ছাত্রলীগের কোন্দলের বলি আরেকটি তাজা প্রাণ

পলাশ প্রিয়ম
Published : 20 Sept 2011, 04:41 PM
Updated : 20 Sept 2011, 04:41 PM

ছাত্রলীগের অন্তঃকোন্দলের বলি হলো আরেকটি তাজা প্রাণ। তিনি হলেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাইসুল ইসলাম রাহিদ। ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত রাহিদ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোরে মারা যান। গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে ইনস্টিটিউটের লতিফ ছাত্রাবাসের ডাইনিংয়ে বিনে পয়সায় খাওয়া নিয়ে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বাধীন অংশের কর্মীদের পিটুনিতে সেদিন রাহিদ গুরুতর আহত হন বলে জানা গেছে। তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি অংশের কর্মী এবং শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদের পলিটেকনিক শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঘটনার রাতে ছাত্রলীগ পলিটেকনিক শাখার সাধারণ সম্পাদক রাকিব ইসলাম মাসুমের অংশের কর্মীরা ডাইনিংয়ে গিয়ে ১০/১২ জনের জন্য বিনে পয়সায় খাবার চায়। ডাইনিং স্টাফরা এতে আপত্তি জানায়। সেখানে উপস্থিত রাহিদও এর প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে বাক-বিতন্ডার একপর্যায়ে রাহিদকে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে অচেতন অবস্থায় রাহিদকে প্রথমে মহাখালীর মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে রাতেই নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হলে আরও দুই হাসপাতাল ঘুরে ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ১৮ বছর বয়সী রাহিদের গ্রামের বাড়ী লক্ষীপুরের খাগরিয়ার ব্যাপারীপাড়া এলাকায়। পলিটেকনিকের লতিফ ছাত্রাবাসের ৩২১ নম্বর কক্ষে তিনি থাকতেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি বড় ছিলেন। তার বাবার নাম মোসলেহউদ্দিন।

রাহিদের মামা আবুল ফারহা বলেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় তার নিরীহ ভাগ্নেকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ছাত্রলীগের মাসুম গ্র"পের কর্মীরা তাকে (রাহিদ) একটি কে নিয়ে রামদা দিয়ে কোপায়, মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ও নাভিমূলে এসিড ঢেলে দেয়। পলিটেকনিক প্রাঙ্গনে জানাযার পর রাহিদের লাশ গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাতেই তার লাশ দাফনের কথা রয়েছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে সাধারণ সম্পাদক রাকিব ইসলাম মাসুম বলেন, সেদিন প্রথম বর্ষের কিছু ছাত্র ডাইনিংয়ে খাবার খেতে যায়। খাবারের মান খারাপ হওয়ায় তারা ডাইনিং স্টাফদের ওপর চড়াও হয়। আমার কিছু কর্মী তাদের সমর্থন দেয়। এসময় রাহিদ ছাত্রদের বাধা দিতে গেলে তার মাথায় আঘাত লাগে। তবে তাকে কক্ষে নিয়ে কেউ মারধর করেনি। বিনে পয়সায় খেতে যাওয়ার অভিযোগও ঠিক নয়।

এ ব্যাপারে তেজগাঁও শিল্কপ্পাঞ্চল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, নিহত রাহিদের বাবা বাদী হয়ে ১০/১২ জনের নাম উল্লেখ এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামী করে মামলা করেছেন। তদন্তের স্বার্থে আসামীদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।