রোহিঙ্গাপ্রেমীরা, একটু চট্টলা নিয়ে ভাবুন প্লিজ!

মোঃ আখতারুজ্জামান পায়েল
Published : 28 June 2012, 10:25 AM
Updated : 28 June 2012, 10:25 AM

রোহিঙ্গা নিয়ে যারা চিৎকার করেছে, তারা শতাধিক নিহত চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের এই মানবিক বিপর্যয় নিয়ে কেন চুপ? তাদের উদ্দেশ্য ছিল অসৎ। তাই!

রোহিঙ্গাদের প্রতি আমাদের ছিল সমবেদনা। কিন্তু, নিজের দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা করে সেদিন আমরা নিশ্চুপ ছিলাম। কিন্তু আমাদের বি,জি,বি এবং সরকার তাদেরকে খালি হাতে ফেরায়নি। যারা এসেছিল তাদের কে নানা ধরণের সহায়তা দিয়ে ঐ দেশে ফেরত পাঠিয়েছিল। কিন্তু এক শ্রেণীর লোকেরা ছিল ঐ রোহিঙ্গাদের আমাদের দেশে আশ্রয় দেয়ার পক্ষে। আমি, আমার মতো অনেকেই তখন বলেছিল যে, তাদের কে যারা এই দেশে আশ্রয় দেয়ার কথা বলেছিল তারা তাদের নিজেদের স্বার্থে এবং তাদের দলীয় স্বার্থে। আর কিছু লোক শুধুমাত্র বলেছিল আবেগ দিয়ে চিন্তা করে। বিবেক দিয়ে নয়।

আমি বলবো সেই সব মারাত্নক রোহিঙ্গাপ্রেমীরা এবং আমাদের দেশের সেইসব আবেগপ্রবণ মানুষগুলো আজ কেন চুপ? চট্টগ্রামে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে এতো বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় ঘটেগেল। অথচ, তারা এখনো নিশ্চুপ। কেন, যারা মরেছে সব কি আঃলীগের ভোটার? তাই? ভাবনা এখন কি শুধু আঃলীগ এবং সরকারের? আর রোহিঙ্গারা কোন দলের ভোটার বা কোন জোটের ভোটার এবং কোন জঙ্গী সংগঠনগুলোর সাথে জড়িত সেটা তো আজ আর অজানা নয়। এবং ওরা দেশে আসলে কাদের সুবিধা হয় সেটা ও আজ সবাই জানে।

সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যদি গলা সমান পানি থাকে তবে মেয়র কে, প্রকৌশলীদের কে এ্যা+ (!) সার্টিফিকেট দেয়া যায় না। বড়জোর, তারা ডি,সি,বি(-) পেতে পারেন। সরকারের পক্ষ থেকে ও নাকি তাদের কে জানানো হয়েছিল ঐসব ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ছেঁড়ে অন্য কোথাও আশ্রয় নেয়ার। নেয়নি তারা। কীভাবে নিবে? সরকার ই পুণঃবাসনের ব্যবস্থা করেছিল? আর মানুষের মাঝে ও সচেতনতার অভাব ছিল। যদি ও তারা সবাই স্বীকার করেছে যে, সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা তাদের জানিয়েছিল ঐসব এলাকা ছেঁড়ে যাওয়ার জন্য।

আমার কথা হলো, দোষ কোন পক্ষে ই কম না। সরকারের হলো পরিকল্পনার অভাব। আর মানুষের মাঝে সচেতনতার অভাব। এই মৃত্যুগুলো কে হত্যা এবং আত্মহত্যা উভয়ই বলা যায়। কারণ, ঐসব মানুষগুলো এখন ঠিকই এই এলাকা ছেঁড়ে চলে যাবে। যেটা তাদের আরো কিছুদিন আগে করা উচিৎ ছিল। আর সরকার কেন পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেনি? সরকার তো আগে থেকেই জানতো যে, এই ধরণের ঘটনা ঘটবে। এসব বিষয় নিয়ে এখন ভাবার সময় এসেছে। এদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা উচিৎ। আগামী বছর ও যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেটা অনেক ভাবতে হবে। আর অবাধে পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে। এই পাহাড় কাটার কারণে আজ প্রকৃতি প্রতিশোধ নিতে চলেছে।

সবশেষে আমার কিছু কথা, আসুন, এই দেশ টা আমাদের। আমাদের সবার। প্রথমে আমরা দেশ নিয়ে ভাবি, দেশের অভাগা মানুষগুলো নিয়ে ভাবি, দেশের হাজারো সমস্যা নিয়ে ভাবি। বাহিরের দেশের কোন সমস্যা হলে, আমাদের উচিৎ হবে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের সাহায্য করা। যেখানে সাহায্য করার সম্ভব না তখন তাদের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টি করা। কিন্তু, এমন কিছু মানুষ আছে, এবং সংগঠন আছে, যারা ঐ দেশে আক্রমণ করার কথা ও বলে থাকে। রাজপথে মিছিল, সমাবেশ করা যায়, কিন্তু ঐ ধরণের ইস্যু নিয়ে নিজ দেশের পুলিশের সাথে মারামারি করা যায় না। আরেকটা বিষয় হলো, আমরা রোহিঙ্গাদের নিয়ে মসজিদে মসজিদে কিছু ধর্মব্যবসায়ী কে বক্তব্য দিতে শুনেছি। বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে অনেক মসজিদে এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু, এখনো কোন পত্রিকায় পড়লাম না যে, শতাধিক নিহত মানুষদের নিয়ে কোন মসজিদে বিশেষ মোনাজাত বা কোন বিশেষ সংগঠন কোন মিছিল বা সমাবেশ করেছে।