সাগর-রুনি হত্যা: পুলিশি রিপোর্টে আঙুলের ছাপও ‘অস্পষ্ট’.. খুনি কি তবে জ্বীন-ভূত…!!!

মাহবুবুল হক ওসমানী
Published : 17 Feb 2012, 06:39 PM
Updated : 17 Feb 2012, 06:39 PM

"সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের ছয় দিন পর আঙুলের ছাপের প্রতিবেদন জমা পড়লেও পুলিশ আলামতে তেমন কিছুই পায়নি।"

পুলিশি রিপোর্টে আঙুলের ছাপ 'অস্পষ্ট'। খুনি তাহলে জ্বীন-ভূত নয়তো…! নাকি জ্বীন-ভূতের চেয়েও অধিক অলৈকিক ক্ষমতার অধিকারী। ডিবির অতিরিক্তি উপপুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, "ফলাফল পেতে একটু সময়তো লাগবেই।" এই একটু সময়টা আসলে কতটুকু? এটা কি তবে, "টু বি কন্টিনিউড"? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ৪৮ ঘন্টার বেধে দেয়া সময় পার হয়েছে আরো দুটি ৪৮+৪৮=৯৬ ঘন্টারও বেশি সময় আগে।

যতদূর জানি ঘটনার পর পুলিশ খুব দ্রুত সময়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবুও তাদের কাছে কেন এই অস্পষ্টতা? এদিকে এক সপ্তাহে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার কিংবা অপরাধীদের চিহ্নিত করতে না পারলেও তদন্তের গতি নিয়ে সন্তুষ্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন। এই শম্ভুক গতির তদন্ত আসলে কতদিন চলবে?

গণযোগাযোগ তত্ত্ব পড়তে গিয়ে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ Maxwell McCombs and Donald Shaw এর "Agenda-setting theory(1972)" পড়েছিলাম। সাগর-রুনির হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি এখন, পাবলিক এজেন্ডা এবং মিডিয়া এজেন্ডা- দুটোই একসঙ্গে বিদ্যমান। কিন্তু এই এজেন্ডা কতদিন ধরে টিকে থাকবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। এরপর এক সময় গণমাধ্যমগুলো এই এজেন্ডা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে নতুন কোনো এজেন্ডাকে সামনে তুলে ধরবে। পাবলিকও তখন নতুন সেই এজেন্ডাকে স্বাগত জানিয়ে পুরনো এই এজন্ডাকে ভুলে যাবে। ঢাকা পরে যাবে সাগর-রুনির হত্যার রহস্য। এরপর বছর ঘুরে আবারো ১১ ফেব্রুয়ারি আসবে, পুরনো কাসুন্দি নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি..। জোড়া খুনের বর্ষপুর্তি পালন হবে…। আবার সবাই চুপচাপ..।

সামিউল হত্যাকাণ্ড নিয়েও অনেক লেখালেখি, অনেক আলোড়ন হয়েছিল। তারপর সব চুপচাপ! পাঁচ বছর বয়সী সামিউলকে ২০১০ সালের ২৩ জুন রাতে হত্যা করা হয়। যদিও দেড় বছর পর আদালত মা ও তাঁর বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন। http://www.prothom-alo.com/print/news/221459

আমরা প্রকৃত অপরাধী কে বা কারা তা জানতে চাই। আঙুলের ছাপ 'অস্পষ্ট' বলে আমাদের বোকা বানানো চলবে না। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ("আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর একটা চাপ তো রাখতেই হবে, আমি তাদের চাপে রাখতেই বলেছি যে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের ধরতে হবে। এটা বলাতে আমি মনে করেছি তারা সোচ্চার হবে, তারা তৎপর হয়েছে এবং আছে।") এই জাতীয় গালভরা বুলি বন্ধ করে প্রকৃত অর্থেই খুনিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে হবে। খুনি সে যত ক্ষমতাবান কিংবা প্রভাবশালীই হোক না কেন, আইনের হাত থেকে সে যেন নিস্তার না পায়। এই হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন হোক এবং প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পাক, সেই প্রত্যাশা করছি…