রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠানের চাঁদাবাজি

মোঃ আখতারুজ্জামান পায়েল
Published : 11 May 2012, 08:04 PM
Updated : 11 May 2012, 08:04 PM

ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা যেতে সময় লাগে ২০-৩০ মিনিট। যাওয়ার সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সি,এন,জি অটোরিক্সা। এর ড্রাইভার রা প্রায় সবাই অল্প-বয়সী। কিছু বয়স্ক (৩০-৩৫) ড্রাইভার ও আছেন। এদের বেশীরভাগ ই ভাঁড়ায় অটোরিক্সা চালাচ্ছেন। মালিকদের ও বিনিয়োগ কম না। ৪-৫ লক্ষ টাকা। সৎ পথে উপার্জন করছেন তারা সবাই। কিন্তু, এই সৎ পথে যারা চলছেন, তাদের কে ও পাপের ভাগীদার করছে প্রশাসন। একটি অটোরিক্সা ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা চালানোর জন্য প্রতিদিন পৌরসভা কে দিতে হয় ৫০ টাকা। আর থানায় নাকি দিতে হয় মাসে ৩৫০ টাকা (মুক্তাগাছা থানায় ১৫০ টাকা, ময়মনসিংহ থানায় ২০০ টাকা)। আমি পৌরসভা কে টাকা দেয়ার বিষয়ে কোন অভিযোগ করছি না। কিন্তু পৌরসভার প্রতি আমার অভিযোগ হলো যে, প্রতি মাসে যে টাকা ওনারা নিচ্ছেন সেই টাকা দিয়ে একটি একটি পাবলিক টয়লেট বানানো যায় না ষ্ট্যান্ড এ? মুক্তাগাছা এবং ময়মনসিংহে দুই ষ্ট্যান্ড এ কী যে বিশ্রী গন্ধ তা যিনি গিয়েছেন তিনিই জানেন। যেখানে সেখানে মানুষ বর্জ্য ত্যাগ করছে। পৌরসভা নিতে পারছে, কিন্তু এই সামান্য সুবিধা কি যাত্রী এবং ড্রাইভারদের কি দিতে পারছেনা?

ড্রাইভারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে যে, থানায় টাকা টা দিতে হয় তাদের সমিতির মাধ্যমে যার নাকি কোন রসিদ নেই। আমার কথা হলো যে, থানায় টাকা টা কেন দিতে হয়? আর এই টাকার রসিদ নেই কেন? এই টাকার ভাগ কোথায় কোথায় যায়?

এটা যদি বিশ মিনিটের পথের যানবাহনের জন্য দিতে হয়, তবে লং রুটে কতো টাকা দিতে হয় সেটা ভাবতেই ভয় হচ্ছে। পরিবহন খাতে এই অবস্থা কিন্তু আজ থেকে নয়, সেটা অনেকদিন ধরেই। কিন্তু এর থেকে কোন প্রতিকার পাওয়ার উপায় আমাদের নেই। ড্রাইভার, মালিক তাদের কোন ক্ষতি হচ্ছে না, ক্ষতি হচ্ছে আমাদের, যারা যাত্রী তাদের। কারণ, এই টাকা টা তো তারা আমাদের পকেট থেকেই আদায় করছে।

বেশী দূরে যেতে হবে না আমাদের এই চাঁদাবাজি দেখার জন্য। আমরা যদি চরপাড়া মোড়ে যাই, তবে দেখবো যে, ট্রাফিক পুলিশ প্রতিটি ট্রাক থামিয়ে খোশ গল্প করছে। টোকেন ও দিচ্ছে। জ্যাম বেঁধে যে মানুষের করুণ অবস্থা, সেদিকে খেয়াল নেই।

এই অনিয়মের প্রতিবাদ কার কাছে করবো আমরা? নেতাদের কাছে? আমি যতটুকু ড্রাইভারদের কাছে শুনলাম তাতে বুঝতে পারছি যে, সব সরকারের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের পকেটেই নাকি এর ভাগ যায়। কি আর করার আছে, কুকুর বিড়ালের মতো মুমিনুন্নিসা কলেজের দেয়ালে মূত্র ত্যাগ করবো এবং চাঁদার টাকা দিব একজন সম্মানিত(!) যাত্রী হিসেবে।