শান্ত নদী ঘোষখালী

প্রীতম মণ্ডল
Published : 9 August 2018, 10:27 AM
Updated : 9 August 2018, 10:27 AM

দক্ষিন খুলনার পাইকগাছা-কয়রা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত শান্ত একটি নদী ঘোষখালী।

এটি শিবসা নদীর শাখানদী। অনেক আগে নদীটি শিবসা নদীর সাথে যুক্ত ছিলো। তখন এখানে ভারি নৌযান চলাচল করত। বাঁধ দেওয়ার ফলে এই নদী এখন জোয়ার-ভাটাবিহীন শান্ত নদীতে পরিণত।

ছোটবেলায় দেখেছি এই নদীতে ট্রলার চলাচল করতো। এখন রাস্তাঘাটের উন্নতির ফলে এই নদীতে শুধুমাত্র ছোট ছোট কিছু নৌকা চলাচল করে। নদীর এপারের মানুষজন ওপারে চলাচলের জন্য এসব নৌকা ব্যাবহার করে।

জোয়ার-ভাটাবিহীন হলেও এই নদীতে সকালের প্রথম আলো পড়ে যখন চিক চিক করে তখন নদীর সৌন্দর্য দেখলে যে কারোরই মন জুড়াবে। আবার বিকাল বেলা নদী তীরের ঝিরিঝিরি বাতাস শরীর ও মনকে শান্তি দিয়ে মনের ভিতরে লুকিয়ে থাকা কবিকে জাগিয়ে তোলে।

তবে শুষ্ক মৌসুমে নদীতে হাঁটু পানি থাকে। তখন অনেক জায়গা থেকে হেঁটে পার হয়ে এপার থেকে ওপার যাওয়া যায়।

নদীর আসল সৌন্দর্য ধরা পড়ে বর্ষাকালে। এই নদীতে ছোট ছোট মাছ পাওয়া যায়। ইদানিং লিজ দিয়ে এই নদীতে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়। অনেক আগে থেকেই নদীর দুই পাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে জনবসতি। নদী পাড়ের দস্যি ছেলেরা নদীতে দাপিয়ে বেড়ায়। বর্ষা মৌসুমে নদী যখন পূর্ণ রূপ ধারণ করে তখন তাদের দুরন্তপনা আরো বেড়ে যায়।

নদীটির দুই পাশে রয়েছে আবাদি জমি। যেখানে ধান, তরমুজের চাষ করে কৃষকরা। আগে একসময় এই নদীতে নৌকাবাইচের আয়োজন করা হত। তখন নদীর দুই পাড়ে হাজার মানুষের ঢল নামতো।

সময়ের আবর্তনে নদীটি হয়ত একদিন হারিয়ে যাবে। হয়তবা টিকে থাকবে আরো শান্ত মৃতপ্রায় হয়ে। তবুও শেষ দিন অবধি এর ঘোষখালী নদীর সৌন্দর্য সবসময় মানুষকে মোহিত করে যাবে।