একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ…!

এম আলম অভি
Published : 21 Dec 2012, 07:31 PM
Updated : 21 Dec 2012, 07:31 PM


বিকাশ ১৫ বছর জেলে ছিল। এই ১৫ বছরে তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে। "যে ব্যক্তিবিশেষের (শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশ কুমার বিশ্বাস) কথা বলা হচ্ছে, এ ব্যক্তি ১৫ বছর জেলে ছিল। তার বিরুদ্ধে নতুন আর কী অভিযোগ আসতে পারে? জেলের ভেতরে থেকে সে কী অপরাধ করবে? বললেই তো হবে না।" বিকাশের মুক্তি প্রসঙ্গে- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
সূত্র: প্রথম আলো, (১৯.১২.২০১২)।
জেল থেকে বের হয়ে/জেলের বাহিরে বিকাশ কি অপরাধ আর করবে! আমাদের ভাগ্য ভাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই কথা বলেননি।

যে ভাবে আইন ভেঙে কঠোর গোপনীয়তায় বিকাশকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়ঃ
দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীকে মুক্তি দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশকে অবহিত করার রীতি থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।

বড় ধরনের অপরাধীদের কারাগার থেকে ছাড়ার আগে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর নির্দেশনা রয়েছে। কারা প্রশাসন সেভাবেই বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছিল কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব জেনেও চুপ ছিল।
সূত্র: প্রথম আলো

আইনে আছে, সকাল ১০টা থেকে সূর্যাস্তের আগে বন্দি মুক্তির। সে রীতি ভেঙে এ ক্ষেত্রে সকাল ৮টা ২০ মিনিটেই কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

বিকাশ কারাগার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় জেলগেটসহ রিসিপশন হলে বসানো সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা দৃশ্য কেটে ফেলা হয়েছে।আবার কেউ কেউ দৃশ্যের রেকর্ড না করার অভিযোগ করেছেন।
সূত্র: কালের কন্ঠ, (২০.১২.২০১২)।


৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ভয়ংকর সন্ত্রাসী বিকাশের মুক্তির ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ভাগ্নে, ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতাসহ, সরকারি দলের প্রভাবশালী এক ব্যবসায়ী নেতা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারাগারের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। সূত্র: কালের কন্ঠ, (২০.১২.২০১২)

আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশ ও বিদেশে খুব জোর গলায় বলেন, বাংলাদেশ কোন সন্ত্রাসীর স্থান হতে পারে না, পারবে না। বিদেশি সন্ত্রাসী দূরের কথা, এখন দেখি নিজ দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্তি দিতে সরকার মহা ব্যস্ত। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথাবার্তা অনেক সন্দেহজনক। ধরি, এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতা নেই, কিন্তু তারপরেও তিনি তার মন্ত্রণালয় দায় এড়াতে পারে না। কারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তার দায়িত্ব পালন করেনি। ভারতে যদি রেল দুর্ঘটনার জন্য মন্ত্রী পদত্যাগ করতে পারেন, তাহলে শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশের মুক্তি, পথচারী বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনা আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কি করা উচিত?


সাহারা খাতুনকে সরিয়ে যখন মহীউদ্দীন খান আলমগীরকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হলো, মনে করেছিলাম সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন দেখি "সাহারা খাতুন" ছিলেন একজন মহিলা আর বর্তমান মন্ত্রী পুরুষ, পার্থক্য এখানেই! (ডাক্তার রোগির স্বজনের কাছে জানতে চাইলেন রোগির অবস্তা কি? উত্তরে স্বজন "আগে বাহিরে টয়লেট করতেন, আর এখন ঘরে")। সবার মতো আমিও বলছি, আমাদের সাহারা আপাই ভাল আছিল! দ্রুত বিকাশকে গ্রেফতারের দাবি জানাই. অন্যথায় দেশ হবে সন্ত্রাসীদের সুরক্ষিত স্থান এবং আমজনতার শান্তি নিলীন হবে কিন্তু আপনাদের কিছু হবে না। কারণ আপনারা ২৪ ঘন্টা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকেন!