হাসিমাখা মুখ কার লাভ কার ক্ষতি: আত্মআনন্দের হাসি থামান

পানগুছি বয়
Published : 7 May 2012, 06:34 PM
Updated : 7 May 2012, 06:34 PM

১. মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে পাসের হার। চলতি বছরে গড় পাসের হার ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ বাড়লেও চার বছরের হিসেবে বৃদ্ধির হার ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ পয়েন্ট। তবে কমেছে কারিগরি বোর্ডে উত্তীর্ণের হার। অন্যদিকে পাসের হারে রেকর্ড গড়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। সোমবার ফল ঘোষণা করে সার্বিক ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রেরণা বৃদ্ধি পাওয়ায় সব সূচকেই ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। এবার সব বোর্ড মিলিয়ে গড়ে ৮৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে, যাদের মধ্যে ৮২ হাজার ২১২ জন অর্জন করেছে পূর্ণাঙ্গ জিপিএ। গত বছর মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় ৮২ দশমিক ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। সে হিসাবে এবার পাসের হার বেড়েছে ৪ দশমিক ০৬ শতাংশ। ফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০০৯ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৭০ দশমিক ৮৯ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল। ২০১০ সালে উত্তীর্ণ হয় ৭৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

২. চার বছরের ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, শিক্ষার্থী পাসের হার বেড়েছে ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তবে কারিগরি বোর্ডে পাসের হার দিন দিন কমছে। ২০১০ সালে কারিগরি বোর্ডে ৮২ দশমিক ৭২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করলেও গত বছর পাসের হার এক দশমিক ৩৫ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ৮১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর এবার পাসের হার গতবারের চেয়ে শূন্য দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে ৮০ দশমিক ৬৯ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে এবার রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী পাস করেছে। এবার এ বোর্ডে পাসের হার ৮৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ২০০৮ সালে মাদ্রাসা বোর্ডে ৮২ দশমিক ০৬ শতাংশ, ২০০৯ সালে ৮৫ দশমিক ৮৫ শতাংশ, ২০১০ সালে ৮৬ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ২০১১ সালে ৮৩ দশমিক ২৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছিল।

৩. প্রতিবছর রেজাল্ট বেড় হলেই বেড়ে যায় হাসিমুখের সংখ্যা। চারদিকে মিষ্টির আয়োজন..মধু মধু ঘ্রান। বাহ বলতে হয়..অসামসালা। তবে আবার ভাবতে কষ্ট লাগে…এই যে হাজার হাজার জিপিএ-৫ । এরা কী ঠিকমত উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে? শিক্ষার কতটুকু সুযোগ আছে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারা আর সোনার হরিণ হাতে পাওয়া সমান কথা নয় কী? অন্যদিকে দলবাজি, স্বজনবাজি আর মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতাও আছেই। তার ওপর মরার ওপর খড়ার ঘা কোটা পদ্ধতি(যা বিশ্বের আর কোন দেশে নেই)চলছে তো চলবেই..এ নীতি সমানে অটল। বাহ বাহ ..একা একা হাসি, কাঁদি কোন লাভ নাই, যারা দেশের বস থুক্কু নীতি নির্ধারক তারা এসব ভাবেন না, তারা হাসেন ..খুশিতে কৃতিত্ব নেন, মজা পান। কিন্তু দেশে যে হারে শিক্ষিত বেকার বাড়ছে..তা কী তারা জানেন, ন্যাশনাল সার্ভিসের আওতায় এই যে ৫০ লাখ শিক্ষিত বেকারের কী চাকরীর নিশ্চয়তা হবে? যদি না হয়, ফ্লিজ বলছি দয়া করে…আত্মআনন্দের হাসি থামান।