্রপাগান্ডা। যে দেশে ( মালালার বক্তব্য অনুযায়ী ) ঠিকমতো মেয়েদের পড়াশোনার সুযোগ নাই, সেই দেশে ১৫ বছরের একটা মেয়ের মেধা কিভাবে এতোটা বিকাশ হয় যে সে ব্লগ লিখে দূনিয়া কাঁপিয়ে দিচ্ছে? এশিয়ান সাবকন্টিনেন্টাল এর মেয়েদের মানসিক বিকাশ শারিরীক বিকাশের তুলনায় ধীরগতির, ষ্ট্যাটিসটিস্ক তাই বলে। তাও মেনে নিলাম যে সে সুপার জিনিয়াস। প্রশ্ন আসে, যেখানে পড়াশোনাই অপ্রতুল, সেখানে একটা মেয়ের কাছে ভালো মানের ইন্টারনেট কানেকশন থাকা কি একটু আজব শোনায় না? সেটাও নাহয় কুদরতের কারিশমা বলে মেনে নিলাম, মালালা ইউসুফাজাই পাকিস্তান এর প্রথম নারী নয় যে নারী শিক্ষার পক্ষে কথা বলেছে, যুগে যুগে এমন অসংখ্য ক্যারেক্টার ছিলো, কয়েকজন ছিলো যারা মালালার চেয়ে হাই প্রোফাইল, এবং সহজ টার্গেট। তাদের তেমন কিছু হয়নি আজো। মালালাকে বিবিসি এবং নিউ ইয়র্ক টাইমের একাধিক অনুষ্টান/রিপোর্টে ফিচার করা হয়েছে, তাকে নিয়ে ডকুমেন্টরীও বানানো হয়েছে।

এবার আসি কিছু ষড়যন্ত্র থিওরীতে, পাকিস্তান এর একাধিক পলিটিক্যাল পার্টি দাবী করছে মালালার ওপর চালানো হামলা পুরোটাই আসলে সি আই এ'র চাল। পাকিস্তান এ তালেবান জঙ্গীরা একত্র হচ্ছে এবং তাদের নসাৎ করার জন্য আমেরিকার ড্রোন হামলা জায়েজ করার জন্য এই কাজটা করা হয়েছে বলে তাদের ধারনা। নাজির আহমেদ, ওরফে ব্যারন আহমেদ, ওরফে লর্ড আহমেদ, যিনি দ্যা ওয়ার্ল্ড ফোরামের একজন প্রতিষ্টাতা সদস্য এবং পাকিস্তান এর একজন নাগরিক এবং হাউজ অব লর্ডের একজন সদস্য, তিনি বলেছেন এটা পাকিস্তান সরকারের একটা চাল ভবিষৎ কোন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য। এতোগুলো মানুষ নিশ্চয় গাঁজা খেয়ে কথা গুলো বলেনি, এটাও মালালা প্রেমীদের বোঝা উচিৎ।

সি আই এ অথবা পাকিস্তান, যারই চাল হোকনা কেন, মালালা যে আসলে একটা মেকি টার্গেট, এটা বোঝা কোন কঠিন কাজ নয়। মালালাকে যদি শান্তিতে নোবেল ও দেওয়া হয়, খুব একটা অবাক হবো না আমি। কারন পাকিস্তান অলরেডি রেড মার্কড একটা দেশে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে, হিউম্যান রাইটস এর অবস্থা করুন, সেনাবাহিনী নিজেই নিজের দেশে অরক্ষিত, দেশের অন্যতম প্রধান খেলা ক্রিকেট থেকে আসা রেভিনিউ বন্ধ হয়ে গেছে, এসব নিয়ে দেশের অবস্থা করুনের চেয়েও খারাপ। এই মূহূর্তে তাদের দরকার একটা টার্গেট যেটা দিয়ে তারা সারা বিশ্বের সামনে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে পারবে এবং সেটাই তারা করছে, অনেকটা ঝিকে মেরে বউকে শেখানো টাইপ কাজ। তালেবান রা এর আগেও অনেকের ওপর হামলা চালিয়েছে, সিঙ্গেল প্রোফাইল অ্যাট্যাক এ তাদের হাত থেকে কোন মার্কড টার্গেট বেঁচে ফেরার রেকর্ড নেই, সেখানে পর্যাপ্ত সময় থাকার পরও কেন মালালার কিছু হলোনা এটাও কিন্তু ষড়যন্ত্র থিওরীকে বেশ বেগ এনে দেয়।

এখন দেখার বিষয় হলো, এতো কিছুর পরও আমাদের তথাকথিত মানবতাবাদীরা কি মালালার জন্য ফুলের মালা নিয়ে বসে থাকবেন নাকি বাংলাদেশ টিমকে নিয়ে বাজে কথা বলার জন্য জুতার মালা পাঠাবেন?