ছয়টি কবিতা

গোলাম কিবরিয়া পিনুগোলাম কিবরিয়া পিনু
Published : 21 Dec 2008, 09:43 AM
Updated : 21 Dec 2008, 09:43 AM

রাত দীর্ঘতর

যেভাবে রাত এসেছে সেভাবে দিন আসেনি
রাত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর —
হিমযুগ নিয়ে ঠাণ্ডা-কাতরতা
মল্লিকার বন ছুঁয়ে শুয়ে আছে অন্ধকার
আমি ঘরের ভেতর — জানালা বন্ধ দ্বার!

অমা নিয়ে অনুজীব স্তরে স্তরে
সবকিছু সংক্রমণে নিয়ে যাচ্ছে —
হিংস্রপ্রাণীরা আরো হিংস্র হওয়ার গন্ধ পাচ্ছে!

রাত যেন চুল এলিয়ে দিয়েছে
কালো-সখ্য নিয়ে
বিভাবরী আরো যৌবনের কাছে
নিশীথিনী আরো তারুণ্যের কাছে!

অনির্দিষ্টকাল নিয়ে বহুকাল হলো
রাত এসেছে — দিন আসেনি !
ছায়াবিতানের মধ্যে কৃষ্ণপক্ষ-অমাবস্যা
আর সূচীভেদ্য অন্ধকার !

ধনাত্মক

ঘোর অন্ধকার নিয়ে তার কাছে যাই
দেখি, কতটুকু রূপদক্ষ-আলো আছে?

আলোতৃষ্ণা ও বিচ্ছুরণের শক্তি নিয়ে
আমিও উঠতে চাই জেগে —
আমি কেন কোদালেমেঘের কণ্ঠলগ্ন?

অন্ধগলি থেকে ঘুরপথ
রূপবিন্যাসের দোলা পাই,
ছিটকিনি খুলি — ধনাত্মক হয়ে উঠি।

অন্তর্গৃহ আজ গৃহের ভেতর নেই
ময়ূখ হয়েছি আজ বিদ্যুৎপ্রভায়।

নিজের মাত্রায়

ভয়ে ও দুর্বলতায় দ্বিধাপূর্ণ! চূর্ণ হয়ে যাই!
ভগ্নস্বর আজ দখল করেছে কণ্ঠ —
নিজের ভাষাটা ভুলে যাচ্ছি!

মিথ্যা আর ভ্রান্তির ভেতর অন্ধকার নেমে আসে
বিপদ কাটিয়ে জেগে উঠি
উৎসবপর্ব খর্ব করি কেন?

চলো দূরে যাই —
বাঁক থেকে মোড় থেকে নদীপথ থেকে
নিজের ভেতর উত্তেজনা ও আগুন উসকে দিই।

নিরাসক্ত — অনুরাগহীন থেকে থেকে
ঝুলে পড়া কেন?
নিজের মাত্রায় নিজের যাত্রায় আজ ফিরে আসি।

ভ্রমণকালে

ভ্রমণকালে ভূখণ্ড আরো খণ্ড খণ্ড
অনুভবে আসে,
চিরহরিৎ মিঠেপাতার বৃক্ষ সবুজের ঘাসে।

অন্ধকার ঢাকা গুপ্তস্থান
সেইখানে বিদ্যুতের গান,
বৈদ্যুতিক গোলযোগ নেই — শুধু বিদ্যুৎ চমকায়।
গরম কেতলি ধরার বস্ত্রখণ্ড নাই
তরুগুল্মাবৃত ছায়ামগ্ন উপত্যকা খুঁজে পাই।

ভ্রমণসৃজনে শীতকাল ও মেরুঅঞ্চল মৌন
বুনোফল নিয়ে বিজুবনে গৃহকাতরতা গৌণ।

মরদ
ওহে মরদ
মদ্দা কথায় ফিরে আইস
ক্ষুধাবৃদ্ধি হচ্ছে —
আগুনের মধ্যে থেকে
ডান হাতের কাজ বাঁ হাতে চলবে না।

মুখস্রাব
পুচ্ছ পরে পুচকে এখন
লেজবিশিষ্ট শৃগাল, গাল চাটে কার?
কোনও কি ধার ধারে? নিজেও দুধারে
কাটে, মাঠে নাচে —
কিন্তু লালা ঝরে
থুক: মুখস্রাব।