জামায়াতকে নিষিদ্ধ করুন, নয়তো তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার পালনে সুযোগ দিন

ওরমি হোসেন
Published : 9 Nov 2012, 08:27 PM
Updated : 9 Nov 2012, 08:27 PM

১, স্বাধীনতা বিরোধী মৌলবাদী গোষ্ঠি জামায়াত শিবির বিগত কয়েকদিন যা করছে, তা কল্পনা করাও কঠিন। পুলিশের উপর যেভাবে হামলা করেছে, তা নজিরবিহীন। সর্বশেষ এসব ঘটনায় প্রমাণ করে জামায়াতকে অনেক আগেই নিষিদ্ধ করার প্রয়োজন ছিলো। জামায়াতকে নিযিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকার। বিএনপি তো জামায়াতকে কখনো নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে না, কারণ জামায়াতকে রাজনীতিতে পেট্রোনাইজ করে বিএনপি। তাই আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির দাবীদার হিসেবে আওয়ামী লীগের উপর একমাত্র ভরসা করতে পারি জামায়াতকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করার।

২, দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা বললেও কার্যত কোন পদক্ষেপ তারা নিচ্ছে না। বরং নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে তাদের গঠনতন্ত্র সংশোধন করিয়ে জামায়াতকে রাজনীতিতে জায়েজ করার চেষ্টা করছে সরকার।

৩, স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার আগ পর্যন্ত জামায়াত বাংলাদেশে বৈধ রাজনৈতিক দল। জামায়াত বৈধ রাখলে আইন অনুযায়ী তাদের আন্দোলন করার অধিকার আছে। এ বিষয়ে সরকারকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। একদিকে সরকার জামায়াতকে বৈধ রাজনৈতিক দল হিসেবে রেখেছে, অন্যদিকে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাঁধা দিচ্ছে। এটা সরকারের পরস্পর বিরোধী নীতি। মহাজোট সরকারের আমলে জামায়াতকে (মৌলবাদী গোষ্ঠি) তেমন কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি ভালোভাবে পালনের সুযোগ দিতে দেখা যায়নি। যার কারণেও জামায়াত দেশে তাদের জঙ্গী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে। সরকারের দ্বৈতনীতির সুযোগ নিয়ে জামায়াত আমেরিকা ও লন্ডনসহ বিশ্বের নানা দেশে মানবাধিকার ইস্যুতে কাজ করে যাচ্ছে। সর্বশেষ লন্ডনে একটি মানবাধিকার সংগঠনের নাম দিয়ে বাংলাদেশ সরকার বিরোধী বিক্ষোভ করেছে। একইভাবে নিউ ইয়র্কেও একটি বিক্ষোভ এবং জাতিসংঘে মানবাধিকার শাখায় জামায়াত লিখিতভাবে জানানোর পরিকল্পনা করছে। এভাবে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র সরকারের দ্বৈতনীতির সুযোগ নিয়ে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

৪, আমার মতে সরকারের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে জামায়াত মানবাধিকার ইস্যু করের মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ, আমেরিকা ও লন্ডনকে ভুল বুঝিয়ে আসছে, যাতে প্রবাসীদের ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে মধ্য প্রাচ্যে। এসব কারণে আমেরিকা ও লন্ডনের কয়েকটি প্রভাবশালী মানবাধিকার সংগঠন জামায়াতের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছে।

৫, প্রবাসীদের ( আমি আমেরিকায় বসবাস করি) কথা চিন্তা করে সরকার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করা উচিত বলে মনে করি। অন্যথায় দেশের সবচেয়ে বড় রেমিটেন্স খাত হুমকির মুখে পড়ে যাবে।

৬, বাংলাদেশের গণ মানুষের প্রত্যাশা যুদ্ধাপরাধী বিচার এ সরকার শেষ করে যাবে আমরা মনে করি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আদালতের অদক্ষ বিচারকদের কারণে এ বিচার প্রশ্ন বিদ্ধ হতে পারে। কারণ এখনো পর্যন্ত ট্রাইবুনালে বিচার কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এ আদালতের আইনজীবিরা বিভিন্ন সময়ে অদক্ষতার প্রমাণও দিয়েছে।

সরকারের কাছে আমাদের বিনীত দাবী প্রয়োজনে আরো দক্ষ জনবল ট্রাইবুনাল নিয়োগ দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে দ্রুত শেষ করা হয়। কোনভাবে এ বিচার বিশ্বে প্রশ্নবিদ্ধ হলে প্রবাসীদের ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হবে বলে আমি মনে করি।