.
'পাড্রাও দেস কম্ব্রিমেন্তস'- ১৫শ' এবং ১৬শ' শতকের পর্তুগীজ আবিষ্কারকে স্মরণ করার মনুমেন্ট। জাহাজের মাস্তুলে সারিবদ্ধ নাবিকগণ। সাদা রঙের মনুমেন্টটির দু-পাশেই মূর্তি- সর্বমোট ৩৩ জন সমুদ্র পথযাত্রীর। ১৭১ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্যটি মনে করিয়ে দেয় পর্তুগীজ নাবিকদের দুঃসাহসিক অভিযানের কথা। জায়গাটি অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ। দর্শনার্থীদের ভিড়ে মনের মতো ছবি তোলাই মুশকিল। এখান থেকে দেখা যায় 'পন্তে ২৫ দে আব্রিল' সেতু, যার নাম জড়িয়ে আছে ১৯৭৪ সালের ২৫শে এপ্রিল হওয়া পর্তুগীজ রেভল্যুশনের সাথে। ব্রিজটি অনেকটা ইউএসএর সানফ্রান্সিসকোর 'গোল্ডেন গেইট' ব্রিজের মতো দেখতে। মজার ব্যাপার হচ্ছে নদীর ওপারে অবস্থিত 'ক্রাইস্ট দ্য কিং' মূর্তিটি ব্রাজিলের 'ক্রাইস্ট দ্য রিডীমারের' আদলে তৈরি। লিসবনে বসে সানফ্রান্সিসকো এবং রিওডেজেনেরিও দুটোই দেখা হয়ে গেল আরকি! শেষ বিকেলের নরম রোদ গায়ে মেখে উঠে পড়লাম বাসে, গন্তব্য হোটেল। আগামীকাল বেড়িয়ে পরব লিসবনের ওল্ড টাউন দেখতে, যেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক পুরোনো ক্যাথিড্রাল, ক্যাসেল আর খাবার-দাবারের দোকানপাট।
.
প্রাসা দো কমার্সিওর সামনে থেকে ট্রামে উঠলাম, এখান থেকেই ওল্ড টাউনের যাত্রা শুরু। খুবই ধীর গতি। ট্রামটি শুধু টুরিস্টদের জন্য, ধারণক্ষমতাও কম। প্রতিটি স্টপে প্রচুর টুরিস্ট ট্রামের অপেক্ষায়। কয়েকজন দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর জায়গা না পেয়ে চালকের সাথে ঝগড়া শুরু করে দিল। ওল্ড টাউনটা আর দশটা পুরনো শহরের মতোই- খুবই সরু রাস্তা, দু-পাশে সুউচ্চ ভবন। সেইন্ট জর্জ ক্যাসেলের কাছে নেমে পরলাম। জায়গাটা বেশ উঁচু। নিচের গোলাপি রঙের টালির ছাদ দেয়া ভবনগুলো পর্যটকদের ছবি তোলার অন্যতম আকর্ষণ। কাছেই পেয়ে গেলাম টুকটুক।পুরো ওল্ড টাউনটা ঘুরিয়ে দেখার চুক্তিতে উঠলাম, গুনতে হবে ২০ ইউরো। উঠতেই চালকের জিজ্ঞাসা 'দেশ কোথায়?' বাংলাদেশের কথা জানাতেই চালকের মুখে কথার খই ফুটল। ঢাকা তার চেনা, কাজের সুবাদে তিন মাস ছিল বাংলাদেশে। নিজেই বিভিন্ন জায়গায় টুকটুক থামিয়ে ছবি তুলে দিল। তার কাছ থেকে অথেনটিক পর্তুগীজ কুইজিন কোথায় পাওয়া যাবে জেনে নিয়ে নেমে পরলাম সাউথ জর্জ ক্যাসেলের সামনে।